বর্তমানে ভারতে আছেন বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে এখানে বসে তিনি বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে যেভাবে আক্রমণ করছেন, তা নাকি দিল্লি পছন্দ করছে না। তবে তা সত্ত্বেও আজ ফের মুখ খুললেন শেখ হাসিনা। জামাতে ইসলামিকে তোপ দেগেছেন আওয়ামি লিগ নেত্রী। উল্লেখ্য, আজ বাংলাদেশে পালিত হচ্ছে বুদ্ধিজীবী দিবস। ১৯১৭ সালে আজকের দিনে বাংলাদেশের শিক্ষত বিশিষ্টজনদের হত্যা করেছিল পাক বাহিনী। সেই উপলক্ষে আজকের দিনটি বুদ্ধিজীবী দিবস হিসেবে পালন করা হয়। আর সেই উপলক্ষেই দীর্ঘ পোস্ট করেন হাসিনা। তাতে লেখেন, 'জঙ্গিদের উর্বর লীলাভূমিতে পরিণত করা হয়েছে দেশকে।' (আরও পড়ুন: বাংলাদেশ দখলের ছক কষা হচ্ছে? বিস্ফোরক ওপার বাংলা, ইসকন নিয়ে গুরুতর অভিযোগ)
আরও পড়ুন: লাউডস্পিকার বাজিয়ে নিময় ভঙ্গের অভিযোগ, সম্ভলের মসজিদের ইমামকে ২ লাখ জরিমানা
নিজের দীর্ঘ সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে শেখ হাসিনা লেখেন, 'আজ ১৪ ডিসেম্বর, শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস। ১৯৭১ সালের এদিনে বর্বর পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের এদেশীয় দোসর রাজাকার, আল বদর, আল-শামস বাহিনী বাংলার শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীদের নির্মমভাবে হত্যা করে। হানাদার পাকিস্তানি বাহিনী তাদের পরাজয় আসন্ন জেনে বাঙালি জাতিকে মেধাশূন্য করার লক্ষ্যে বুদ্ধিজীবী নিধনের এই পরিকল্পনা করে। মুক্তিযুদ্ধের শেষলগ্নে ১০ থেকে ১৪ ডিসেম্বরের মধ্যে আল-বদর বাহিনী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে শিক্ষক, সাংবাদিক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, আইনজীবী, সংস্কৃতি কর্মীসহ বিভিন্ন পেশার বরেণ্য ব্যক্তিদের অপহরণ করে ঢাকার মোহাম্মদপুর ফিজিক্যাল ট্রেনিং ইনস্টিটিউটে স্থাপিত আল-বদর বাহিনীর ক্যাম্পে নিয়ে যায়। ১৪ ডিসেম্বরে নিদারুণ যন্ত্রণা দিয়ে রায়েরবাজার ও মিরপুরে তাদের হত্যা করা হয়।' (আরও পড়ুন: লাদাখের ডেপস্যাঙে কি সব প্যাট্রোলিং পয়েন্টেই টহল দিতে পারবে ভারতীয় সেনা?)
আরও পড়ুন: কানাডায় খুন ৩ ভারতীয় পড়ুয়া, সতর্কতা জারি দিল্লির, খলিস্তান ইস্যুতে 'নয়া বিতর্ক'
আরও পড়ুন: 'বাংলাদেশের এক ইঞ্চি মাটিতেও...', ভারতকে কি ভয় পাচ্ছে জামাতে ইসলামি?
এরপর শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে হাসিনা লেখেন, 'শহিদ বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে রয়েছেন অধ্যাপক মুনীর চৌধুরী, ডা. আলিম চৌধুরী, ডা. ফজলের রাব্বি, ডা. মোহাম্মদ মর্তুজা, অধ্যাপক মুনিরুজ্জামান, অধ্যাপক গোবিন্দ চন্দ্র(জিসি) দেব, অধ্যাপক জ্যোতির্ময় গুহ ঠাকুরতা, অধ্যাপক সন্তোষ ভট্টাচার্য, অধ্যাপক গিয়াসউদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী, অধ্যাপক আনোয়ার পাশা, সাংবাদিক সিরাজুদ্দিন হোসেন, শহিদুল্লাহ কায়সার, খোন্দকার আবু তালেব, নিজামুদ্দিন আহমদ, এসএ মান্নান (লাডু ভাই), গোলাম মোস্তফা, সৈয়দ নাজমুল হক, সেলিনা পারভিন, আবুল বাশার চৌধুরী, মহম্মদ আখতার সহ আরও অনেকে।' (আরও পড়ুন: ভারতের থেকে 'মোস্ট ফেভারড নেশন'-এর তকমা ছিনিয়ে নিল সুইৎজারল্যান্ড! তবে কেন?)
আরও পড়ুন: আরাকান আর্মির দখলে রাখাইন, 'রোহিঙ্গা' নামক মাথাব্যথা কীভাবে দূর করবেন ইউনুস?
জামাতকে তোপ দেগে বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এরপর বলেন, 'জাতির এক গভীর সংকটময় মুহূর্তে এ বছর শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত হচ্ছে। স্বাধীনতাবিরোধী এবং বুদ্ধিজীবী নিধনকারীদের দোসররা দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে নির্বাচিত আওয়ামি লিগ সরকারকে হটিয়ে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে সাধারণ মানুষের উপর অমানবিক নিপীড়ন-নির্যাতন চালাচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে জলাঞ্জলি দিয়ে জামাতে ইসলামীসহ ১৯৭১-এর পরাজিত শক্তিকে পুনর্বাসন করছে। পরিকল্পিতভাবে মুক্তিযুদ্ধের স্মারকচিহ্ন ধ্বংস করেছে। প্রিয় দেশকে জঙ্গিদের উর্বর লীলাভূমিতে পরিণত করছে। স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তির এসব অপকর্ম বীর বাঙালি কোনও দিন মেনে নেয়নি, ভবিষ্যতেও নেবে না। এদের দাঁতভাঙ্গা জবাব দেওয়ার জন্য আমি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।'