তিন তালাক নিষিদ্ধ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। তারপরেও ‘তিন তালাক’-এর মতো প্রথা বিলুপ্ত হয়নি। এখনও দেশের বিভিন্ন প্রান্তে তিন তালাক দিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদ করেছেন বহু মানুষ। বিশেষ করে মহারাষ্ট্রে স্ত্রীকে তিন তালাক দেওয়ার অভিযোগ প্রায়ই শোনা যাচ্ছে। আবারও মহারাষ্ট্রে স্ত্রীকে তিন তালাক দেওয়ার অভিযোগ উঠল এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। অভিযোগ, অফিসে বসের সঙ্গে সহবাসে রাজি না হওয়ায় স্ত্রীকে তিন তালাক দিয়েছেন একজন সফ্টওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। ঘটনাটি ঘটেছে মহারাষ্ট্রের কল্যাণে। ঘটনায় অভিযুক্তের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: স্ত্রী একা হাঁটতে যাওয়ায় তিন তালাক দিলেন স্বামী, থানায় অভিযোগ মহিলার
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসে গত ১৯ ডিসেম্বর। অভিযোগ, ওইদিন ওই সফ্টওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারের অফিসের তরফে একটি পার্টির আয়োজন করা হয়েছিল। সেই পার্টিতে ইঞ্জিনিয়ার তার ২৮ বছর বয়সি স্ত্রীকে বসের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হতে বলেছিলেন। কিন্তু, তিনি স্বামীর সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। এর পরে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়। অভিযোগ, ওই ইঞ্জিনিয়ার প্রথম পক্ষের স্ত্রীর জন্য দ্বিতীয় স্ত্রীকে তার বাবা-মায়ের কাছ থেকে ১৫ লক্ষ টাকার ব্যবস্থা করতে বলেছিলেন। কিন্তু, তাতেও রাজি না হওয়ায় ইঞ্জিনিয়ার তার দ্বিতীয় স্ত্রীকে তিন তালাক দেন বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় মহিলা তার স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। তার ভিত্তিতে পুলিশ অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ১১৫ (২), ৩৫১ (২), (৩) এবং ৩৫২ ধারায় মামলা রুজু করে। এছাড়া, মুসলিম মহিলা (বিবাহের অধিকার সুরক্ষা) আইন, ২০১৯-এর ধারাও যোগ করা হয়েছে।
জানা গিয়েছে, এই দম্পতির বিয়ে হয়েছিল চলতি বছরের জানুয়ারিতে। বিয়ের প্রথমদিকে তাদের মধ্যে সম্পর্ক ভালোই ছিল। তবে এরপরেই স্বামী অর্থের জন্য তার ওপর চাপ দিতে থাকে বলে অভিযোগ। মহিলা জানান, তার স্বামী তাকে বলেছিলেন, প্রথম স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার জন্য তার ১৫ লক্ষ টাকা প্রয়োজন। এরজন্য তার স্বামী ক্রমাগত তার ওপর চাপ দিচ্ছিলেন। তাঁর আরও অভিযোগ, বসের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হওয়ার প্রস্তাবে রাজি না হওয়ার ফলে তাকে তার স্বামী শারীরিকভাবেও নির্যাতন করেছেন। শুধু তাই নয়, তিন তালাক দেওয়ার পর তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয়। এই ঘটনার পরে মহিলা স্বামীর বিরুদ্ধে সম্ভাজি নগর থানায় অভিযোগ জানান। পরে মামলাটি কল্যাণের বাজারপেথ থানায় স্থানান্তরিত করা হয়।