প্রথম থেকেই কংগ্রেস অভিযোগ করছিল, বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের অঙ্গুলিহেলনে মধ্যপ্রদেশে তাদের সরকার ফেলা হয়েছে। এবার কংগ্রেসের তরফে একটি অডিয়ো টেপ প্রকাশ করে দাবি করা হল, তাঁদের অভিযোগ মেনে নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান। তিনি স্বীকার করেছেন, বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের নির্দেশে কংগ্রেস সরকারকে ফেলা হয়েছে।
কংগ্রেসের দাবি, রবিবার ইন্দোরে বিজেপি নেতা-কর্মীদের সঙ্গে বৈঠকের সময় শিবরাজ সেই কথা স্বীকার করেছেন (অডিয়ো টেপের সত্যতা যাচাই করেনি হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা)। ভাষণের সময় শিবরাজকে বলতেে শোনা যায়, 'কিন্তু, একটা প্রশ্ন আছে। কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব সিদ্ধান্ত নিয়েছিল যে এই (মধ্যপ্রদেশের কংগ্রেস) সরকার পড়বে। এই (সরকার) রাজ্যকে ধ্বংস করে দিত।'
তুলসী শিলাবতকে লক্ষ্য করে মুধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীকে বলতে শোনা যায়, ‘উনি ওখানেও (কংগ্রেস সরকারে) মন্ত্রী ছিলেন। আমি পূর্ণ বিশ্বাস এবং সততার সঙ্গে বলছি যে কংগ্রেস বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া এবং তুলসী শিলাবতরা করেননি। উনি (তুলসী) নিজের মন্ত্রিত্ব ছেড়ে দিয়েছেন, কারণ উনি ব্যথিত ছিলেন। লোকজন তো পঞ্চায়েত প্রধানের পদও ছাড়েন না।’ মধ্যপ্রদেশ নাটকের সময় কংগ্রেস থেকে ইস্তফা দিয়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া তুলসীকে উপনির্বাচনে জেতানোর জন্য দলীয় কর্মীরা যাতে ঝাঁপিয়ে পড়েন, সেজন্য ‘ভোকাল টনিক’-ও দেন শিবরাজ।
কিন্তু সেসব ছাপিয়ে যাবতীয় বিতর্কের কেন্দ্রে উঠে এসেছে শিবরাজের সেই 'মন্তব্য'। সেই অডিয়ো টেপকে হাতিয়ার করে বিজেপির বিরুদ্ধে আবারও সুর চড়িয়েছে কংগ্রেস। মধ্যপ্রদেশের কংগ্রেস সভাপতি তথা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কমল নাথ বলেন, ‘আমি প্রথমদিন থেকে বলছি, প্রলোভনের খেলায় বিজেপি আমার সরকারকে ফেলে দিয়েছে। যে সরকারের পক্ষে জনগণের রায় ছিল। কারণ (কংগ্রেস) সরকার কৃষকদের ঋণ মকুব করে দিচ্ছিল, যুব প্রজন্মকে কর্মসংস্থান দিচ্ছিল, নারী সম্মান রক্ষা করছিল, মাফিয়াদের বিরুদ্ধে প্রচার চালাচ্ছিল এবং রাজ্যে বিনিয়োগ নিয়ে আসছিল। বিজেপি জানত, কংগ্রেস সরকারের এই কাজগুলির ফলে তারা বহু বছর ক্ষমতায় ফিরতে পারবে না।এটা এখন পরিষ্কার এবং প্রতিষ্ঠিত যে আমার সরকারকে ফেলে দিতে কী ধরনের ষড়যন্ত্র হয়েছিল এবং কারা কারা যুক্ত ছিলেন।’
অডিয়ো টেপ হাতিয়ার করে আইনি পথে যাওয়ারও ইঙ্গিত দিয়েছে কংগ্রেস। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির মিডিয়া কো-অর্ডিনেটর নরেন্দ্র সালুজা জানান, আইন বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনার পর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করবে দল।
তবে বিষয়টি নিয়ে শিবরাজের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।