প্রত্যাশামতোই কৃষি আইনের ওপর স্থগিতাদেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। প্রত্যাশা ছিল যে এরপর হয়তো প্রতিবাদ বিক্ষোভের পথ ছেড়ে আদালতের গঠিত কমিটির সঙ্গে আলোচনায় বসবে চাষীরা। কিন্তু সেই সম্ভাবনা কার্যত উড়িয়ে দিয়েছে কৃষক সংগঠনগুলি। কমিটির সদস্যদের নিয়েই প্রশ্ন তুলেছে তারা।
এদিন সুপ্রিম কোর্ট নিজেদের রায়ে বলে যে স্থগিতাদেশের ফলে চাষীদের মনে যে ক্ষত, তাতে প্রলেপ লাগতে পারে ও তাঁরা অনেক বেশি উৎসাহের সঙ্গে মধ্যস্থতা করতে আসতে পারে। সংসদে পাশ করা সিদ্ধান্ত রদ করার ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্ট যে শক্তিহীন নয়, সেটাও লেখা হয়েছে রায়ে। তিন সদস্যের বেঞ্চ বলেছে যে ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের যে ব্যবস্থা আছে, সেটা যেন বহাল থাকে আপাতত। আইনের জেরে চাষীরা যেন জমি না হারায় সেটা নিশ্চিত করতে হবে বলে ১১ পাতার অন্তর্বতী রায়ে জানিয়েছে প্রধান বিচারপতি বোবডের বেঞ্চ। বেঞ্চের আশা যে প্রতিবাদের ফলে যে আপাতত আইনগুলি স্থগিত হল, তার ফলে নিজেদের ঘরে চাষীরা ফিরবেন।
এদিন শলা-পরামর্শের জন্য চার সদস্যের কমিটি গঠন করেছে আদালত। দশ দিনের মধ্যে প্রথম বৈঠক করবে কমিটি ও দুই মাসের মধ্যে তারা সুপ্রিম কোর্টকে রিপোর্ট দেবে। আট সপ্তাহের জন্য মামলাটি মুলতুবি করে দেয় আদালত। শান্তিপূর্ণ ভাবে প্রতিবাদ করার জন্য চাষীদের প্রশংসা করে আদালত। তবে চাষীদের আইনজীবীরা এদিন যে আদালতে আসেননি, সেই বিষয়টিও রায়ে উল্লেখ করে আদালত।
তবে চাষীদের পক্ষে বলা হয়েছে যে কমিটি গঠন করা সত্ত্বেও তারা আন্দোলন চালিয়ে দেবেন। চাষী সংগঠনদের দাবি যে কমিটির সদস্যরা সরকারপন্থী ও সেই কারণে তারা যাবেন না আদালত গঠিত প্যানেলের কাছে। চাষীদের নেতা বলবীর রাজেওয়াল বলেন যে কমিটির সদস্যরা তো ইতিমধ্যেই কৃষক আইনের পক্ষে বলেছেন। সেই কারণে তারা নির্ভরযোগ্য নয় বলে মনে করছেন প্রতিবাদীরা। একই সঙ্গে চাষীদের দাবি যে কমিটির পক্ষে তারা নয় কারণ এটা প্রতিবাদ থেকে চোখ সরানোর কৌশল সরকারের। চাইলে সুপ্রিম কোর্ট আইনগুলিকে খারিজ করে দিতে পারত বলে দাবি চাষীদের। কমিটির সামনে না গেলেও সরকারের সঙ্গে নির্ধারিত ১৫ জানুয়ারির বৈঠকের জন্য চাষীরা যাবেন বলে এদিন নেতারা জানিয়েেছেন। সব মিলিয়ে চাষীরা যদি নিজেদের মত না পরিবর্তন করেন, তাহলে সুপ্রিম কোর্ট গঠিত কমিটি প্রতিবাদীদের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পাবে না। তাই এর মধ্যে সরকার ও চাষীরা যদি মিটমাট না করতে পারে, আগামী দুই মাস যে কৃষক আন্দোলন বজায় থাকবে, তা কার্যত বলেই দেওয়া যায়। তবে আপাতত আইনটি ব্যবহারের ওপর পড়ে গেল নিষেধাজ্ঞা।