রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে ভারত সরকারের অবস্থানের প্রবল বিরোধিতা করেছিলেন তিনি। এতদিন বাদে কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুরের মনে হয়েছে, সেই অবস্থান ভুল ছিল। শশী বলছেন, ‘যুদ্ধের প্রথম দিকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নিরপেক্ষ অবস্থানের বিরোধিতা করে চরম ভুল করেছিলেন তিনি। সেকথা মনে পড়লে মাথা নত হয়ে যায়।’ থারুরের এই নয়া মোদী প্রশংসা শোরগোল ফেলে দিয়েছে কংগ্রেস শিবিরে। অন্যদিকে, উচ্ছ্বাসিত গেরুয়া শিবিরে। তাদের নিশানায় বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী।
আরও পড়ুন -MEA: ‘গাজার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন!’ ইজরায়েলের হামলায় প্রতিক্রিয়া ভারতের
সম্প্রতি শশী থারুর ‘রাইসিনা ডায়ালগ’ নামে একটি আলোচনা সভায় ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধে ভারতের নিরপেক্ষ থাকার প্রধানমন্ত্রী মোদীর সিদ্ধান্তকে প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, 'যুদ্ধ শুরুর সময় আমিই ইউক্রেনের উপর রাশিয়ার হানাদারি নিয়ে ভারতের নিরপেক্ষ ভূমিকার সমালোচনা করেছিলাম। তারপর থেকে আন্তর্জাতিক গতিপ্রকৃতি দেখে নিজেই লজ্জিত বোধ করি সেদিনের আচরণের জন্য। সেদিন বিরোধিতার জন্য নিজেকেই ঢোঁক গিলে নিতে হচ্ছে।' থারুরের এই মন্তব্যের পরেই ময়দানে নেমে পড়েছে বিজেপি। তারা বলেছে, দলীয় নেতার এই কথায় নিশ্চই লজ্জায় রাহুল গান্ধীর মুখ রাঙা হয়ে উঠছে। বিজেপি নেতাদের কথায়, এটা দেখে ভাল লাগছে যে, কংগ্রেসের নেতারা প্রধানমন্ত্রীর বৈশ্বিক দৃষ্টিভঙ্গিকে মান্যতা দিচ্ছেন। স্বীকার করে নিচ্ছেন। কেন্দ্রের বিদেশনীতিকে প্রশংসা করার জন্য শশী থারুরের বিরুদ্ধে তাঁর দল কোনও ব্যবস্থা নেবে না বলেও আশা বিজেপি নেতাদের।
কংগ্রেসকে প্রথম তোপ দাগেন বিজেপি নেতা তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রাজীব চন্দ্রশেখর। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী মোদীর দেশ ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কের দূরদৃষ্টি বিরোধী দলের নেতারাও প্রশংসা করছেন, স্বীকার করছেন। রাহুল গান্ধী, পি চিদম্বরমের মতো কংগ্রেস নেতা ও রঘুরাম রাজনের মতো লোকেরাও এখন তাঁদের কথা নিজেরাই গিলে নিচ্ছেন। অর্থনীতি, ইউপিআই, উৎপাদন শিল্প এবং আরও বহু কিছুতে দেশের অবস্থান নিয়ে তাঁরা অতীতের মন্তব্য নিয়ে নিজেরাই লজ্জিত। বিজেপি নেতা সুধাংশু ত্রিবেদী বলেছেন, 'কংগ্রেসের প্রবীণ নেতা শশী থারুরের রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতে ভারতের অবস্থান নিয়ে মন্তব্য প্রধানমন্ত্রীর বৈশ্বিক কূটনীতির স্বাভাবিক প্রকাশ।শশী থারুর রাইসিনা ডায়ালগে যা বলেছেন, তা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে ভারতের অসাধারণ বৈশ্বিক কূটনৈতিক নীতির স্বাভাবিক ফল। এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ যে কেউ এটি বুঝতে পারবেন। মোদী একমাত্র নেতা যিনি রাশিয়া এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট উভয়ের সঙ্গে দুই সপ্তাহের ব্যবধানে কথা বলেছেন এবং উভয়ের কাছ থেকে সমান গুরুত্ব পেয়েছেন।'
আরও পড়ুন -MEA: ‘গাজার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন!’ ইজরায়েলের হামলায় প্রতিক্রিয়া ভারতের
অন্যদিকে বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য বলেন, 'থারুরের একের পর এক মন্তব্যে একটা বিষয় পরিষ্কার যে, কংগ্রেসের ভিতরে বিদ্রোহের ছুরির ফলা বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে। যা দেখে বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী মুখ লাল হয়ে যেতে পারে। কংগ্রেস এবার হয়তো দলীয়ভাবে জানাবে শশী থারুর যা বলেছেন, তা তাঁর ব্যক্তিগত মত। দলের অবস্থান নয়। যদিও সংসদে এই বিষয়ক আলোচনায় থারুরকেই দল দায়িত্ব দিয়েছিল।' এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কংগ্রেস নেতা বলেন, দলীয় নেতারা জানিয়েছেন যে থারুরের মন্তব্যে যে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে তা এটিই প্রথম নয়।