নোংরা ছড়াচ্ছে পায়রা, তাই তাদের মেরে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মানুষ। এই মাসের শুরুর দিকে একটি গণভোটে, জার্মানির লিমবুর্গ টাউনের বাসিন্দারা এলাকার সমস্ত পায়রাকে সরিয়ে ফেলার পক্ষে ভোট দিয়েছেন। তবে এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা হবে কি না, তা এখনও ঠিক করতে পারছেন না নগর প্রশাসনের কর্মকর্তারা। সিটি প্রশাসনের মুখপাত্র জোহানেস লাউবাচ বার্তা সংস্থা এপিকে জানিয়েছেন, এটি বাস্তবায়নের জন্য কোনও সময় নির্ধারণ করা হয়নি। এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের আগে আরও একবার পর্যালোচনা করা হবে।
গত বছরের নভেম্বরে এই একই কাণ্ড ঘটেছিল। সিটি কাউন্সিল লিমবুর্গে ক্রমবর্ধমান কবুতরের জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করতে একটি বাজপাখি নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন কর্মকর্তারা। বাজপাখিকে দিয়ে ঘাড় ভেঙ্গে পায়রাগুলোকে মেরে ফেলতে চেয়েছিলেন তাঁরা। তবে এই সিদ্ধান্তের পর প্রাণী অধিকার কর্মীরা বিক্ষোভ শুরু করেছিলেন, অন্যায়ের প্রতিবাদে অনলাইনে স্বাক্ষর অভিযান চালিয়েছিলেন, এর পরই গণভোটের আয়োজন করা হয়েছিল। এর গণভোট হয়েছে গত ৯ জুন। গণভোটের পর, লিমবুর্গের মেয়র মারিয়াস হ্যান বলেছিলেন যে শহরের লোকেরা সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে আগামী দুই বছরের মধ্যে পায়রা সংখ্যা কমিয়ে দেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: (‘বাংলাদেশি বংশদ্ভূত সংখ্যালঘু সম্প্রদায় কংগ্রেসকে ভোট দিয়েছে’, বিতর্কিত মন্তব্য হিমন্তের)
৭০০ পায়রার জীবন বিপন্ন
বার্তা সংস্থা ডিপিএর খবর অনুযায়ী, সাম্প্রতিক আদমশুমারিতে এই স্থানের পায়রার সংখ্যা প্রায় ৭০০। কিন্তু কয়েক বছর ধরে পায়রার সমস্যায় অতিষ্ঠ এ শহরের সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীরা। পাখির বিশৃঙ্খলায় বিরক্ত হয়ে লিমবুর্গের নিউমার্কেট কেন্দ্রীয় চত্বরের আশেপাশের বাসিন্দারা, রেস্টুরেন্টের মালিক এবং দোকানদাররা বেশ কিছু অভিযোগও করেছেন। সবটা সামাল দিতে, অবশেষে শুরু হয়েছিল পায়রার বিরুদ্ধে আইনি লড়াই। তবে গণভোটের ফলাফলে বিস্ময় প্রকাশ করছেন প্রাণী অধিকার কর্মীরা। এটিকে মৃত্যুদণ্ড বলেছেন তাঁরা। এর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও তুলেছেন।
এর আগে ২০১১ সালে, কাসেলের প্রশাসনিক আদালত পায়রা হত্যার মামলার রায়ও দিয়েছিল। লিম্বুর্গ এই আদালতের এখতিয়ারের অধীনে আসে। এই সিদ্ধান্তে বলা হয়েছিল, পায়রা নিঃশেষ করা হলে তা সাধারণ মানুষের উপর খুব একটা ভালো প্রভাব ফেলভে না। তখনও লাউবাচ স্পষ্টভাবে বলেছিলেন যে পায়রাগুলো আদৌ সকলের ক্ষতি করছে কিনা, তারা মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য হুমকি কিনা বা তাদের সংখ্যা এখন এতটাই বেড়েছে, যে তাদের প্রাণ কেড়ে নেওয়া উচিত কিনা তা আগে ভালো করে পর্যালোচনা করা গুরুত্বপূর্ণ। তাঁর আরও দাবি, এর বিষয়টি নিয়ে মেয়রের মতো নগর প্রতিনিধিসহ প্রশাসনিক কর্মকর্তাদেরও বিপাকে পড়তে হচ্ছে। তাঁদের অপমানজনক ও হুমকিমূলক ইমেইল, চিঠি পাঠানো হচ্ছে। ফোন কলের মাধ্যমেও হুমকি আসছে। কারণ, এই ক্ষেত্রে পায়রা প্রেমী সমাজকর্মীদের মনোভাব খুবই আগ্রাসী ভূমিকা নিয়েছে।