প্রখ্যাত সাংবিধানিক জুরিস্ট তথা সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র অ্যাডভোকেট ফলি নরিমান প্রয়াত হলেন আজ সকালে। দিল্লিতেই বার্ধক্যজনিত অসুস্থতার কারণে মৃত্যু হয় তাঁর। প্রয়াণকালে তাঁর বয়স ৯৫ বছর হয়েছিল বলে জানা গিয়েছে। ১৯৯১ সালে পদ্মভূষণ এবং ২০০৭ সালে পদ্মবিভূষণ সম্মানে ভূষিত করা হয়েছিল তাঁকে। ১৯৯১ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত একনাগাড়ে ভারতের বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ছিলেন তিনি। ১৯৯৯ সাল থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত রাষ্ট্রপতি মনোনীত রাজ্যসভার সদস্যও ছিলেন ফলি নরিমান। ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ পর্যন্ত ভারতের অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল পদে ছিলেন ফলি নরিমান। ইন্দিরা গান্ধীর সরকারই তাঁকে নিয়োগ করেছিল। পরে ইন্দিরা গান্ধী দেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করলে অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল পদ থেকে পদত্যাগ করেছিলেন নরিমান। ভারতের আইন ব্যবস্থার 'ভীষ্ম পিতামহ' আখ্যা দেওয়া হত তাঁকে। (আরও পড়ুন: 'আধার নিষ্ক্রিয়তায় BJP-র বিরুদ্ধে চলে যেতে পারে বাংলা', শুভেন্দুর চিঠি মোদীকে)
আরও পড়ুন: 'হিন্দি-উর্দু চলবে না, সরকারি চাকরিতে চাই শুধু বাংলা', ভাষা দিবসে চিঠি মমতাকে
নরিমানের জন্ম হয়েছল রেঙ্গুনে। ১৯২৯ সালের ১০ জানুয়ারি এক পারসি পরিবারের জন্ম নিয়েছিলেন তিনি। সিমলার বিশপ কটন স্কুলে পড়াশোনা করেন তিনি। পরে মুম্বইয়ের সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ থেকে অর্থশাস্ত্র এবং ইতিহাস নিয়ে পড়াশোনা শেষ করেন। এরপর মুম্বইয়েরই গভর্নমেন্ট ল' কলেজ থেকে আইন নিয়ে পড়াশোনা করে আইনজীবী হিসেবে কাজ শুরু করেন। দীর্ঘ ২২ বছর বম্বে হাই কোর্টে আইনজীবী হিসেবে কাজ করেছিলেন ফলি নরিমান। ১৯৬১ সালে সিনিয়র অ্যাডভোকেট হয়েছিলেন তিনি। পরে দিল্লিতে এসে সুপ্রিম কোর্টে কাজ শুরু করেছিলেন তিনি। সব মিলিয়ে প্রায় ৭ দশক ধরে তিনি আইনজীবী হিসেবে কাজ করেছেন।
কর্মজীবনে বহু গুরুত্বপূর্ণ মামলায় সওয়াল জবাব করেছিলেন নরিমান। এছাড়াও আন্তর্জাতিক স্তরে জুরিস্ট হিসেবে তিনি প্রখ্যাত ছিলেন। তিনি ১৯৯৪ সাল থেকে ইন্টারন্যাশনাল কাউন্সিল ফর কমার্শিয়াল আরবিট্রেশনের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ১৯৮৯ সাল থেকে ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অফ কমার্সের অভ্যন্তরীণ সালিশি আদালতের ভাইস-চেয়ারম্যানও ছিলেন তিনি। ১৯৯৫ থেকে ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত জেনেভায় আন্তর্জাতিক বিচারক কমিশনের নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন নরিমান। এছাড়ও আরও বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পদে নরিমান দায়িত্ব পালন করেছিলেন নিজের কর্মজীবনে। তাঁর ছেলে রোহিন্টন নারিমান পরবর্তীকালে ভারতের সলিসিটর জেনারেল হয়েছিলেন। এবং পরে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছিলেন।