জামিন পেয়ে গিয়েছেন 'ঘনিষ্ঠ বন্ধু' অর্পিতা মুখোপাধ্যায় পর্যন্ত। তবে এখনও জেলেই দিন কাটছে পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের। এর আগে হাই কোর্টে পার্থর জামিনের মামলায় দ্বিধাবিভক্ত ছিল বেঞ্চ। এই আবহে জামিন পাননি প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী। এই আবহে জামিন মামলার জল গড়ায় সুপ্রিম কোর্টে। সেখানেই শুনানি চলাকালীন বিচারপতির ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হল ইডিকে। পার্থর হয়ে আজ শীর্ষ আদালতে সওয়াল করেন মুকুল রোহতগী। আইনজীবীর যুক্তি ছিল, যে মামলায় পার্থ চট্টোপাধ্যায় জেলে আছেন, তার পরিপ্রেক্ষিতে কেউ দোষী সাব্যস্ত হলে সর্বোচ্চ ৭ বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে। তবে বিগত আড়াই বছর ধরে তাঁর মক্কেল বিনা বিচারে জেলেই সময় কাটাচ্ছেন। মুকুল আরও বলেন, 'যাঁর বাড়ি থেকে টাকা পাওয়া যায়, সেই অর্পিতা জামিন পেয়ে গিয়েছেন। প্রাথমিক পর্ষদের তৎকালীন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য, তাঁর ছেলে জামিন পেয়েছেন। শুধু পার্থই জামিন পাচ্ছেন না।' (আরও পড়ুন: বেনজির আক্রমণ শানিয়েছিলেন সঞ্জয় রাউত, প্রাক্তন CJI চন্দ্রচূড়ের জবাব - 'সরি...')
আরও পড়ুন: বকেয়া ডিএ মামলায় কি এবার 'সেনাপতি' বদলাবেন সরকারি কর্মীরা? সামনে বড় আপডেট
আরও পড়ুন: প্রয়াগ চিটফান্ড মামলায় গ্রেফতার বাবা-পুত্র, ২ ডিরেক্টরের থেকে কী জানতে চায় ED?
এই আবহে ইডি পালটা যুক্তি দিতে চায়, এই মামলায় তারা ১০০ শতাংশ নিশ্চিত যে অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করা যাবে। এই আবহে বিচারপতি ইডিকে পালটা তোপ দেগে বলেন, 'আপনাদের দোষী সাব্যস্ত করার হার কত? তা খুবই খারাপ। যদি সেই হার ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ হত, তাহেও বোঝা যেত।' এই আবহে শীর্ষ আদালত প্রশ্ন করে, 'পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে জামিন দিলে কী সমস্যা হবে?' এদিকে শুনানি চলাকালীন অর্পিতার প্রসঙ্গ তুলে আনে ইডি। সেই সময় বিচারপতি পালটা বলেন, 'কে এই অর্পিতা? শুধু তাঁর বয়ান দিয়ে হবে না, অন্য তথ্যপ্রমাণ খতিয়ে দেখতে হবে। পার্থ চট্টোপাধ্যায় মন্ত্রী ছিলেন। প্রভাবশালী ছিলেন তিনি। কিন্তু ঘুষের টাকা কেউ নিজের বাড়িতে রাখে না।' (আরও পড়ুন: আমেরিকায় মামলার রিপোর্ট সামনে আসার পর থেকে কত টাকা হারিয়েছে আদানি?)
আরও পড়ুন: মার্কিন মুলুকে মামলায় অভিযোগ প্রমাণিত হলে গৌতমের কি জেল হবে? জানাল আদানি গৌষ্ঠী
আরও পড়ুন: আমেরিকায় NIH ডিরেক্টর পদে বসবেন কলকাতায় জন্মানো জয় ভট্টাচার্য, ঘোষণা ট্রাম্পের
উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ২৩ জুলাই শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় পার্থকে গ্রেফতার করে ইডি। গ্রেফতার করা হয় তাঁর বান্ধবী অর্পিতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও। প্রথমে টালিগঞ্জে অর্পিতার ফ্ল্যাটে হানা দিয়ে ২১ কোটি টাকারও বেশি নগদ উদ্ধার করেছিল ইডি। এরপরে অর্পিতার বেলঘরিয়ার ফ্ল্যাট থেকেও টাকা উদ্ধার করা হয়। পাওয়া যায় ২৭ কোটি ৯০ লক্ষ টাকা। এত নগদ দেখে চোখ কপালে উঠেছিল বঙ্গবাসীর। তবে এখানেই শেষ হয়নি দুর্নীতির টাকার হিসেব। (আরও পড়ুন: রয়েছে ৩ অভিযোগ, তবে ঘুষ দেওয়ায় অভিযুক্ত নন আদানি, স্পষ্ট করল সংস্থা)
আরও পড়ুন: আর কয়েক সপ্তাহ পরেই সুপ্রিম কোর্টে উঠবে ডিএ মামলা, কজলিস্ট মিলবে কবে?
এদিকে পার্থ, অর্পিতার পরও এই শিক্ষক নিয়োগ দুর্তীতি মামলায় রাজ্যের আরও হেভিওয়েটরা কেন্দ্রীয় তদন্তকারীদের জালে জড়িয়েছেন। মানিক ভট্টাচার্য, মধ্যশিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়, প্রাক্তন এসএসসি উপদেষ্টা শান্তিপ্রসাদ সিনহা, এসএসসির প্রাক্তন চেয়ারম্যান সুবীরেশ ভট্টাচার্য, প্রাক্তন সচিব অশোক সাহা, প্রাক্তন তৃণমূল যুব নেতা কুন্তল ঘোষ সহ একাধিক জন এই মামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে হাজতে যান। তাঁদের মধ্যে অনেকেই জামিন পেলেও পার্থ এখনও জেলে।