সিকিমে আরও কয়েকদিন যে দুর্যোগ চলবে সেই পূর্বাভাস দিয়েছিল আবহাওয়া দফতর। কয়েকদিন ধরে নাগাড়ে বৃষ্টি হয়েছে সেখানে। তার জেরে একাধিক রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ধসের কারণে পর্যটকরা আটকে পড়েছেন। জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। তাই সিকিমে আটকে থাকা কমপক্ষে ২০০০ জন পর্যটককে উদ্ধার করতে কিছুটা বাধার মুখোমুখি হতে হয়েছে উদ্ধারকারী দলকে। তবে শেষ পাওয়া খবর, গত দু’দিনে বেশ কয়েকজন পর্যটককে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। প্রায় ১২০০ পর্যটক উত্তর সিকিমে আটকে পড়েছেন। তাঁদের মধ্যে বিদেশি পর্যটকও আছেন।
এদিকে সিকিম সরকার উদ্ধারকাজ শুরু করেছে। উত্তর সিকিমে আটকে থাকা পর্যটকদের উদ্ধার করতে হয়েছে সড়কপথে। কারণ আকাশপথে তা করা সম্ভব হচ্ছে না অত্যন্ত খারাপ আবহাওয়ার জেরে। লাচুং এবং চুংথাংয়ে সবচেয়ে বেশি বিপর্যয় হয়েছে। ধস নেমে রাস্তাঘাট বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। নাগাড়ে বৃষ্টির জন্য উত্তর সিকিম একেবারে লণ্ডভণ্ড অবস্থা হয়েছে। আজ, মঙ্গলবার সিকিমের লাচুং এবং মঙ্গন জেলা থেকে বেশ কয়েকজন পর্যটককে উদ্ধার করে গ্যাংটক নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আগেও গ্যাংটক নিয়ে যাওয়া হয়েছিল একাধিক বিপর্যস্ত জায়গা থেকে উদ্ধার করে। আজ নতুন করে সিকিমের বহু এলাকায় ধস নামায় পরিবহণ ব্যবস্থা বিঘ্নিত হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূল না থাকায় আটকে পড়া অনেক পর্যটককে এয়ারলিফ্ট করে উদ্ধার করাও সম্ভব হচ্ছে না।
আরও পড়ুন: উৎসব ভুলে উদ্ধারকাজে ঝাঁপাল মফিজরা, নির্মলজোত গ্রাম কুরবানি বন্ধ রেখে দুর্ঘটনাস্থলে
অন্যদিকে উদ্ধারকাজে ব্যাপক জোর দেওয়া হয়েছে। পর্যটকদের অযথা আতঙ্কিত না হতে বলা হয়েছে। এই বিষয়ে মঙ্গন জেলার পুলিশ সুপার সোনম দেটচু ভুটিয়া বলেন, ‘ইতিমধ্যেই কমপক্ষে ৬৫ জন পর্যটককে উদ্ধার করে গ্যাংটক নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ১৫০ জন পর্যটককে আজ চুংথাং থেকে উদ্ধার করে মঙ্গনে নিয়ে আসা হয়েছে। আরও ২০০ জন পর্যটককে লাচুং থেকে চুংথাংয়ে নামিয়ে আনা হয়েছে।’ প্রশাসন সূত্রে খবর, গ্যাংটকে রাখা হয়েছে দুটি হেলিকপ্টার। দরকার হলে বাগডোগরা থেকে সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টার আনার পরিকল্পনা আছে। কিন্তু নাগাড়ে বৃষ্টির কারণে হেলিকপ্টার চালানো যাচ্ছে না। তাই উদ্ধারকাজে ব্যাঘাত ঘটছে।
এছাড়া জুন মাসের ১৩ তারিখ থেকে এখন পর্যন্ত ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে ধসের জেরে। একাধিক বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিদ্যুৎ এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। রাস্তা এবং সেতু ভেঙে পড়েছে ও পরে জলের তোড়ে ভেসে গিয়েছে। তিস্তার নদীর জলের তোড়ে এবং ধসে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। সিকিমের পর্যটনমন্ত্রী শেরিং থেনডুপ ভুটিয়ার বক্তব্য, ‘আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি কিছু কিছু মানুষকে একসঙ্গে নিয়ে লাচুং এবং চুংথাং থেকে উদ্ধার করে সড়কপথে নিয়ে যাওয়া হবে।’ আর সিকিমের সড়ক ও সেতুমন্ত্রী নাল বাহাদুর দহালের কথায়, ‘উত্তর সিকিমে যোগাযোগ ব্যবস্থা ঠিক হতে একমাস সময় লেগে যাবে। মঙ্গলবার সন্ধ্যার মধ্যে ১০০ জন পর্যটককে উদ্ধার করা হবে।’