রোজের মতো এদিনও স্বামী প্রদীপ নাকাভার স্কুটারে চড়ে ওরলির কোলিভারাতে মাছ বিক্রি করে সেশন ডকের দিকে যাচ্ছিলেন কাবেরী নাকাভা। কথা ছিল সেশন ডক থেকে তাঁরা মাছ কিনবেন, পরের দিন তা বিক্রি করবেন। মাছ বিক্রি করেই সংসার চলে নাকাভাদের। ঘরে রয়েছে দুই সন্তান। এই পরিবারের ওপর বিপদের কালো মেঘ নিয়ে এল এক গাড়ি দুর্ঘটনা। সকালে স্বামীর স্কুটারে চড়ে কাবেরী যখন যাচ্ছিলেন, তখন তাঁদের স্কুটিতে পিছন থেকে ধাক্কা দেয় একটি বিএমডাব্লিউ। সেই বিএমডাব্লিউ চালাচ্ছিলেন শিবসেনার একনাথ শিন্ডে ক্যাম্পের নেতা রাজেশ শাহের ছেলে মিহির শাহ।
পুলিশের অনুমান, রাজেশ শাহের ছেলে মিহির গাড়ি চালানোর সময় মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন। ঘটনায় রাজেশ শাহ ও তাঁর গাড়ির চালক রাজর্ষী বিজাওয়াতকে হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। এদিকে, ধাক্কার ঘটনার পর থেকে পলাতক মিহির। মিহিরের খোঁজে পুলিশের ৪ টি টিম বেরিয়েছে। এদিকে, মিহিরের রক্ত পরীক্ষার রিপোর্ট আসার অপেক্ষায় পুলিশ। সেখান থেকেই স্পষ্ট হতে পারে যে, মিহির ঘটনার সময় মদ্যপ ছিলেন কি না। জানা গিয়েছে, দুর্ঘটনার সময় স্কুটারে ধাক্কার পর, স্কুটারে থাকা প্রদীপ নাকাভা আছড়ে পড়েন সেখান থেকে। অন্যদিকে, তাঁর স্ত্রী কাবেরীকে ওই বিএমডাব্লিউ গাড়ির চালক হিঁচড়তে হিঁচড়তে নিয়ে যায়। তারপর গুরুতর অবস্থায় কাবেরীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হলে, তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়।
জানা গিয়েছে, ওই দুর্ঘটনা ভোররাত ৫.৩০ মিনিটে হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে, প্রদীপ বলেন,'দুর্ঘটনাটি ঘটে সকাল ৫.৩০ টায়, গাড়িটি পেছন থেকে এসে স্কুটারে ধাক্কা মারে। আমি বাম দিকে পড়ে যাই, কিন্তু আমার স্ত্রীকে রাস্তা দিয়ে টেনে নিয়ে যাওয়া হয়।' শোকে বিহ্বল হয়ে পড়া স্ত্রী হারা প্রদীপ বলেন,'আমার দুই সন্তান আছে, আমি কী করব? এঁরা বড় বড় মানুষ, কেউ কিছু করবে না, আমরা কষ্ট পাব।' এই ঘটনা ভারতীয় ন্যায় সংহিতার আওতার ধারায় রেজিস্টার করা হয়েছে। হত্যা, দ্রুত গতিতে গাড়ি চালানো, প্রমাণ লোপাট সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। পুলিশ জানতে পেরেছে, গাড়ির রেজিস্টার করা রয়েছে মিহিরের নামে। পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে জানা যাচ্ছে, গতরাতে পানশালায় গিয়েছিলেন মিহির। গাড়ি প্রথমে চালাচ্ছিলেন চালকই। পরে সেখান থেকে তাঁকে সরিয়ে মিহির গাড়ি চালাতে থাকেন। মিহির গাড়ি চালাতেই এই দুর্ঘটনা ঘটে।