চিনের নামোল্লেখ না করে ধারচুলা থেকে লিপু লেখ পর্যন্ত গড়া রাস্তা নিয়ে নেপালের আপত্তির পিছনে তৃতীয় কোনও প্রভাব রয়েছে বলে অভিযোগ করলেন ভারতীয় সেনাপ্রধান মনোজ মুকুন্দ নরভানে।
সম্প্রতি সিকিম ও লাদাখে চিনা সেনাবাহিনীর সঙ্গে ভারতের সংঘর্ষ এবং তার পরেই কাঠমান্ডুর আপত্তির মধ্যে যোগসূত্র দেখতে পাচ্ছে নয়াদিল্লি। নেপালের দাবি, সদ্য তৈরি হওয়া রাস্তাটি তাদের জমির উপর দিয়ে গিয়েছে এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এই পদক্ষেপ করেছে ভারত।
শনিবার দিল্লির মনোহর পর্রিকর ইনস্টিটিউট অফ ডিফেন্স স্টাডিজ অ্যান্ড অ্যানালিসিস প্রতিষ্ঠানের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তাঁর অনলাইন ভাষণে ভারতের সেনাপ্রধান বলেন, বর্ডার রোডস অর্গ্যানাইজেশনের (বিআরও) তৈরি রাস্তাটি কালী নদীর পশ্চিম তীর ঘেঁষে গিয়েছে। নদীর পূর্ব তীর নেপালের আওতায় পড়ে এবং পশ্চিম তীর ভারতের। সুতরাং নেপালের জমিতে রাস্তা তৈরি হওয়ার অভিযোগ ভিত্তিহীন। তিনি বলেন, ‘বুঝতে পারছি না, এতে ওদের উত্তেজিত হওয়ার কী হয়েছে।’
এই প্রসঙ্গেই জেনারেল নরভানে বলেন, নেপালের এই আপত্তির পিছনে অন্য কারও উস্কানি রয়েছে। এই নিয়ে আগে কখনও মতানৈক্য দেখা দেয়নি বলেও মন্তব্য করেন সেনাপ্রধান।
কৈলাস-মানসসরোবর তীর্থযাত্রার সংক্ষিপ্ততম রাস্তা গড়ার উদ্দেশে সম্প্রতি উত্তরাখণ্ডের ধারচুলা থেকে লিপু লেখ পর্যন্ত ৮০ কিমি সড়ক নির্মাণ করে বিআরও। রাস্তাটি ৬,০০০ থেকে ১৭,০৬০ ফিট উচ্চতায় তৈরি হয়েছে।
গোড়া থেকেই ভারত জানিয়ে আসছে যে রাস্তা তৈরি হয়েছে সম্পূর্ণ ভারতীয় ভূখণ্ডের উপরে। অথচ নেপালের দাবি, তাদের জমির উপরে সড়ক তৈরি করেছে ভারত। এর জেরে গত ১১ মে কাঠমান্ডুতে ভারতীয় রাষ্ট্রদূতকে তলব করে সড়ক নির্মাণ নিয়ে প্রতিবাদ জানায় নেপাল সরকার, যার জেরে ভারতের সহ্গে তাদের কূটনৈতিক সম্পর্কে ফাটল দেখা দিয়েছে।
প্রসঙ্গত, কয়েক মাস আগে ভারতের নতুন মানচিত্রতে কালাপানি অঞ্চল উত্তরাখণ্ডের অন্তর্ভুক্ত দেখানোর কারণেও ক্ষোভ প্রকাশ করে নেপাল। এই নিয়ে নয়াদিল্লির সঙ্গে আলোচনায় বসতে চায় নেপাল সরকার।
নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলি চিন ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। নেপালে একাধিক কমিউনিস্ট দলের সমাবেশে সরকার গঠনের পিছনেও বেজিংয়ের প্রচ্ছন্ন ভূমিকা রয়েছে বলে মনে করা হয়। এই কারণেই ভারত-নেপাল সাম্প্রতিক মতদ্বন্দ্বে চিন পরোক্ষ প্রভাব বিস্তার করেছে বলে সন্দেহ ভারতী কূটনীতিকদের।