কেরালায় হানা ভয়াবহ শিগেলা ব্যাক্টেরিয়ার, কিশোরের মৃত্যুর পরে অসুস্থ আরও ২০ জন

শিগেলোসিস একটি সংক্রামক রোগ যা শিগেলা ব্যাক্টেরিয়া থেকে উৎপন্ন হয়। রোগের উপসর্গ হিসেবে পেটব্যথা, ডায়েরিয়া, জ্বর এবং গা-বমি ভাব দেখা দেয়। জল ও খাবারের মাধ্যমে সংক্রমণ ছড়ায়।

কোঝিকোড়ে শিগেলা ব্যাক্টেরিয়া সংক্রমণে ১১ বছরের কিশোরের মৃত্যুতে আতঙ্ক ছড়াল। 

শনিবার কোঝিকোড়ে শিগেলা ব্যাক্টেরিয়া সংক্রমণে ১১ বছরের কিশোরের মৃত্যুতে আতঙ্ক ছড়াল। প্রশাসনের তরফে উত্তর কেরালায় জারি হয়েছে চূড়ান্ত সতর্কতা, জানিয়েছেন জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিক ডক্টর জয়শ্রী। 

তিনি জানিয়েছেন, দুই দিন আগে ওই কিশোরের মৃত্যুর পরে আরও ২০ জনের মধ্যে ওই রোগের উপসর্গ হিসেবে জ্বর ও মৃদু ডায়েরিয়া দেখা দিয়েছে। অসুস্থদের হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছে। তাঁদের অধিকাংশই মৃত কিশোরের সংস্পর্শে এসেছিলেন বলে জানা গিয়েছে।

রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী কে কে শৈলজা জানিয়েছেন, ওই অঞ্চলে দুই দিনের মধ্যে স্বাস্থ্য শিবির গড়া হবে এবং সংক্রমণের মূল উৎস খোঁজার চেষ্টা করা হবে। মন্ত্রীরদাবি, স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা জল ও খাবারের মাধ্যমে সংক্রমণ ছড়িয়েছে বলে জানিয়েছেন। এই কারণে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরিচ্ছন্ন পরিবেশ বজায় রাখায় জোর দিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। স্বাস্থ্য দফতরের উদ্যোগে শুক্রবার এলাকার সমস্ত জলাশয় ক্লোরিনের সাহায্যে শোধন করা হয়েছে।

২০১৯ সালে কিঝপায়ুর এলাকার ওয়েস্ট লোয়ার প্রাইমারি স্কুলের ৪০টি শিশু বমি ভাব ও ডায়েরিয়ার উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভরতি হয়। তাদের মল পরীক্ষা করে শিগেলা ব্যাক্টেরিয়ার অস্তিত্ব পাওয়া যায়। পরে এক শিশুর বাড়ির কাছে জলাশয় থেকে ব্যাক্টেরিয়া সংক্রমণ হয়েছে বলে জানান স্বাস্থ্য আধিকারিকরা। 

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, শিগেলোসিস একটি সংক্রামক রোগ যা শিগেলা ব্যাক্টেরিয়া থেকে উৎপন্ন হয়। রোগের উপসর্গ হিসেবে পেটব্যথা, ডায়েরিয়া, জ্বর এবং গা-বমি ভাব দেখা দেয়। বিশ্বের সর্বত্র এই সংক্রমণ দেখা দিলেও উন্নতশীল দেশগুলিতে এর প্রাদুর্ভাব বেশি। বিশেষ করে স্কুল, ডে কেয়ার সেন্টার, নার্সিং হোম বা যে সব জায়গায় নিকাশি ব্যবস্থা অপ্রতুল, সেখানে এই ব্যাক্টেরিয়ার প্রকোপ বৃদ্ধি পায়। কয়েকটি ক্ষেত্রে শিগেলা ব্যাক্টেরিয়ার দ্বারা সংক্রমিত ব্যক্তির মধ্যে কোনও উপসর্গ দেখা না দিলেও তা ছোঁয়াচে হয়। 

কোঝিকোড় সংলগ্ন অঞ্চলে প্রতিটি রোগীকে পরীক্ষা করে দ্রুত রিপোর্ট জমা দিতে সমবায় স্বাস্থ্য বিভাগকে নির্দেশ দিয়েছেন স্বাস্থ্য দফতর।

উল্লেখ্য, দুই বছর আগে কেরালার এই অঞ্চলে মারাত্মকনিপা ভাইরাস সংক্রমণ দেখা দিয়েছিল। তবে সে বার এলাকার বাইরে রোগ ছড়ায়নি, যদিও সংক্রমণে ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছিল।