গত ১ অগাস্ট সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চ একটি রায় ঘোষণা করে। সেই রায়ে জাতিগত সংরক্ষণের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেওয়ার প্রশ্নে তফসিলি জাতি (এসসি) ও তফসিলি উপজাতিভুক্তদের (এসটি) উপশ্রেণিতে বিভক্ত করার আবেদনে অনুমোদন দেওয়া হয়।
শীর্ষ আদালতের সেই রায় চ্যালেঞ্জ করে এবং তা পুনর্বিবেচনা করার আর্জি জানিয়ে পালটা সেই সাংবিধানিক বেঞ্চেই বেশ কিছু আবেদন বা রিভিউ পিটিশন জমা পড়ে। শুক্রবার সেই আবেদনগুলি খারিজ করে দিল সুপ্রিম কোর্ট।
এদিন ভারতের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন, সাত সদস্যের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চই এই আবেদনগুলি খারিজ করে দেয়। এক্ষেত্রে আদালতের পর্যবেক্ষণ ছিল, 'প্রাথমিকভাবে এই রায়ে কোনও ত্রুটি দেখা যায়নি'।
আদালতের নির্দেশিকায় বলা হয়, 'রিভিউ পিটিশনগুলি অধ্যয়ন করে, তাতে কোনও ত্রুটি দেখা যায়নি। পর্যালোচনা করে দেখার মতো কোনও মামলাও এক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত হয়নি। ফলত, রিভিউ পিটিশনগুলি খারিজ করা হল।'
এদিনের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চের অন্য সদস্যরা হলেন - বিচারপতি ভূষণ আর গভরি, বিচারপতি বিক্রম নাথ, বিচারপতি বেলা এম ত্রিবেদী, বিচারপতি পঙ্কজ মিথল, বিচারপতি মনোজ মিশ্রা এবং বিচারপতি সতীশচন্দ্র শর্মা।
সাত বিচারপতির এই বেঞ্চ স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, এই রিভিউ পিটিশনগুলির সঙ্গে এমন কোনও যুক্তি পেশ করা হয়নি, যার জেরে আগের রায় পুনর্বিবেচনা করার কোনও প্রয়োজন দেখা দিতে পারে।
এই রিভিউ পিটিশনগুলি যেমন একাধিক ব্যক্তি করেছিলেন, তেমনই বিভিন্ন সংগঠন ও সংস্থার তরফেও রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন জানানো হয়েছিল। আবেদনকারীদের তালিকায় থাকা নামগুলি হল - অল পিপলস পার্টির নেতা থুমাথি রবি, আইনজীবী জয়শ্রী পাতিল, সংবিধান বাঁচাও ট্রাস্ট, ড. বি আর আম্বেদকর গ্লোবাল মিশন, অল ইন্ডিয়া এসসি/এসটি রেলওয়েজ এপ্লয়ি অ্যাসোসিয়েশন এবং ন্যাশনাল ফেডারেশন অফ দলিত অ্যান্ড আদিবাসী অর্গানাইজেশন।
উল্লেখ্য, গত ১ অগাস্ট সুপ্রিম কোর্টের সাত সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চ (৬-১ সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে) রায় ঘোষণা করে, রাজ্য সরকারগুলি যদি মনে করে সংরক্ষণে অগ্রাধিকার দেওয়ার জন্য তফসিলি জাতি ও তফসিলি উপজাতি শ্রেণির মধ্যে উপশ্রেণি তৈরি করবে, তাহলে তাদের সেই ক্ষমতা রয়েছে। তারা সেটা করতে পারে।
পর্যাপ্ত তথ্যপ্রমাণ ও যুক্তির উপর নির্ভর করেই শীর্ষ আদালত এই রায় ঘোষণা করে। এর ফলে ২০০৪ সালে ইভি চিন্নাইয়া মামলায় যে রায় দেওয়া হয়েছিল, তা ভিত্তিহীন হয়ে যায়।
উল্লেখ্য, ২০০৪ সালের সেই রায়ে বলা হয়েছিল, তফসিলি জাতি ও তফসিলি উপজাতির মধ্যে উপশ্রেণি তৈরি করার অনুমোদন দেওয়া সম্ভব নয়। কারণ, এই দুই শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত সকল গোষ্ঠীকেই সমশ্রেণি হিসাবে বিবেচনা করতে হবে।
প্রসঙ্গত, গত ১ অগাস্টের রায় ঘোষণার সময় সাংবিধানিক বেঞ্চের সাত সদস্যের মধ্যে কেবলমাত্র বিচারপতি ত্রিবেদী ভিন্ন মত পোষণ করেছিলেন। বাকি ছয় বিচারপতি ঘোষিত রায়ের পক্ষে ছিলেন।