স্কুলে কোনও সাফাই কর্মী না থাকায় পড়ুয়াদের দিয়ে বিদ্যালয় পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালিয়েছিলেন শিক্ষক। তাতেই ঘটেছিল বিপত্তি। ক্ষুব্ধ অভিভাবকরা পড়ুয়াদের অন্যত্র ভর্তি করে দিয়েছিলেন। যার ফলে ওই স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা ১০ থেকে নেমে ১ জনে এসে দাঁড়ায়। সেই হতাশা থেকে আত্মঘাতী হলেন শিক্ষক। এমনই ঘটনা ঘটেছে মহারাষ্ট্রের পুনে জেলার হোলে বস্তি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। পুলিশ জানিয়েছে, ওই শিক্ষকের নাম অরবিন্দ জ্ঞানেশ্বর দেওকর (৪৬) । এমন ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
আরও পড়ুন: ছেলের বিয়ে দেওয়ার পরেই দেনার দায়ে আত্মঘাতী ফুচকা বিক্রেতা, উদ্ধার দেহ
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দেড় মাস আগে ওই প্রাথমিক বিদ্যালয় বদলি হয়ে এসেছিলেন ওই শিক্ষক। সেই সময় স্কুলে ছিল মাত্র ১০ জন পড়ুয়া। এদিকে, আবর্জনায় ভর্তি স্কুল পরিষ্কার করানোর পরিকল্পনা করেছিলেন ওই শিক্ষক। কিন্তু, কোনও সাফাই কর্মী না থাকায় শিক্ষক শিক্ষার্থীদের সাহায্য নিয়েছিলেন। বিষয়টি জানার পর ক্ষুব্ধ অভিভাবকরা তাঁদের সন্তানদের অন্য বিদ্যালয়ে ভর্তি করে দেন। এটাকে পেশাগত ব্যর্থতা মনে করে ওই শিক্ষক আত্মহত্যা করেন।
জানা গিয়েছে, ওই শিক্ষক গত ৩ অগাস্ট জাওজিবুওয়াচি ওয়াড়ির কাছে ওই স্কুলের মধ্যেই আত্মঘাতী হয়েছেন। ঘটনাস্থল থেকে একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার হয়েছে। সুইসাইড নোটে তিনি লিখেছেন, ‘স্কুলে কোনও সাফাইকর্মী না থাকায় তিনি যোগদানের সঙ্গে সঙ্গে স্কুলটিকে পরিষ্কার এবং স্যানিটাইজ করার জন্য একটি পরিচ্ছন্নতা অভিযান পরিচালনা করেছিলেন। অনেক ক্ষুব্ধ অভিভাবক তাঁদের সন্তানদের পরের দিন স্কুলে যাওয়া এবং তাদের কাজ করাতে আপত্তি জানান।’ এ নিয়ে শিক্ষক অভিভাবকদের বোঝানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু, পরে কয়েক দিনের মধ্যে ১০ জনের মধ্যে ৯ জন পড়ুয়াকে এলাকার অন্য স্কুলে ভর্তি করা হয়। শিক্ষক অভিভাবকদের তা না করার জন্য বোঝানোর চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হন। এমনকী যে পড়ুয়ারা ভর্তি হয়েছিল তারাও স্কুলে আসা বন্ধ করে দেয়। পুলিশ জানিয়েছে, দেওকরকে গত ৩ অগস্ট উরুলি কাঞ্চনের একটি গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু, তাঁর অবস্থা খারাপ হওয়ায় তাঁকে অন্য হাসপাতালে রেফার করা হয়। সেখানে ৪ অগস্ট তিনি মারা যান।
সুইসাইড নোটে ওই শিক্ষক আরও দাবি করেছেন, স্কুলের কেউ তাঁকে সাহায্য করেননি। তাই তিনি বিদ্যালয় পরিষ্কারসহ যাবতীয় কাজ নিজের হাতে নিয়েছিলেন। পুলিশ জানিয়েছে, অভিভাবকদের তাঁদের সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে রাজি করাতে ব্যর্থ হওয়ার পরে জীবন শেষ করার সিদ্ধান্ত নেন ওই শিক্ষক। উল্লেখ্য, ওই শিক্ষক পুরন্দর তালুকের মাওয়াদি পিম্পরি গ্রামের বাসিন্দা। তাঁর স্ত্রী ও দুই সন্তান রয়েছে। জানা গিয়েছে, এই ঘটনায় তদন্ত করবে জেলার শিক্ষা দফতর।