করোনার সম্ভাব্য টিকা কোভিশিল্ড সম্পূর্ণ নিরাপদ বলে দাবি করল সেরাম ইনস্টিটিউট। তাদের আইনি নোটিশ পাঠিয়ে চেন্নাইয়ের এক ভ্যাকসিন ভলান্টিয়ার দাবি করেছেন, যে ওই টিকা নেওয়ার পরেই তাঁর স্নায়ুতন্ত্র প্রায় সম্পূর্ণ অকেজো হয়ে পড়ে এবং শারীরিক ক্রিয়া অচল হয়। সেই দাবি খণ্ডন করে এদিন ফের বিবৃতি দিল পুনের সেরাম ইনস্টিটিউট যারা ভারতে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের তৈরি করা ভ্যাকসিন নিয়ে আসছে।
সেরামের দাবি স্বেচ্ছাসেবকের শারীরিক অবস্থার সঙ্গে টিকা নেওয়ার কোনও সম্পর্ক নেই। এটি নিরাপদ ও প্রতিষেধক ক্ষমতা তৈরি করছে বলে সংস্থার দাবি। সেরাম জানিয়েছে যে তারা ওই ব্যক্তির শীরিরিক অবস্থার বিষয়ে সহানুভুতিশীল। কিন্তু সেরামের দাবি যে সমস্ত নিয়মাবলি মানা হয়েছে অক্ষরে অক্ষরে। এই অভিযোগটির কোনও সারবত্তা আছে কি না সেটা তদন্ত করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানান হয়। সেরাম বলেছে যে ডিএসএমবির মুখ্য তদন্তকারী ও এথিকস কমিটি, আলাদা আলাদা করে তাদের ক্লিনচিট দিয়েছে ও জানিয়েছে যে এই ঘটনার সঙ্গে টিকা নেওয়ার কোনও সংযোগ নেই। এই ছাড়পত্র পাওয়ার পর সেই রিপোর্ট ড্রাগ কন্ট্রোল অথরিটিকে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে সেরাম। সমস্ত ছাড়পত্র পাওয়ার পরেই ফের ট্রায়াল শুরু হয় বলে জানিয়েছে সেরাম। তাদের আশ্বাস যতক্ষণ না তারা নিশ্চিত হবেন যে এই ভ্যাকসিন সম্পূর্ণ নিরাপদ, সেটা কোনও ভাবেই সবাইকে দেওয়া হবে না।
বর্তমানে কোভিশিল্ডের তৃতীয় দফার ট্রায়াল চলছে ২৬ হাজার স্বেচ্ছাসেবককে নিয়ে। কোভিড ভ্যাক্সিন ট্রায়ালে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে জানিয়ে ৫ কোটি টাকা দাবি করেন এই চেন্নাইয়ের ব্যক্তি। বছর চল্লিশের ওই স্বেচ্ছাসেবকের দাবিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে পালটা ১০০ কোটি টাকার মানহানি মামলা করার সিদ্ধান্ত নেয় সেরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া (এসআইআই)।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও অ্যাস্ট্রাজেনেকা সংস্থার তৈরি কোভিশিল্ড ভ্যাক্সিন ভারতে উৎপাদন করছে এসআইআই যা স্পনসর করছে আইসিএমআর। ভ্যাক্সিন ট্রায়ালে অংশগ্রহণে আগ্রহী ওই স্বেচ্ছাসেবককে গত ১ অক্টোবর টিকা দেওয়া হয় চেন্নাইয়ের রামচন্দ্র ইনস্টিটিউট অফ হায়ার এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ কেন্দ্রে।
এসআইআই-কে পাঠানো আইনি নোটিশে এই কোভিড ভ্যাক্সিন নিরাপদ নয় জানিয়ে ওই ব্যক্তি অবিলম্বে ট্রায়াল বন্ধ করার আবেদন জানিয়েছেন। শুধু তাই নয়, আবেদন গ্রাহ্য না হলে তিনি সেরামের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করবেন বলেও হুমকি দিয়েছেন। তাঁর পাঠানো নোটিশে বলা হয়েছে, শরীরে কোভিশিল্ডের ডোজ প্রবেশ করার পরে তিনি অ্যাকিউট এনসেফ্যালোপ্যাথি উপসর্গে আক্রান্ত হন, যার জেরে মস্তিষ্কে প্রভাব পড়ে। তাঁর দাবি, স্বাস্থ্য পরীক্ষায় জানা গিয়েছে যে, টিকা নেওয়ার কারণেই তাঁর শারীরিক সমস্যা দেখা দিয়েছে।