তালিবানের রাজনৈতিক মুখ তথা এই জঙ্গি সংগঠনের অন্যতম শীর্ষ নেতা মোল্লা বেরাদর ২০০১ সালের পর প্রথমবার পৌঁছলেন আফগানিস্তানে। কাতার থেকে কান্দাহারে এসে পৌঁছান বেরাদর। দীর্ঘদিন পাকিস্তানের জেলে থাকার পর আমেরিকার আবেদনে মোল্লাকে মুক্তি দেওয়া হয়। পরে তিনি কাতারে উড়ে যান। সেখানেই দোহা শান্তি চুক্তির বিষয়ে বৈঠক করেন বেরাদর। উল্লেখ্য, হইবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা তালিবানের সর্বেসর্বা। তবে মনে করা হচ্ছে তালিবানের রাজনৈতিক প্রধান হিসেবে আফগান সরকারের সর্বোচ্চ পদে বসানো হতে পারে বেরাদরকে।
১৯৯৪ সালে যখন তালিবান গঠনের নেপথ্যে থাকা চারজন ব্যক্তির অন্যতম হলেন মোল্লা আবদুল ঘানি বেরাদর। ১৯৬৮ সালে বেরাদরের জন্ম হয় আফগানিস্তানের উরুজগান প্রদেশে। ১৯৮০ সালে সোভিয়েতদের বিরুদ্ধে লড়াই করেন বেরাদর। সোভিয়েতরা দেশ ছেড়ে গেলে ১৯৮৯ সালে মোহম্মদ ওমরের (তালিবান প্রতিষ্ঠাতা) সঙ্গে কান্দাহারে একটি মাদ্রাসা খোলেন বেরাদর। এরপর ১৯৯৪ সালে গঠিত হয় তালিবান। ১৯৯৬ সালে ওমর আবদুল্লার বোনকে বিয়ে করেন বেরাদর। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ পর্যন্ত তালিবানি সরকারের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ছিলেন।
২০০১ সালে মার্কিন নেতৃত্বাধীন বাহিনী তালিবানকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর তালিবানের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় নেতায় পরিণত হন তিনি। কিন্তু ২০১০ সালে পাকিস্তানের করাচিতে এক পাক-মার্কিন যৌথ অভিযানে ধরা পড়েন। আট বছর পর শান্তি আলোচনার জন্য তত্কালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আবেদনে পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্তি দেয়া হয় বেরাদরকে। ২০২০ সালে প্রথম তালিবান নেতা হিসেবে তিনি তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন। চলতি বছরের জুলাই মাসে চিনে গিয়ে সেদেশের বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে আসেন বেরাদর। গত ২০ বছর ধরে তালিবানের সংঘর্ষের নেপথ্যে অন্যতম 'মাথা' ছিলেন তিনি। বর্তমানে সব তালিবানি জঙ্গিকে সংযত থাকার নির্দেশ দিয়ে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায় করতে চাইছেন বেরাদর।