লাদাখের সমাজকর্মী সোনম ওয়াংচুকের সঙ্গে যোধপুর কারাগারে গিয়ে দেখা করলেন তাঁর স্ত্রী। ওয়াংচুক কারাগারে বন্দি হওয়ার পর এটিই তাঁদের প্রথম সাক্ষাৎ। গীতাঞ্জলি নিজেই টুইটারে এই তথ্য জানিয়েছেন। সোনমের সাক্ষাতের বিষয়ে গীতাঞ্জলি নিজের পোস্টে লেখেন, 'আজ সোনম ওয়াংচুকের সঙ্গে দেখা করলাম। আমরা তাঁর গ্রেফতারির আদেশের একটি অনুলিপিও পেয়েছি। আদালতে আমরা এটিকে চ্যালেঞ্জ করব।' তিনি আরও লিখেছেন যে সোনম ওয়াংচুকের মনোবল এতটুকু কমেনি এবং তিনি লাদাখের স্বার্থে কাজ চালিয়ে যাবেন। তিনি লেখেন, 'সোনম ওয়াংচুকের আত্মাকে স্যালুট। যারা তাকে সমর্থন করেছিলেন তাদের স্যালুট পাঠিয়েছেন তিনি।'
সোনমের সঙ্গে এর আগে দেখা করেছিলেন লেহ অ্যাপেক্স বডির আইনি উপদেষ্টা মুস্তাফা হাজি। এছাড়া ওয়াংচুকের দাদা সেতান দর্জেও দেখা করতে এসেছিলেন তাঁর সঙ্গে। এদিকে সোনম ওয়াংচুকের মুক্তির বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকার ও লাদাখ প্রশাসনকে নোটিশ পাঠিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। জাতীয় নিরাপত্তা আইনে কারাগারে বন্দি সোনম ওয়াংচুককে কেন তাৎক্ষণিকভাবে মুক্তি দেওয়া হচ্ছে না, তা জানতে চেয়েছে আদালত। গীতাঞ্জলির পক্ষে আইনজীবী কপিল সিব্বল আদালতের কাছে আবেদন করেছিলেন যে তাঁর গ্রেপ্তারের আদেশের একটি অনুলিপি পরিবারকে দেওয়া উচিত, যাতে তিনি আইনি সহায়তা চাইতে পারেন। এই আবহে গীতাঞ্জলি অবশেষে সোনমের গ্রেফতারির আদেশের অনুলিপি হাতে পেলেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ করতে চলেছেন তিনি।
উল্লেখ্য, গত ২৪ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ সোনমের অনশন ধর্মঘটের স্থান থেকে বিপুল সংখ্যক আন্দোলনকারী গিয়ে বিজেপির পার্টি অফিসে হামলা চালিয়েছিল। সোনমের এতে ইন্ধন ছিল বলে অভিযোগ। লেহ-র সরকারি প্রধানের অফিসেও হামলা চালানো হয়েছিল। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। তবে ততক্ষণে হিংসায় অনেকে প্রাণ হারান। জখম হন নিরাপত্তাবাহিনীর অনেক সদস্য। পরে কেন্দ্রের রিপোর্টে বলা হয়, 'তাঁর উস্কানিমূলক বক্তব্যের জেরে এতকিছু হলেও সোনম ওয়াংচুক নিজে এর মাঝে অনশন ভেঙে অ্যাম্বুলেন্সে করে নিজের গ্রামে ফিরে যান। তিনি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের কোনও চেষ্টাই করেননি।' এদিকে লাদাখের লেফটেন্যান্ট গভর্নর কবিন্দর গুপ্তা এই ঘটনায় হিংসা ছড়ানো ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। লাদাখের লেফটেন্যান্ট গভর্নর জানিয়েছেন, কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে যে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ থাকে, সেটা বিনষ্ট করতেই হিংসার ছক তৈরি করা হয়েছে। প্রাণহানি রুখতে লেহতে কার্ফু জারি করা হয়। পরে গ্রেফতার করা হয় সোনমকে।