সাধারণ সড়ক থেকে শুরু করে জাতীয় সড়ক কিংবা এক্সপ্রেসওয়ে - কোথায় গাড়ির গতি কত হবে, সেটা ঠিক করা কোনও আদালতের কাজ নয়। এই কাজ করবেন কেবলমাত্র বিশেষজ্ঞরা। এবং তাঁদের পরামর্শ ও প্রস্তাব মেনে সেই নিয়ম কার্যকর করবে সংশ্লিষ্ট সরকার। রাস্তায় গাড়ির গতি সংক্রান্ত একটি মামলার শুনানিতে এই রায় দিল সুপ্রিম কোর্ট।
উল্লেখ্য, এর আগে এই সংক্রান্ত মামলাতেই কেন্দ্রীয় সরকারকে বিশেষ কিছু নির্দেশ দিয়েছিল মাদ্রাজ হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সূর্য কান্ত এবং বিচারপতি উজ্জ্বল ভুঁইয়ার বেঞ্চ যদিও সেই নির্দেশ খারিজ করে দেয়।
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে কেন্দ্রীয় সরকার ভারতের এক্সপ্রেসওয়েগুলিতে গাড়ির সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার থেকে বাড়িয়ে ১২০ কিলোমিটার করে দেয়। মাদ্রাজ হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ তার প্রেক্ষিতে সরকারকে নির্দেশ দেয়, ওই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে হবে এবং এক্সপ্রেসওয়েগুলিতে স্পিড লিমিট ১২০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা থেকে কমিয়ে ফের ১০০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টায় নামিয়ে আনতে হবে।
হাইকোর্ট এই নির্দেশিকা জারি করেছিল একটি নির্দিষ্ট মামলার প্রেক্ষিতে। সেই মামলাটি রুজু করেছিলেন এক মহিলা। অভিযোগ ছিল, ওই মহিলার নাবালক সন্তানকে অত্যন্ত দ্রুত গতিতে আসা একটি গাড়ি ধাক্কা মারে। যার জেরে তাঁর নাবালক সন্তানের শরীরের ৯০ শতাংশ অংশই অকেজো হয়ে যায়।
সেই মামলায় ওই নাবালকের পরিবারের জন্য আর্থিক ক্ষতিপূরণের পরিমাণও বাড়িয়ে ১.৫ কোটি টাকা করে দেয় মাদ্রাজ হাইকোর্ট। যা আগে ছিল মাত্র ১৮ লক্ষ টাকা।
সেই রায়ের বিরোধিতা করে সুপ্রিম কোর্টে মামলা রুজু করা হয়। তার প্রেক্ষিতে শীর্ষ আদালত রায় দেয়, হাইকোর্ট যে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে, তাতে সুপ্রিম কোর্ট কোনও হস্তক্ষেপ করবে না। একইসঙ্গে কোর্ট জানিয়ে দেয়, সড়কে গাড়ির সর্বোচ্চ গতি নির্ধারণ করা কখনও কোনও আদালতের কাজ বা দায়িত্ব হতে পারে না।
পাশাপাশি, মাদ্রাজ হাইকোর্ট স্পিড লিমিট কমানোর যে নির্দেশিকা জারি করেছিল, কেন্দ্রীয় সরকার যে সেই নির্দেশকে যে আর চ্যালেঞ্জ করেনি, শীর্ষ আদালতও তারও 'নোট' রাখতে বলে।
এই প্রসঙ্গে সংশ্লিষ্ট বেঞ্চের বক্তব্য ছিল, 'একটি দুর্ভাগ্যজনক ঘটনার জন্য আদালত কখনই সড়কপথে, জাতীয় সড়কে এবং এক্সপ্রেসওয়েগুলিতে গাড়ির গতি সামগ্রিকভাবে কমানোর নির্দেশ দিতে পারে না। আমরা সারা দেশের গতি এভাবে কমিয়ে দিতে পারি না।'