দেশের নাগরিকদের বিবাহ বিচ্ছেদ ও খোরপোষের ক্ষেত্রে অভিন্ন নিয়ম চালু করা নিয়ে কেন্দ্রকে নোটিস দিল সুপ্রিম কোর্ট। এই সংক্রান্ত পিটিশন জমা পড়েছে শীর্ষ আদালত। সেই জন্য কেন্দ্রকে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করতে হবে।
বিজেপি নেতা অশ্বিনী কুমার দুটি পৃথক জনস্বার্থ মামলা দাখিল করেছেন সুপ্রিম কোর্টে। সেগুলিতে তিনি বলেছেন যে সমস্ত ধর্মে মহিলাদের সম অধিকার দিতে হবে ও কোনও ধর্মীয় আচরণ যদি তাদের মৌলিক অধিকার খর্ব করে, তাহলে সেই আচরণকে আইনি সুরক্ষাকবচ দেওয়া উচিত নয়। এদিন প্রধান বিচারপতি বোবদের বেঞ্চে এই মামলা ওঠে। তিন সদস্যের বেঞ্চে আছেন বিচারপতি বোপান্না ও বিচারপতি রামসুব্রমণিয়ম বলেন যে তাঁরা সতর্কতার সঙ্গে নোটিস জারি করলেন।
বেঞ্চ বলে যে পিটিশনকারী তাদের এমন একটি দিকে নিয়ে যেতে চাইছে যেটি ব্যক্তিগত আইনের ওপর হস্তক্ষেপ হতে পারে ও যে সমস্ত কিছু ব্যক্তিগত আইন সিদ্ধ করছে চাইছে সেগুলিকে নষ্ট করতে পারে। এদিন ডিভোর্সের অভিন্ন নিয়মের জন্য সওয়াল করেন আইনজীবী পিঙ্কি আনন্দ। অন্যদিকে খোরপোষের অভিন্ন নিয়মের জন্য সওয়াল করেন আইনজীবী মীনাক্ষি আরোরা।
এদিন বিবাহ বিচ্ছেদের পিটিশনে বলা যায় যে এর নিয়ম বিভিন্ন ধর্মের জন্য আলাদা ও বিভিন্ন লিঙ্গের ক্ষেত্রেও আলাদা। বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের জন্য হিন্দু, ক্রিস্টান ও পার্সিরা ডিভোর্স চাইতে পারে কিন্তু মুসলিমরা পারে না। যৌন সংগমে অক্ষমতার কথা বলে হিন্দু ও ক্রিস্টানরা সম্পর্ক ছেদ করতে পারে কিন্তু অন্য ধর্মে হয় না। এরকম বেশ কিছু উদাহরণের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
বেঞ্চ প্রশ্ন করে ব্যক্তিগত আইনের পরিধি অতিক্রম না করে কি এই সব বৈষম্য আদৌ দূর করা সম্ভব। তখন তিন তালাকের বিষয়টি উল্লেখ করেন আইনজীবীরা যেটাকে সুপ্রিম কোর্ট অসাংবিধানিক বলে ঘোষণা করেছে। একই সঙ্গে অভিন্ন দেওয়ানি নীতি চালু করা নিয়ে সংসদকে যে শীর্ষ আদালত সুপারিশ করেছে, সেই কথাও উল্লেখ করা হয়। জবাবে বেঞ্চ বলে যে মুসলিম পার্সোনাল ল-তেই তিন তালাকের কোনও স্বীকৃতি পাওয়া যায় নি। এদিনের শুনানির শেষে যদিও কেন্দ্রকে নোটিস পাঠিয়েছে আদালত এই দুটি পিটিশন নিয়ে।