বর্ষার মরশুমে এক মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে গেল পড়শি রাজ্য বিহারে। শোন নদীর জলে তলিয়ে গেল একই পরিবারের সাত নাবালক! তাদের মধ্যে পাঁচজনের দেহ ইতিমধ্যেই উদ্ধার করেছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, যে সাত নাবালক নদীতে তলিয়ে যায়, তারা সকলে একই আদিবাসী পরিবারের সন্তান। ঘটনাটি ঘটেছে বিহারের রোহতাস জেলার রোহতাস থানার অন্তর্গত টুম্বা গ্রামে।
এই এলাকা দিয়েই বয়ে গিয়েছে শোন নদী। ভরা বর্ষায় সেই নদী ফুলে ফেঁপে উঠেছে। সেই নদীতেই তলিয়ে যায় ওই সাতজন।
ঘটনা জানাজানি হতেই উদ্ধার কাজ শুরু করা হয়। শেষ পাওয়া খবর অনুসারে, ইতিমধ্য়েই সাতজনের মধ্যে পাঁচ নাবালকের দেহ নদী থেকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। স্থানীয়রাই দেহগুলি নদীর গভীর থেকে উদ্ধার করেন। তবে, আরও দুই নাবালকের সন্ধান পাওয়া যায়নি। তাই, তল্লাশি অভিযান জারি রাখা হয়েছে।
উদ্ধার কাজে স্থানীয় বাসিন্দাদের সাহায্য করতে ভোজপুর জেলা থেকে রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী (এসডিআরএফ)-এর প্রশিক্ষিত ডুবুরিদের একটি দল ঘটনাস্থলে পাঠানো হচ্ছে।
জেলাশাসক উদিতা সিং জানিয়েছেন, যে সাত নাবালক শোন নদীতে তলিয়ে যায়, তাদের বয়স ৮ থেকে ১২ বছরের মধ্যে। ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন তিনি।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, ওই সাত নাবালকই সংশ্লিষ্ট গ্রামের বাসিন্দা একটি পরিবারের সন্তান। ওই পরিবারের কর্তার নাম কৃষ্ণ গোঁর। তাঁর মেয়ে রাঁচিতে থাকেন। সম্প্রতি তিনি তাঁর গ্রামের বাড়িতে আসেন।
এলাকাবাসী জানিয়েছেন, যে পাঁচ নাবালকের দেহ নদী থেকে উদ্ধার করা হয়েছে, তাদের মধ্যে কৃষ্ণর এই মেয়ের চার ছেলেও রয়েছে! তাদের কাউকেই বাঁচানো সম্ভব হয়নি।
ঘটনা প্রসঙ্গে আরও জানা গিয়েছে, ওই সাত নাবালক একসঙ্গে নদীতে নেমেছিল স্নান করতে। সেই সময়েই তাদের মধ্যে একজন নদীর গভীরে চলে যায় এবং ক্রমশ তলিয়ে যেতে থাকে।
তার চিৎকার শুনে, তাকে বাঁচাতে বাকিরাও সেদিকে এগিয়ে যায়। ফলত, তারাও সেখানেই একে একে ডুবে যায়। এই ঘটনার কথা চাউর হতেই স্থানীয় প্রশাসন ও থানায় খবর যায়। পুলিশ ও প্রশাসনের প্রতিনিধিরা সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে পৌঁছন।
ইতিমধ্যে স্থানীয় মৎস্যজীবীরা নদীতে নেমে ডুবে যাওয়া নাবালকদের উদ্ধারের চেষ্টা করেন। তাঁরাই প্রাথমিকভাবে পাঁচটি দেহ উদ্ধার করেন। কিন্তু, বাকি দুই নাবালকের কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি। তবে, তাদের জীবিত থাকার সম্ভাবনা যে অত্যন্ত ক্ষীণ, এই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সকলেই একপ্রকার নিশ্চিত।
পাশাপাশি, স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে আরও একটি বিষয় নিয়ে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। তাঁরা কেউই জানেন না, ওই সাত নাবালক যখন নদীতে স্নান করতে নেমেছিল, তখন তাদের সঙ্গে আরও কোনও শিশু বা কিশোর ছিল কিনা! সেক্ষেত্রে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা করছেন তাঁরা।