রাখে হরি মারে কে! ছাদ ফুটো করে বালিশে আছড়ে পড়ল উল্কা। অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে গেলেন কানাডার রুথ হ্যামিলটন নামের এক মহিলা।
ভিক্টোরিয়া নিউজের রিপোর্ট অনুযায়ী, রুথ হ্যামিল্টন দক্ষিণ -পূর্ব ব্রিটিশ কলম্বিয়ার গোল্ডেন শহরের বাসিন্দা। গত ৪ অক্টোবর রাতে তিনি তখন গভীর ঘুমে। এমন সময়ে হঠাত্ প্রচন্ড শব্দে ঘুম ভেঙে যায় তাঁর। অন্ধকারে দেখেন তাঁর গা, বিছানার চাদরে যেন কেমন গুঁড়ো গুঁড়ো বালি-পাথর। সঙ্গে সঙ্গে উঠে আলো জ্বালান তিনি।
রুথ বলেন, 'লাফ দিয়ে উঠে আলো জ্বালালাম। দেখি ছাদে একটা গর্ত। আর বিছানায় বালিশে পড়ে একটা কালো পাথর। গোটা ব্যাপারটায় বুঝতেই পারছিলাম না কী ঘটেছে।'
কী ব্যাপার বুঝতে না পেরে তিনি সঙ্গে সঙ্গে ৯১১ নম্বর ডায়াল করেন। ভারতে যেমন পুলিশের হেল্পলাইন ১০০, সেরকমই। উল্টোদিকের পুলিশকর্মীকে তিনি গোটা বিষয়টি বলেন। সেই পুলিশকর্মী তখন প্রশ্ন করেন, 'আশেপাশে কোনও নির্মাণকাজ চলছে?' এর উত্তরে না জানান রুথ।
এরপর বেশ কয়েক মাইল দূরে এক ক্যানিয়ন প্রকল্পে খোঁজ নেয় পুলিশ। সেখানে কোনও বড় বিস্ফোরণ হয়েছে কিনা খোঁজ নেওয়া হয়। কিন্তু তাঁরাও জানান যে সেরকম কিছুই হয়নি। তবে সেই সঙ্গে তাঁরা জানান, রাতের আকাশে তাঁদের বেশ কয়েকজন কর্মী কিছুক্ষণ আগেই উল্কাপাত দেখতে পেয়েছেন।
এরপরেই দুইয়ে দুইয়ে চার করেন পুলিশকর্মীরা। বিশেষজ্ঞদের পাথরটির ছবি দেখাতেই তাঁরা সেটি উল্কা বলে জানান। এরপর গোটা বিষয়টি রুথকে জানানো হয়।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই উল্কা বায়ুমণ্ডলে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গে জ্বলে নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। তবে কখনও কখনও কোনও বড় টুকরো জ্বলতে জ্বলতে অবশেষটুকু পৃথিবীতে আছড়ে পড়ে। রুথের ভাগ্য ভাল পাথরটি ছোট ছিল এবং তাঁর মাথায় আঘাত করেনি।
সংবাদমাধ্যমকে রুথ বললেন, 'ভাবা যায়? মহাকাশ থেকে একটা লক্ষ লক্ষ কোটি বছরের পাথরের টুকরো উড়ে এসে আমার বিছানায় পড়ল! আমার নাতি-নাতনিদের এটা নিয়ে ভীষণ আগ্রহ। তাই উল্কার টুকরোটা আমিই রাখব বলে স্থির করেছি।'
একই সঙ্গে জীবনকেও নতুন করে ভালবাসতে শিখলেন বলে জানিয়েছেন রুথ। তিনি বলেন, 'জীবন সবচেয়ে মূল্যবান। যে কোনও সময়েই আমরা এই জগত্ ছেড়ে চলে যেতে পারি। এই ঘটনা আমাকে নতুন করে নিজের জীবনের প্রতি কৃতজ্ঞ হওয়ার শিক্ষা দিল।'