সদ্য প্রয়াত হয়েছেন শিল্পপতি রতন টাটা। প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শরদ পাওয়ার মঙ্গলবার দাবি করেছেন যে টাটা অ্যাডভান্সড সিস্টেম ও এয়ারবাস যেটা গুজরাটে রয়েছে সেটা মহারাষ্ট্রে হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উদ্যোগে সেটাকে সরানো হয়।
শরদ পাওয়ার বরামতীতে বিধানসভা এলাকায় একটা নির্বাচনী সভায় বলেছিলেন, রতন টাটা চাইতেন মহারাষ্ট্রে এই প্রকল্পটা হোক। তাঁর সঙ্গে কথা বলেই নাগপুর এমআইডিসিতে একটা জায়গা চিহ্নিত করা হয়েছিল। সেই জায়গাটির পরিমাণ ছিল ৫০০ একর। শরদ পাওয়ার জানিয়েছেন সেটা ছিল মনমোহন সিং সরকারের আমলে। যার শরিক ছিলেন শরদ পাওয়ার নিজেও। তিনি বলেন, আমাদের সরকারের বদল হল। এরপর ক্ষমতায় এল মোদী সরকার। মোদী প্রধানমন্ত্রী হলেন। আর প্রধানমন্ত্রী হয়েই তিনি টাটাকে বললেন যাতে কারখানাটি গুজরাটে করা যায়।
শরদ পাওয়ার বলেন, এই কারখানা মহারাষ্ট্রে হলে হাজার হাজার কর্মীরা কাজ পেতেন। তাঁর আরও দাবি সেমিকন্ডাক্টর তৈরির কারখানা ফক্সকনকেও মোদী সরিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন গুজরাটে। সেটা মহারাষ্ট্রে হওয়ার কথা ছিল। শরদ পাওয়ার বলেন, প্রধানমন্ত্রী কেবলমাত্র একটা রাজ্যের জন্য নন। তিনি গোটা দেশের। তাঁর গোটা দেশের কথাই ভাবা উচিত ছিল।
তবে প্রসঙ্গত বলা যায় সিঙ্গুরে টাটার ন্যানো কারখানা করার কথা ছিল। তবে তৃণমূলের বিরোধিতার জেরে সেই কারখানা শেষ পর্যন্ত সরে যেতে বাধ্য় হয়।
এদিকে বিজেপির তরফ থেকে এনিয়ে বিরোধিতা করে কোনও মন্তব্যের কথা শোনা যায়নি। এদিকে সোমবার FAL -এর উদ্বোধন করা হয়েছে। এটা ভাদোদারাতে তৈরি করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও স্প্যানিস প্রেসিডেন্ট পেদ্রো স্যানচেজ উদ্বোধন করেছেন।
চুক্তি অনুসারে ৪০টি ইউনিট তৈরি করা হবে। TASL ও FAL এই দুই সংস্থা এই এয়ারক্রাফট তৈরি করবে। এর মধ্য়ে ১৬টি এয়ারক্রাফটকে ভারতীয় বায়ুসেনার কাছে পাঠানো হবে।
এদিকে সম্প্রতি প্রয়াত হয়েছেন রতন টাটা। দেশের শিল্প দুনিয়ায় কার্যত নক্ষত্র পতন।
তাঁর সম্পর্কে অজানা নানা কথা সামনে আসছে। রতন টাটার মৃত্যুর পরই টাটা ট্রাস্টের চেয়ারম্যান পদে নিযুক্ত করা হয় নোয়েল টাটাকে। টাটা ট্রাস্ট হল সেই সংস্থা, যা পরোক্ষে টাটা গোষ্ঠীর ১৬,৫০০ কোটির ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করে।
তথ্য বলছে, ২০১১ সালে যখন টাটা গোষ্ঠীতে রতন টাটার উত্তরসূরি নিয়োগের জন্য একাধিক ব্যক্তির ইন্টারভিউ করা হয়েছিল, সেই তালিকায় নোয়েল টাটাও ছিলেন।
সংশ্লিষ্ট বইটির নাম - 'রতন টাটা আ লাইফ'। ইংরেজি ভাষায় রচিত এই বইয়ের লেখক - থমাস ম্যাথিউ। বইটটির প্রকাশনার দায়িত্ব সামলেছে 'হার্পারকোলিন্স পাবলিশার্স'।
এই বইয়ের প্রকাশ করা তথ্য়াবলী অনুসারে, ২০১১ সালে তাঁর উত্তসূরি নির্বাচনের প্রক্রিয়া থেকে রতন টাটা নিজেকে দূরে রেখেছিলেন। যদিও অনেকেই চেয়েছিলেন রতন টাটা নিজে সেই কমিটিতে থাকুন। এমনকী, অনেকেরই ধারণা ছিল - এর জন্য তাঁকে ভবিষ্যকে আফশোস করতে হতে পারে।