'শারীরিক সীমাবদ্ধতা' ও 'সামাজিক নিয়ম'-এর যুক্তি দেখিয়ে সেনাবাহিনীতে মহিলাদের স্থায়ী কমিশনের বিরোধিতা করেছিল কেন্দ্র। সেজন্য সুপ্রিম কোর্টে তীব্র ভর্ৎসনার মুখে পড়ল সরকার।
২০১০ সালে দিল্লি হাইকোর্ট রায় দিয়েছিল, পুরুষদের মতো বায়ুসেনা ও সেনায় কর্মরত মহিলাদের (যাঁরা শর্ট সার্ভিস কমিশন বা এসএসসি-র জন্য নিযুক্ত হয়েছেন) স্থায়ী কমিশন অর্থাৎ ২০ বছর কাজের অনুমতি দিতে হবে। সেই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছিল প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। চলতি মাসের গোড়ার দিকে শীর্ষ আদালতে একটি নোট জমা দেয় কেন্দ্র। সেখানে 'শারীরিক সীমাবদ্ধতা' ও 'সামাজিক নিয়ম'-এর যুক্তি খাড়া করা হয়। সেজন্য কেন্দ্রকে রীতিমতো তুলোধনা করে বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় ও বিচারপতি অজয় রাস্তোগির ডিভিশন বেঞ্চ।
এদিন সুপ্রিম কোর্ট বলে, '২০১৯ সালে আটটি বিভাগে মহিলাদের স্থায়ী কমিশন সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের জন্য ন'বছর অপেক্ষা করেছিল কেন্দ্র। সেই নীতি অনুযায়ী, মহিলা অফিসারদের স্থায়ী কমিশনের ক্ষেত্রে শারীরিক বৈশিষ্ট্যের কোনও ভূমিকা নেই।'
ডিভিশন বেঞ্চ আরও বলে, 'সেই নীতি নির্ধারণ সত্ত্বেও কেন্দ্র সুপ্রিম কোর্টে যে নোট জমা দেয় তা লিঙ্গ বৈষম্যে মদত জোগায়। পুরুষ ও মহিলাদের দৈহিক ক্ষমতা, মহিলাদের মাতৃত্ব ও পরিবার ইত্যাদির ভিত্তিতে কেন্দ্র যে সওয়াল করেছে, তা সমানাধিকারকে লঙ্ঘন করে।'
যে মহিলা অফিসাররা দেশের জন্য বিভিন্ন এনেছেন, তাঁদের প্রতি নির্দিষ্ট ধারণা চাপিয়ে দেওয়ার জন্য প্রবল সমালোচনার মুখে পড়ে কেন্দ্র। সুপ্রিম কোর্ট বলে, 'মহিলাদের ক্ষমতা, ভূমিকা ও কৃতিত্ব নিয়ে কোনও ধারণা চাপিয়ে দেওয়াটা শুধু মহিলাদের পক্ষে অপমানজনক নয়, ভারতীয় সেনার জন্যে তা অত্যন্ত অপমানজনক।'