বছরের পর বছর ধরে বিবাহ বহির্ভূত কোনও সম্পর্কে স্বেচ্ছায় জড়িয়ে থাকার পর, সেই সম্পর্কে থাকাকালীন সহমতের ভিত্তিতে সহবাস করার পর যদি কোনও মহিলা বলেন, তাঁর পুরুষ সঙ্গীটি বিয়ের মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাঁকে ধর্ষণ করেছেন, তাহলে সেই অভিযোগ গ্রাহ্য হতে পারে না।
একটি মামলার পরিপ্রেক্ষিত এই রায় দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। একইসঙ্গে, ইদানীংকালে এই ধরনের ঘটনা বাড়ছে বলেও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে শীর্ষ আদালত।
এই যুক্তিতেই সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি বি ভি নাগারত্ন এবং বিচারপতি এ কোটিশ্বরের বেঞ্চ সাত বছরের পুরোনো একটি এফআইআর খারিজ করে দিয়েছে।
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, সংশ্লিষ্ট এফআইআর-টি দায়ের করা হয়েছিল মুম্বইয়ের খারঘর থানায়। তাতে মহেশ দামু খাড়ে নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে বিয়ের মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ এনেছিলেন বনিতা এস যাদব নামে এক মহিলা।
সংশ্লিষ্ট এফআইআর খারিজ করার সময় আদালত তার পর্যবেক্ষণে বলে, 'এটি একটি অত্যন্ত উদ্বেগজনক প্রবণতা। দেখা যাচ্ছে সহমতের ভিত্তিতে একটি সম্পর্ক বহু দিন চলছে। তারপর যেই সেই সম্পর্কে ভাঙছে, তখনই সেটিকে অপরাধ বলে দাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে।'
আদালতের বক্তব্য হল, জেনে-বুঝে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হওয়ার পর অভিযোগ জানিয়ে কোনও লাভ নেই। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট মহিলাকে সম্পর্কে জড়ানোর আগেই সতর্ক হতে হবে এবং তিনি কী করবেন, সেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। বছরের পর বছর ধরে শারীরিক সম্পর্কে থাকার পর এহেন অভিযোগ করা যাবে না।
সংশ্লিষ্ট মামলা প্রসঙ্গে জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত ব্যক্তি মহেশ দামু খাড়ে একজন বিবাহিত পুরুষ। অন্যদিকে, বনিতা এস যাদব একজন বিধবা। তাঁদের প্রেম শুরু হয় ২০০৮ সালে।
বনিতার দাবি, মহেশ তাঁকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন বলেই তিনি তাঁর সঙ্গে যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হতে রাজি হয়েছিলেন। কিন্তু, এরই মধ্যে মহেশের স্ত্রী বনিতার নামে তোলাাবাজির অভিযোগ দায়ের করেন। এরপর ২০১৭ সালে বনিতা মহেশের বিরুদ্ধে পালটা বিয়ের মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাস তথা ধর্ষণের অভিযোগে মামলা রুজু করেন।
এক্ষেত্রে আদালতের বক্তব্য ছিল, অভিযোগকারিণী জানতেন তাঁর সঙ্গীটি বিবাহিত। এবং তিনি সেটা জানার পরও বছরের পর বছর ধরে তাঁর সঙ্গে যৌন সম্পর্কে লিপ্ত থেকেছেন। তারপর হঠাৎ একদিন বললেন, তাঁর সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে। এটা হতে পারে না।
এই যুক্তিতেই সাত বছরের পুরোনো ওই এফআইআর আদালত খারিজ করে দিয়েছে।