‘চিন সীমান্তে পুরোদমে সংকট’-র জন্য কেন্দ্রের অব্যবস্থা এবং ভ্রান্ত নীতিকে দায়ী করলেন কংগ্রেসের অন্তর্বর্তীকালীন সভাপতি সোনিয়া গান্ধী। একইসঙ্গে দেশের অর্থনীতি সংকট, করোনাভাইরাস মহামারীর জন্যও নরেন্দ্র মোদী সরকারকে দুষেছেন তিনি।
দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে মঙ্গলবার বৈঠকে বসে কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটি। শতাব্দী প্রাচীন দলের মুখপাত্র রণদীপ সুরজেওয়ালা জানান, গত ১৫ জুন গালওয়ানে মৃত কর্নেল বি সন্তোষ বাবু -সহ ২০ জন ভারতীয় জওয়ানের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়েছে। বৈঠক শুরুর আগে কমিটির সব সদস্যরা দু'মিনিট নীরবতা পালন করেছেন।
বৈঠকের শুরু থেকেই মোদী সরকারের বিরুদ্ধে আক্রমণের ঝাঁঝ বাড়ান সোনিয়া। চিনের সীমান্ত অতিক্রম নিয়ে কেন্দ্রের দাবি উড়িয়ে দিয়ে কংগ্রেসের অন্তর্বর্তীকালীন সভাপতি বলেন, ‘নিজেদের স্বভাব মতো সরকার অস্বীকার করে যাচ্ছে। গত ৫ মে অনুপ্রবেশ নজরে এসেছিল এবং সেই খবর দেওয়া হয়েছিল। সমাধানের পরিবর্তে পরিস্থিতির ক্রমশ অবনতি হল এবং ১৫-১৬ জুন সংঘর্ষ হল। ২০ জন ভারতীয় জওয়ান শহিদ হলেন, ৮৫ জন আহত হলেন এবং ১০ জন নিখোঁজ ছিলেন যতক্ষণ না তাঁরা ফিরে এলেন। অথচ প্রধানমন্ত্রী বললেন, লাদাখে ভারতীয় ভূখণ্ডে কেউ অনুপ্রবেশ করেননি।’
কংগ্রেসের দাবি, চিনা সেনার অনুপ্রবেশ নিয়ে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং, বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর এবং সেনাপ্রধান এম এম নারাভানে যে মন্তব্য করেছিলেন, তার সম্পূর্ণ বিপরীত কথা বলেছেন মোদী। তাঁর সরকার অত্যন্ত বাজেভাবে পুরো পরিস্থিতি সামলানোর চেষ্টা করছে বলে দাবি করেন সোনিয়া। তিনি বলেন, 'চিনের সঙ্গে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা এখন পুরোদমে সংকটে রয়েছে। ভবিষ্যতে কী হবে, তা এখনও প্রকাশ পায়নি। কিন্তু আমাদের আশা, ভারতের ভূখণ্ড অখণ্ডতা সুরক্ষিত রাখতে সরকারের পদক্ষেপকে পরিণত কূটনীতি এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী নেতৃত্ব এগিয়ে নিয়ে যাবে।'
তবে নরেন্দ্র মোদী সরকারের আক্রমণ করলেও চিনের সঙ্গে সীমান্ত দ্বন্দ্বের পরিস্থিতিতে সরকারের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন সোনিয়া। তিনি বলেন, ‘জাতীয় সুরক্ষা এবং দেশের অখণ্ডতার বিষয়ে দেশ সবসময়ে একসঙ্গে দাঁড়িয়েছে এবং এবারও দ্বিতীয় কোনও মতধারা হতে পারে না। কংগ্রেসই সর্বপ্রথম সশস্ত্র বাহিনী এবং সরকারের দিকে পূর্ণ সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে।’
একইসঙ্গে দেশের জাতীয় স্বার্থের উপর ভিত্তি করে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনা এবং শান্তি নিশ্চিত করার আর্জি জানিয়েছেন সোনিয়া। তিনি বলেন, ‘আমরা পরিস্থিতির উপর কড়া নজর রাখছি।’