বিবাহের অধিকার কি মৌলিক অধিকারের মধ্যে পড়ে? সমলিঙ্গে বিবাহ নিয়ে শীর্ষ আদালতে সওয়াল জবাবের সময় এ নিয়ে প্রশ্ন তুললেন কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষের আইনজীবী তথা সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা। এদিন সুপ্রিম কোর্টে সমলিঙ্গে বিবাহ প্রসঙ্গে তুষার মেহতা মন্তব্য করেন, 'বিয়ের অধিকার থাকতেই হবে তেমন কোনও বাধ্য বাধকতা নেই।' পাশাপাশি তিনি আরও বলেন, 'সব ধর্মই বিপরীত লিঙ্গে বিবাহের পক্ষে।' তিনি বলেন, 'লাখ লাখ বছর ধরে ধর্মের নজরে বিয়েকে বিপরীত লিঙ্গের দু'টি মানুষের মিলন দেখা হয়েছে।' সলিসিটর জেনারেল আরও বলেন, 'বিয়ে করার অধিকার থাকতেই হবে এমন কোনও বাধ্যবাধকতা নেই। আইনের দ্বারা বয়স নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। সেই বয়সেই বিয়ে করা যেতে পারে। আইন বলে দেয় কে বিয়ে করতে পারবে না, কীভাবে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটাতে হবে। এই সবই আইনের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত।'
সলিসিটর জেনারেল আজ শীর্ষ আদালতে বলেন, 'বিহাহের অধিকারের অর্থ এটা হতে পারে না যে রাষ্ট্রকে বিয়ের নতুন সংজ্ঞা তৈরি করতে বাধ্য হতে হয়।' তিনি আবেদন জানান, এই মামলার শুনানি বন্ধ করে দেওয়া হোক এবং সংসদকে এই নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে দেওয়া হোক। এই বিষয়টিকে 'জটিল' আখ্যা দিয়ে সলিসিটর জেনারেল বলেন, 'সমাজের ওপর এর প্রভাব পড়বে।' তুষার মেহতা বলেন, 'মানুষের কাছে এই নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা থাকা উচিত। তাই সমলিঙ্গে বিবাহ সম্পর্কিত সিদ্ধান্ত নিতে দেওয়া হোক সংসদকে।'
প্রসঙ্গত, ভারতে সমকামী বিবাহের আইনি স্বীকৃতি বিবেচনা করতে সম্মত হয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। এই আবহে লাগাতার এই মামলার শুনানি চলছে শীর্ষ আদালতে। উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ৬ সেপ্টেম্বর এই ঐতিহাসিক রায়দানের মাধ্যমে সমকামী সম্পর্ককে অপরাধমুক্ত বলে ঘোষণা করেছিল সুপ্রিম কোর্ট। ব্রিটিশ জমানার বহু পুরোনো আইনকে প্রত্যাহার করে পাঁচ সদস্যের বিচারপতিদের বেঞ্চ জানিয়েছিল, ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৭ ধারার আওতায় দু'জনের পূর্ণ সম্মতিতে সমকাম সম্পর্ক অপরাধ নয়। সেই পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চে ছিলেন দেশের বর্তমান প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ও। তবে সমকামী সম্পর্ক বৈধ হলেও সমকামী বিয়ে এখনও আইনি বৈধতা পায়নি ভারতে। এই আবহে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন একটি বেঞ্চ নির্দেশনা জারি করে, বিভিন্ন হাই কোর্টে সমকামী বিবাহ সংক্রান্ত যাবতীয় পিটিশন মুলতুবি করে তা শীর্ষ আদালতে পাঠানো হোক। সেই মামলার শুনানিতেই আজ সলিসিটর জেনারেল দাবি করলেন, বিয়ের অধিকার থাকতেই হবে তেমন কোনও বাধ্য বাধকতা নেই।