দিনরাত পরিশ্রম করেও পড়ার সুযোগ মেলেনি স্বপ্নের প্রতিষ্ঠানে। এবার সেখানেই গেস্ট লেকচারার হিসেবে ডাক পড়ল তাঁর। শারন হেগড়ের গল্পটা এমনই অভিনব। বিনিয়োগের বিষয়ে পরামর্শদাতা হিসেবে শারনের বেশ খ্যাতি রয়েছে। সারা বিশ্ব জুড়ে অনেকেই এখন তাঁর পরামর্শ শোনার অপেক্ষায় থাকে। সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর ফলোয়ারের সংখ্যা তিন মিলিয়নেরও বেশি।
ইনস্টাগ্রামে একটি পোস্টে তাঁর সাম্প্রতিক অভিজ্ঞতার কথা বলেন শারন। তিন বছর আগে আইআইএম-এ ভর্তির হওয়ার জন্য দিনরাত এক করে পড়াশোনা করতেন তিনি। মাত্র ৫০০০ টাকায় ব্যাঙ্গালোরের ইন্দিরানগরে থেকে চলত এই কোর্সের পড়াশোনা। লক্ষ্য ছিল আহমেদাবাদ, ব্যাঙ্গালোর অথবা কলকাতার মধ্যে যেকোনও একটি আইআইএম-এ ভর্তি হওয়া। ইন্টার্নশিপ, পড়াশোনা, সপ্তাহ গেলে পরীক্ষা দেওয়া, তাঁর তরফে চেষ্টা কম ছিল না। ক্যাটের পরীক্ষায় ৯৮ শতাংশ পার্সেন্টাইল পেয়েছিলেন। কিন্তু ভাগ্য প্রসন্ন হয়নি সেবার। ‘বেটার লাক নেক্সট টাইম’ জানিয়ে তাঁকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। এমন ঘটনায় ভেঙে পড়েননি বা দমে যাননি শারন। আইআইএম-এ না হওয়ায় আমেরিকার এমবিএ কলেজে ভর্তির চেষ্টা শুরু করেন। শেষে কলম্বিয়াতে পেয়েও ছেড়ে দেন সে সুযোগ।
শারন লিখছেন, এরপর কী করেছেন, সেটা অনেকে ভাবলেও চমকে যাবে। এ সব কিছু ছেড়ে ছুঁড়ে তিনি চলে আসেন কন্টেন্ট ক্রিয়েশনের কাজে। সেখানেই এমন খ্যাতি শারনের। প্রাক্তন ম্যানেজমেন্ট কনসালটেন্ট কথায়, এক বছর আগে পর্যন্ত তাঁর মনে হত, আইআইএম-এর জন্য বৃথা সময় নষ্ট করেছিলেন সেবার। কারণটা ছিল তখনের দিনরাত পরিশ্রম ও অত কিছু করেও সুযোগ না পাওয়া। কিন্তু এদিন স্টেজে ওঠার পর তাঁর উপলব্ধি, যা হয় ভালোর জন্যই হয়। ১০০ জনেরও বেশি মহিলা উদ্যেক্তাদের সামনে এদিন বক্তব্য রাখতে হয় শারনকে। কথা বলার সময় তাঁর হাত রীতিমত ঘেমে যাচ্ছিল। তিন বছর আগে যেখানে অল্পের জন্য পড়ার সুযোগ হয়নি, সেখানেই আজ তাঁকে বক্তা হিসেবে পরামর্শ দিচ্ছেন তিনি। শারনের কথায়, এদিন যেন একটা বৃত্ত সম্পূর্ণ হল। কঠিন পরিশ্রম করলে আজ না হোক কাল কোনও না কোনওভাবে সাফল্য মিলবেই। সবার কাছে এদিন ইনস্টাগ্রাম পোস্টে সেই বার্তাই পৌঁছে দেন শারন। আইআইএম ব্যাঙ্গালোর ক্যাম্পাসের সামনে দাঁড়িয়ে একটি ছবিও পোস্ট করেন তরুণ বক্তা।