নাবালক যৌন নিগ্রহ দমন আইনে (POCSO Act) অভিযুক্তদের রেহাই দেওয়ার বিতর্কিত রায়ের জেরে বিচারপতি পুষ্পা ভি পনেড়িওয়ালাকে বম্বে হাই কোর্টের স্থায়ী বিচারপতি পদে নিয়োগের অনুমোদন প্রত্যাহার করল সুপ্রিম কোর্টের তিন সদস্যের কলেজিয়াম।
সম্প্রতি ‘টাইমস অফ ইন্ডিয়া’ প্রকাশিত রিপোর্টে এই খবর প্রকাশিত হয়েছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রধান বিচারপতি শরদ অরবিন্দ বোবডের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের কলেজিয়ামে বাকি দুই সদস্য ছিলেন বিচারপতি এন ভি রামানা এবং বিচারপতি রোহিন্টন ফালি নরিমান। গত ২০ জানুয়ারি কেন্দ্রীয় সরকারকে দেওয়া নির্দেশে বিচারপতি গনেড়িওয়ালাকে স্থায়ী বিচারপতি করার সিদ্ধান্ত শুক্রবার প্রত্যাহার করেছে কলেজিয়াম। বর্তমানে তিনি বম্বে হাই কোর্টে অতিরিক্ত বিচারপতি পদে কর্মরত।
টাইমস-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, সুপ্রিম কোর্টের দুই শীর্ষ স্থানীয় বিচারপতি মহারাষ্ট্র নিবাসী বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়া এবং বিচারপতি এ এম খানউইলকর কলেজিয়ামকে স্পষ্ট জানিয়ে দেন, বিচারপতি গনেড়িওয়ালাকে স্থায়ী বিচারপতি করার বিষয়ে তাঁদের আপত্তি রয়েছে। এর পরেই অনুমোদন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেয় কলেজিয়াম।
উল্লেখ্য, এক সপ্তাহের মধ্যে POCSO আইনে করা তিনটি আলাদা মামলায় অভিযুক্তদের রেহাই দিয়েছিলেন বিচারপতি গনেড়িওয়ালা। গত ১৪ জানুয়ারি দেওয়া তাঁর একটি রায়ে তিনি ধর্ষণের অভিযোগের পক্ষে যথেষ্ট প্রমাণের অভাব রয়েছে বলে মন্তব্য করেন।
১৫ জানুয়ারি অন্য এক মামলার রায়ে তিনি বলেন, প্যান্টের খোলা জিপারের উপরে এক নাবালিকার হাত চেপে ধরা যৌন হেনস্থা হিসেবে POCSO আইনের ৭ নম্বর ধারা অনুসারে গ্রহণযোগ্য নয়।
১৯ জানুয়ারি তৃতীয় মামলার রায়ে তিনি বলেন, ১২ বছর বয়েসি কিশোরীর জামা না খুলে স্তন মর্দন করা POCSO আইনের ৭ নম্বর ধারা অনুযায়ী কখনই যৌন নিগ্রহের সংজ্ঞাভুক্ত নয়। বিচারপতি গনেড়িওয়ালার এই রায় কেন্দ্র করে তীব্র বিতর্কেোর সূত্রপাত হয়। অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে বেণুগোপালের উল্লেখে রায়ের উপরে স্থগিতাদেশ জারি করে সুপ্রিম কোর্ট।
আশ্চর্যজনক এই যে, তৃতীয় মামলার রায় ঘোষণার পরের দিনই বিচারপতিগনেড়িওয়ালাকে স্থায়ী নিয়োগের অনুমোদনদেয় সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়াম।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি বিচারপতি গনেড়িওয়ালাকে বন্বে হাই কোর্টের অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ করা হয়। ২০০৭ সালে জেলা বিচারক পদে প্রথম নিয়োগ পেয়েছিলেন তিনি।
বিচারক হিসেবে তিনি ইতিমধ্যে মুম্বইয়ের সিটি সিভিল কোর্ট, জেলা আদালত এবং নাগপুরের পারিবারিক আদালতে দায়িত্ব পালন করেছেন। মহারাষ্ট্র জুডিশিয়াল অ্যাকাডেমির তিনি যুগ্ম অধিকর্তা পদেও বহাল ছিলেন।