মু্ম্বই সফরে গিয়ে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একদিকে জোটের সলতে পাকাচ্ছেন অন্যদিকে বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের উদ্দেশ্যে লগ্নি টানার চেষ্টা করছেন। তাই তিনি রাজনীতিবিদ থেকে শিল্পপতি এবং সুশীল সমাজের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। দেশের গণতন্ত্র ফেরাতে বিশিষ্টজনদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এখানেই সমাজকর্মী মেধা পাটেকর তৃণমূল সুপ্রিমোকে প্রশ্ন করেন, ‘মদ বিক্রি বন্ধে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পরিকল্পনা কী? আগামী নির্বাচনী এজেন্ডায় তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কী মদ বিক্রি নিষিদ্ধ করবেন?’ যদিও বিষয়টি নিয়ে ভাববেন বলা ছাড়া আর কোনও মন্তব্য করেননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি রাজ্য এই পথে হাঁটার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কেউ কেউ করে ফেলেছে। রাজ্যে মদ বিক্রি থেকে রাজস্ব আয় বেড়েছে বলে আগেই অভিযোগ করেছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সেখানে বাণিজ্যনগরীতে এমন প্রশ্নের মুখোমুখি হয়ে একটু অবাক হন মুখ্যমন্ত্রী। কারণ নর্মদা বাঁচাও আন্দোলনের নেত্রী মেধা তাঁকে বলেন, ‘রাজ্য সরকারগুলি মদ বেচে পয়সা রোজগার করে। মহাত্মা গান্ধী বা বাবাসাহেব আম্বেদকর যাকে ‘পাপের পয়সা’ বলতেন। পরবর্তী নির্বাচনে মদ বিক্রি নিষিদ্ধ করার বিষয়টি কী আপনার রাজনৈতিক অ্যাজেন্ডায় আনবেন? এটা মহিলাদের জন্য অত্যন্ত ভাল পদক্ষেপ হবে। কারণ এতে বহু সংসার নষ্ট হচ্ছে। আপনি মহিলাদের নেত্রী বলে পরিচিত।’
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখানে বারবার বলেছেন, বিজেপির অগণতান্ত্রিক পথে দেশ চালানোর প্রক্রিয়া রুখে দিতে হবে। মানুষের স্বার্থে কাজ করতে হবে। তাই সবার এগিয়ে আসা উচিত। আর মানুষের স্বার্থেই এমন নানা প্রশ্ন করেন মেধা পাটেকর। বাণিজ্য সম্মেলনে লগ্নি টানতে এই ইস্যু বড় ভূমিকা নেবে বলে মনে করছেন অনেকেই। এখন দেখার বাংলার মুখ্যমন্ত্রী কি পদক্ষেপ করেন।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি একটি সমীক্ষায় উঠে এসেছে, দেশে মদ্যপানের নিরিখে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। সেই তথ্যের উপর ভিত্তি করে প্রশ্ন করেন মেধা পাটেকর। তাতে অস্বস্তি বাড়লেও সেটা প্রকাশ করেননি মুখ্যমন্ত্রী। বরং এই সমস্যার সমাধান করার মনে মনে শপথ নিয়েছেন বলেই খবর। গত ১৬ নভেম্বর থেকে রাজ্যে বিলিতি মদের দাম কমেছে রাজ্যে। এই পরিস্থিতিতে মেধার প্রশ্ন যথেষ্ট যুক্তিসঙ্গত বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।