বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আক্রমণাত্মক শেখ হাসিনা। রিপোর্ট অনুযায়ী, সম্প্রতি আমেরিকার নিউ ইয়র্কে আওয়ামি লিগের একটি সমাবেশে ভার্চুয়াল বক্তৃতা রেখেছিলেন শেখ হাসিনা। সেই সময়ই শেখ হাসিনা দাবি করেন, বাবা শেখ মুজিবুর রহমানের মতো তাঁকেও খতম করার চক্রান্ত করা হচ্ছিল। পাশাপাশি বাংলাদেশের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুসকে 'গণহত্যার মূলচক্রী' আখ্যা দিয়ে শেখ হাসিনা অভিযোগ করেন, বাংলাদেশে মন্দির, গির্জায় হামলার ঘটনায় বর্তমান শাসকই 'দোষী'। রিপোর্ট অনুযায়ী, শেখ হাসিনা নাকি বলেন, 'আমার বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ তোলা হচ্ছে আজ। যদিও সত্যি কথাটা হল, সমন্বয়কারী ছাত্রদের সঙ্গে মিলে, পরিকল্পিত ভাবে মহম্মদ ইউনুসই গণহত্যায় লিপ্ত হয়েছেন। ওঁরাই মূলচক্রী। লন্ডন থেকে তারেক রহমান (বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার পুত্র) পর্যন্ত বলেছেন, এভাবে মৃত্যু ঘটে চললে এই সরকার টিকবে না।' (আরও পড়ুন: কোন ৩ নীতি মেনে চিনের সঙ্গে আলোচনার টেবিলে ভারত? জানালেন জয়শংকর)
আরও পড়ুন: সম্ভলে যেতে চান রাহুল-প্রিয়াঙ্কা, 'বহিরাগত' ভাই-বোনকে আটকাতে কড়া প্রশাসন
দেশত্যাগের প্রেক্ষাপট নিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, 'নির্বিচারে যখন মানুষজনকে হত্যা করা হচ্ছিল, আমি দেশছাড়ার সিদ্ধান্ত নিই। আমার ক্ষমতায় থাকার দরকার নেই। নিরাপত্তাকর্মীরা যদি গুলি চালাতেন, গণভবনে অনেকে মারা যেতেন। আমি সেটা চাইনি। সশস্ত্র ভিড়কে গণভবনে লেলিয়ে দেওয়া হয়েছিল। বাবা শেখ মুজিবুর রহমানের মতোল আমাকেও হত্যার ছক কষা হয়েছিল। সেই অবস্থায় আমি ২৫-৩০ মিনিটের মধ্যে বেরিয়ে যাই। নিরাপত্তাকর্মীদের বলেছিলাম, তারা যাতে গুলি না চালায়।' বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের ওপর হওয়া অত্যাচার প্রসঙ্গে হাসিনা বলেন, 'আজ শিক্ষক, পুলিশ সকলকে ধরে ধরে মারা হচ্ছে, তাঁদের উপর হামলা হচ্ছে। হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানদের নিশানা করা হচ্ছে দেশে। গির্জা, মন্দিরে হামলা চালানো হয়েছে। কেন বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের এভাবে নিশানা করা হচ্ছে?'
প্রসঙ্গত, বিগত বেশ কয়েকদিন ধরেই বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর অত্যাচারের অভিযোগ উঠে আসছে। হাসিনার বিদায়ের পর থেকেই মন্দির থেকে শুরু করে হিন্দুদের বাড়িঘরে ভাঙচুর চলেছে। সেই সময় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা থেকে বিএনপি-জামাত দেখেছিল 'আওয়ামি লিগের ষড়যন্ত্র'। তবে কয়েক মাস যাওয়র পর সেই দেশে হিন্দুদের অবস্থা যেন আরও খারাপ। ধর্মের নামে চাকরি থেকে জোর করে পদত্যাগ করানো হচ্ছে সংখ্যালঘুদের। অনেককে ধর্মান্তরিত করানোর অভিযোগও উঠেছে। এরই মাঝে চট্টগ্রামে হিন্দু এবং বৌদ্ধদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। সংখ্যালঘু অত্যাচারে সেখানে অভিযুক্ত খোদ সেনা। হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাস প্রভুর গ্রেফতারি ঘিরে আরও উত্তাল পরিস্থিতি। এদিকে সেখানে ইসকনকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে বাংলাদেশের কট্টরপন্থীরা পথে নেমেছে। জুলাই বিল্পবের ছাত্র নেতারাও ইসকনের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। এরই মাঝে ইসকনকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে সম্প্রতি বাংলাদেশ হাইকোর্টে মামলা হলে তা খারিজ হয়ে যায়। তবে সেই মামলা খারিজ হয়ে যায়। এখন বল ইউনুস সরকারেরই কোর্টে।