দায়িত্ব পাওয়ার পরে বঙ্গভবনের দরবার হল থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি সরিয়ে দিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের নবনিযুক্ত উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। অন্তর্বর্তী সরকারের নতুন উপদেষ্টা মাহফুজ আলম সোমবার তাঁর ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে একটি পোস্টে একথা জানিয়েছেন। এনিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছেন বাংলাদেশের নয়া উপদেষ্টা। দেশের প্রথম রাষ্ট্রপতির ছবি এভাবে সরিয়ে দেওয়া সংবিধানের অসম্মান করা বলে সমালোচনা করেছেন অনেকেই।
আরও পড়ুন: ‘বঙ্গবন্ধু জাতির পিতা নন, নতুন করে ইতিহাস লেখা হবে’ বাংলাদেশের উপদেষ্টা নাহিদ
এর আগে গত রবিবার অন্তর্বর্তী সরকারের নতুন তিন উপদেষ্টা বঙ্গভবনের দরবার হলে শপথ গ্রহণ করেছিলেন। সেই সময় তাদের পিছনের দেওয়ালে শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি দেখা গিয়েছিল। তানিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ। পাশাপাশি সোশ্যালমাধ্যমেও অনেকে এ নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিলেন। এরপরেই দরবার হল থেকে সরিয়ে ফেলা হল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি।
ছবি সরানোর পর মাহফুজ আলম নিজের ফেসবুক পোস্টে লেখেন, ‘এটা আমাদের জন্য লজ্জার যে আমরা ৫ অগস্টের পর বঙ্গভবন থেকে তাঁর ছবি সরাতে পারিনি। এর জন্য আমরা সকলের কাছে ক্ষমা চাইছি।’ তবে এভাবে মুজিবের ছবি সরানো নিয়ে পাকিস্তানি মতাদর্শ বলে সমালোচনা করেছেন অনেক রাজনীতিবিদ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক রাজনৈতিক মতে, দরবার হল থেকে মুজিবের ছবি সরিয়ে দেওয়ার ফলে সংবিধান পরিবর্তন এবং ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে মুছে ফেলার চেষ্টা করা হচ্ছে। এটা পাকিস্তানি মতাদর্শের প্রচার।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী মুজিবুরের ছবি রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার, প্রধান বিচারপতির কার্যালয় এবং সেইসঙ্গে সমস্ত সরকারি ও আধা-সরকারি অফিসে রাখার নির্দেশ রয়েছে। বর্তমান সংবিধান প্রণেতাদের একজন কামাল হোসেন বলেন, ‘কোনও ব্যক্তির কলমের জোরে সংবিধান পরিবর্তন করা উচিত নয়। জনগণের মতামতকে বিবেচনায় রেখেই পরিবর্তন করা উচিত।’
এদিকে, বিএনপি আশঙ্কা প্রকাশ করছে যে অন্তর্বর্তী সরকার তাদের মেয়াদ বাড়ানোর কথা ভাবছে। তাই বিএনপি মহম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন সরকারকে মনে করিয়ে দিয়েছে যে সুষ্ঠু নির্বাচন পরিচালনার পর অবিলম্বে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করাই হল তাদের প্রাথমিক দায়িত্ব। দ্রুত নির্বাচনের ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়েছে বিএনপি।