সংরক্ষণ পেয়ে বাবা ধনী হয়েছেন? তাহলে সন্তানের সেই সুবিধা পাওয়া উচিত নয়। এমনই মতপ্রকাশ করলেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি পঙ্কজ মিত্তল। বৃহস্পতিবার তফসিলি জাতি ও তফসিলি উপজাতির সংরক্ষণ মামলায় মোট ছ'টি রায় দিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের সাত বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ। একটি রায়ের ক্ষেত্রে বিচারপতি মিত্তল মন্তব্য করেছেন যে শুধুমাত্র একটি প্রজন্মকেই সংরক্ষণের সুযোগ দেওয়া উচিত। যদি সংরক্ষণের হাত ধরে প্রথম প্রজন্ম উচ্চস্তরে পৌঁছে যায়, তাহলে দ্বিতীয় প্রজন্মকে সেই সংরক্ষণের সুযোগ দেওয়া উচিত নয়।
তফসিলি জাতিদের মধ্যে আরও পিছিয়ে পড়া মানুষদের সংরক্ষণ
এমনিতে বৃহস্পতিবার শীর্ষ আদালত রায় দিয়েছে যে তফসিলি জাতির মধ্যে আরও শ্রেণিবিভাগ করা যাবে। তফসিলি জাতির মধ্যে যাঁরা আরও পিছিয়ে পড়া মানুষ আছেন, তাঁদের আলাদা করে কোটা প্রদানের জন্য সেই শ্রেণিবিভাগ করা যাবে বলে জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। ৬-১ রায়ে সেই নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত। সেইসঙ্গে শীর্ষ আদালত জানিয়েছে যে কোনও একটি উপশ্রেণির জন্য ১০০ শতাংশ সংরক্ষণের নিয়ম চালু করতে পারবে না রাজ্য সরকার। আর কেন সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, সেটার ব্যাখ্যাও দিতে হবে।
ভারতের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি বিআর গভাই, বিচারপতি বিক্রম নাথ, বিচারপতি মিত্তল, বিচারপতি মনোজ মিশ্র এবং বিচারপতি সতীশচন্দ্র রায় একই মত পোষণ করেছেন। ভিন্নমত পোষণ করেছেন বিচারপতি বেলা ত্রিবেদী।
সমানাধিকার লঙ্ঘিত হয় না, মত CJI-র
ভারতের প্রধান বিচারপতি জানিয়েছেন, যে সব ঐতিহাসিক প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে, তাতে ইঙ্গিত মেলে যে তফসিলি জাতি মোটেও সমজাতীয় শ্রেণি নয়। তফসিলি জাতির শ্রেণিভাগ করা হলে সংবিধানের ১৪ ধারা লঙ্ঘিত হয় না। যে ধারায় সমানাধিকার প্রদান করা হয়েছে। সেইসঙ্গে সংবিধানের ৩৪১ (২) ধারাকেও লঙ্ঘন করে না। সংবিধানের ১৫ ধারা এবং ১৬ ধারায় এমন কিছু নেই, যা কোনও জাতির শ্রেণিভাগ করতে রাজ্য সরকারকে বিরত থাকতে বলেছে।
'রাজনৈতিক প্রভাবকে মুক্ত রাখতেই সংবিধানের ৩৪১ ধারা'
যদিও ভারতের প্রধান বিচারপতির রায়ের সঙ্গে সহমত পোষণ করেননি বিচারপতি ত্রিবেদী। তাঁর মতে, সংবিধানের ৩৪১ ধারায় তফসিলি জাতিদের তালিকায় হেরফের করতে পারে না রাজ্য সরকার। সংসদের চালু করা আইনের মাধ্যমে সেই তালিকায় কোনও জাতিকে যোগ করা যায় না বা কোনও জাতিকে বাদ দেওয়া যায় না।
কিন্তু শ্রেণিভাগের অনুমতি দেওয়া হলে সেই তালিকায় হেরফের করা যাবে বলে মতপ্রকাশ করেছেন বিচারপতি ত্রিবেদী। তাঁর মতে, তফসিলি জাতি ও জনজাতি তালিকায় যাতে কোনও রাজনৈতিক প্রভাব না থাকে, সেটাই সংবিধানের ৩৪১ ধারার উদ্দেশ্য।