সময় যত বয়ে চলেছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়ে উত্তেজনার পারদ ক্রমশ চড়ছে। আর এই উত্তেজনা বৃদ্ধিতে অনুঘটকের কাজ করছে বেশ কিছু আশঙ্কা।
রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প ইতিমধ্যেই ভোট গ্রহণ ও গণনায় কারচুপি হতে পারে বলে অভিযোগ করেছেন। এছাড়াও, সোশাল মিডিয়ায় ভুয়ো তথ্য ছড়ানোর আশঙ্কা রয়েছে।
ঠিক কী কী কারণে এবারের মার্কিন নির্বাচন প্রভাবিত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে, তা জেনে নিন:
নির্বাচনে জালিয়াতি সংক্রান্ত ভুয়ো প্রচার:
এবারের মার্কিন নির্বাচনের আগে সোশাল মিডিয়ায় ভোটে কারচুপি সংক্রান্ত অসংখ্য ভুয়ো তথ্য ছড়িয়েছে। সূত্রের দাবি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কাজে লাগিয়ে এই অপকর্ম করা হচ্ছে।
এমনও বলা হচ্ছে যে এর আগে এত বিপুল পরিমাণে এই ধরনের ভুয়ো প্রচার হয়নি। এর নেপথ্যে মূলত কিছু স্বতন্ত্র ব্যক্তি, রিপাবলিকানদের মদতপুষ্ট কিছু সংগঠন এবং কয়েকজন ডেমোক্র্যাট রয়েছেন।
দ্য ট্রাম্প ফ্যাক্টর:
ভোটাভুটির রাতে ট্রাম্প নিজেও একটা ফ্যাক্টর হিসাবে কাজ করতে পারেন বলে মনে করছেন সাংবাদিক অ্যান্ড্রু রোমানো। তাঁর বক্তব্য হল, ট্রাম্প আজও ২০২০ সালে তাঁর পরাজয় মেনে নিতে পারেননি।
আজও ট্রাম্প দাবি করেন, শুধুমাত্র কারচুপি করে তাঁকে ভোটে হারানো হয়েছিল। এবারও একই ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি।
সাংবাদিক রোমানোর আশঙ্কা, প্রাথমিকভাবে পেনসিলভেনিয়ার মতো কিছু প্রদেশে ট্রাম্প যদি এগিয়ে যান, তাহলে তিনি ভোট গণনা শেষ হওয়ার আগেই নিজেকে জয়ী বলে ঘোষণা করে দিতে পারেন।
ট্রাম্পের সমর্থকরা অন্যান্য প্রদেশের নির্বাচন আধিকারিকদের বাধ্য করতে পারেন যাতে তাঁরা পূর্ণাঙ্গ ফল প্রকাশ না করেন!
চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণায় দেরি:
সংশ্লিষ্ট দিনে স্থানীয় সময় রাত ১১টায় ভোটদান প্রক্রিয়া শেষ করা হলেও হাওয়াই ও আলাস্কায় নির্বাচন শেষ হতে কিছুটা সময় লাগবে।
সাধারণত, ক্যালিফোর্নিয়ার ভোট শেষ হওয়ার কিছুক্ষণ পরই বিজয়ীর নাম ঘোষণা করে দেওয়া হয়। সেইসঙ্গে, পরাজিত প্রার্থীর তরফে সম্মতিসূচক ভাষণ পড়িয়ে নেওয়া হয়।
যদিও, এবার মেইল-ইন ভোট প্রচুর পরিমাণে পড়ায় বিজয়ীর নাম ঘোষণা করতে দিন পেরিয়ে যেতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা এবং প্রথমে যিনি এগিয়ে থাকবেন, সেই প্রার্থী শেষমেশ জয়ী নাও হতে পারেন।
হিংসা এবং আতঙ্কের পরিবেশ সৃষ্টি:
ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন, তিনি নির্বাচন চলাকালীন দেড় লক্ষেরও বেশি স্বেচ্ছাসেবক মোতায়েন করবেন। যাঁরা ভোটে জালিয়াতি করা হচ্ছে কিনা, সেদিকে নজর রাখবেন!
সংশ্লিষ্ট মহলের আশঙ্কা, ট্রাম্পের এই স্বেচ্ছাসেবকরা যেকোনও সময় হিংসা ছড়িয়ে সকলকে আতঙ্কিত করে তুলতে পারেন! তাতে ভোট প্রক্রিয়া ব্যাহত পর্যন্ত হতে পারে।
সাইবার আক্রমণ:
ভোটাভুটির সময় সাইবার আক্রমণের আশঙ্কা করছেন মার্কিন নির্বাচন বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের দাবি, ইতিমধ্যেই রাশিয়া, চিন এবং ইরানের হ্যাকাররা মার্কিন নির্বাচন পণ্ড করতে ভুয়ো তথ্য ছড়ানো থেকে শুরু করে নানা অপকর্ম করছে। ভোটের দিনও তারা অশান্তি পাকানোর চেষ্টা করতে পারে।
নাগরিক বিক্ষোভ:
ভোটের ফল প্রকাশ হওয়ার পর নাগরিকদের একাংশ অশান্তি ছড়াতে পারে, এমন আশঙ্কার কথাও শোনা যাচ্ছে। সেই কারণে ইতিমধ্যেই বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে।
উল্লেখ্য কিছুদিন আগেই যেকোনও ধরনের অনভিপ্রেত পরিস্থিতি সামলানোর পরিকল্পনা তৈরি করতে পেনসিলভেনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থানীয় ও শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনায় বসেছিলেন ৩০ জনেরও বেশি সেনা বিশেষজ্ঞ।