খেলাধুলা করে, আদরে কাটানোর দিনগুলিতে যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছেন মহিলা। নিজের যন্ত্রণাদায়ক শৈশবের কথা স্মরণ করে ওই মহিলা বলেন, ওশো সম্প্রদায়ের শিশুদের যৌন হয়রানি সাধারণ বিষয়। তাই ছয় বছর বয়স থেকেই তাঁকে যৌন অত্যাচার মেনে নিতে হয়েছে। বয়স না হলেও, অবাধ প্রেমের নামে, কীভাবে যৌন নিপীড়ন সহ্য করতে বাধ্য করা হয়েছিল তাঁকে, তা তিনি এদিন বিস্তারিত জানিয়েছেন।
দ্য টাইমস-এর সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে, বিখ্যাত দার্শনিক তথা ধর্মগুরু ওশোকে নিয়ে বিস্ফোরক দাবি করলেন ব্রিটেনে বসবাসকারী সরগম। নিজের ছোটবেলার কথা মনে করে, ৫৪ বছর বয়সী প্রেম সরগাম বলেছেন যে ওশোর জগতে শিশুদের যৌনতার সঙ্গে পরিচিতি, অত্যন্ত ভাল বলে মনে করা হত। ব্রিটেনে বসবাসকারী সরগম আরও বলেন যে তিনি ভারতীয় দার্শনিক ভগবান শ্রী রজনীশ ওরফে ওশোর অধীনে বড় হয়েছেন।
সরগম আরও প্রকাশ করেছেন যে ছয় বছর বয়স থেকেই তিনটি সন্ন্যাসী 'আশ্রমে' গুরুতর যৌন নির্যাতনের সম্মুখীন হয়েছেন তিনি। সরগমকে রজনীশের সন্ন্যাসী আধ্যাত্মিক আন্দোলন সম্পর্কে তাঁর বাবা-মা নিজেই জানিয়েছিলেন। মহিলার দাবি যে ওশোর দর্শন অনুযায়ী, প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষদের থেকে বাচ্চাদের নিয়মিত যৌনতা শেখা উচিত। তিনি আরও জানান যে 'সাত থেকে ১১ বছর বয়সের মধ্যে, আমার বন্ধুরা এবং আমি কমিউনিটিতে বসবাসকারী প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষদের সঙ্গে যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হতে বাধ্য হয়েছিলাম। আমরা তখন এটাও জানতাম যে এমনটা করা আসলে উচিত নয়, এটা ভুল।'
আরও পড়ুন: (Pakistani citizen: জাল নথি বানিয়ে বাংলাদেশি স্ত্রীর সঙ্গে ভারতে ১০ বছর ধরে বাস পাক নাগরিকের, ধৃত ৪)
এইভাবে ৫০ বারেরও বেশি ধর্ষণের শিকার মহিলা
সরগমের বাবা জ্ঞানার্জনের জন্য পুনে চলে আসার পরই সন্ন্যাসী রজনীশের সঙ্গে সরগমের জীবন যাত্রা শুরু হয়। সরগম এবং তাঁর মা ওশো সম্প্রদায়ে যোগ দেন। সরগমকে তাঁর নাম পরিবর্তন করতে হয়। কমলা রঙের পোশাক পরতে হতো তাঁদের। তাঁদের এমনই একটি ধারণা গ্রহণ করতে বাধ্য করা হয়েছিল, যেখানে শিশুদেরকেই তাদের বাবা মায়ের যৌন স্বাধীনতায় অন্যতম বাধা হিসাবে দেখা হতো।
সরগমকে পরে 'বোর্ডিং স্কুল' প্রোগ্রামে যোগ দেওয়ার নাম করে অন্য এক আশ্রমে পাঠানো হয়েছিল। শোষণ অব্যাহত ছিল। এরপর যখন তাঁর বয়স হয় ১২ বছর, সরগমকে আমেরিকায় পাঠানো হয়। সেখানে তিনি নিজের মায়ের সঙ্গে ওরেগনের একটি আশ্রমে থাকতেন। ততক্ষণে সরগম ৫০ বারের বেশি ধর্ষণের শিকার হয়ে গিয়েছেন।
আরও পড়ুন: (Murder to get free iPhone: ১.৫ লাখের আইফোন অর্ডার, টাকা না থাকায় ডেলিভারি বয়কে খুন করল ২ যুবক, ধৃত ১)
ওশো সম্প্রদায়ের উত্থান কীভাবে
১৯৭০-এর দশকে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল রজনীশ সম্প্রদায়, যা পরে ওশো সম্প্রদায় হিসাবে পরিচিত হয়েছিল। এটি এমন অনেক পশ্চিমা অনুসারীদেরও আকৃষ্ট করেছিল, যাঁরা আধ্যাত্মিক জ্ঞানের সন্ধান করছিলেন। ওশো মূলত ১৪ বছর বয়স থেকেই সঙ্গী অদলবদল থেকে শুরু করে অনিয়ন্ত্রিত যৌনতার পক্ষেই ছিলেন। তাঁর অদ্ভুত ধ্যানজ্ঞান, যৌন স্বাধীনতার উপর জোর দেওয়ার কারণে ওশোকে ভারতে 'যৌন গুরু' উপাধি দেওয়া হয়।