দেশজুড়ে সাংবাদিক অর্ণব গোস্বামীর বিরুদ্ধে যে মানহানি মামলা দায়ের হয়েছে, সেই নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়ে সুফল পেলেন তিনি। আদালতের নির্দেশে আপাতত তিন সপ্তাহের মধ্যে তাকে গ্রেফতার করতে পারবে না পুলিশ। এর মধ্যে তিনি অগ্রিম জামিনের আবেদন করতে পারবেন। একই সঙ্গে সারা দেশজুড়ে নয়, একটি এফআইআরের ভিত্তিতে মানহানি মামলার শুনানি হবে বলে জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। অর্ণবের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে মুম্বই পুলিশ কমিশনারকে নির্দেশ দেন সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ।
এদিন অর্ণবের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টে সওয়াল করেন মুকুল রোহাতগি। মহারাষ্ট্রের পক্ষে ছিলেন কপিল সিবাল, রাজস্থানের পক্ষে ছিলেন মণীশ সিঙ্ঘভি, ছত্তিশগড়ের পক্ষে বিবেক তাঙ্খা। মুকুল বলেন যে তাঁর মক্কেল নিছকই পালঘরে পুলিশের উপস্থিতিতে হওয়া হত্যার কথা তুলে ধরেছিলেন। সেই রাজ্যে ক্ষমতায় থেকেও কংগ্রেস কিছু করেনি, সেই নিয়ে প্রশ্ন করেছিলেন। অন্যদিকে কপিল সিবাল বলেন যে অর্ণব সাম্প্রদায়িক উস্কানি দিয়েছেন, হিন্দু-মুসলমানদের মধ্যে বিভেদ ঘটাতে চেয়েছেন। তাই পুলিশের তদন্ত করা উচিত। ছত্তিশগড়ের কৌঁসুলী বলেন টিভি লাইসেন্সের অপব্যবহার করছেন অর্ণব।তাঁকে এরকম প্রচার করা থেকে নিরস্ত করা উচিত। রিপাবলিক টিভির সঞ্চালকের বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক রিপোর্টিংয়ের অভিযোগ করে রাজস্থানও।
এর জবাবে অর্ণবের উকিল বলেন যে সঞ্চালক তো শুধু সাধু হত্যার কথা তুলেছেন। এতে হিন্দু-মুসলমান আসছে কোথা থেকে। প্রসঙ্গত পালঘরের হত্যায় কংগ্রেস কেন চুপ ও এতে ইতালিতে জন্মগ্রহণকারী সোনিয়া গান্ধী খুশি, এরকম অভিযোগ করেছিলেন অর্ণব। যা নিয়ে তৈরী হয় বিতর্ক। সারা দেশজুড়ে অর্ণবের বিরদ্ধে মানহানির মামলা ও দাঙ্গা ছড়ানোর অভিযোগে এফআইআর করা হয়। সেই এফআইআরের হাত থেকে বাঁচতেই শীর্ষ আদালতে গিয়েছিলেন অর্ণব। ২১ তারিখ এই টিভি প্রোগ্রামের পর ২২ তারিখ রাতে বাড়ি ফেরার পথে অর্ণবের ওপর হামলা হয়। সঞ্চালক বলেন কংগ্রেস কর্মীরা তার ওপর হামলা চালায়। সেই ঘটনায় দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এনএম যোশী পুলিশ স্টেশনে সেই হামলার অভিযোগ দায়ের করেছিলেন তিনি। সেই পুলিশ স্টেশনেই অর্ণবের বিরুদ্ধে দায়ের করা এফআইআরেরও শুনানি হবে।
অর্ণবের বিরুদ্ধে আপাতত তিন সপ্তাহ কোনও ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না ২১ তারিখ তাঁর টিভি প্রোগামে বলা উক্তির বিষয়ে। শুধু নাগপুরে দায়ের করা এফআইআরটির শুনানি হবে। কিন্তু নাগপুরে নয়, মুম্বইয়ের এনএম যোশী পুলিশ স্টেশনে সেটিকে ট্রান্সফার করতে হবে, বলে শীর্ষ আদালত। একই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব পার্টিকে নোটিসও পাঠাবে জানায় শীর্ষ আদালত।