সোনি এবং জি-এর সংযুক্তিকরণের চুক্তি বাস্তবায়িত করতে কয়েকদিন আগেই আবেদন জানানো হয়েছিল জাতীয় কোম্পানি ল' ট্রাইবুনালে। এই আবহে এবার ইকোনমিক টাইমস একটি রিপোর্টে দাবি করল, ১০ বিলিয়ন ডলার মূল্যের এই সংযুক্তিকরণ চুক্তিকে ফের বাস্তবায়িত করতে 'শেষ চেষ্টা' করতে চলেছে জি এবং সোনি। গত দুই সপ্তাহে এই নিয়ে অনেক দূর কাজ এগিয়েছে বলেও দাবি করা হয়েছে। উভয় সংস্থারই কর্তারা এর সঙ্গে যুক্ত আছেন। তবে সূত্রের খবর, এখনও অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে দুই সংস্থা একমত হতে পারছে না। এই আবহে ফের একবার আলোচনা ভেস্তে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এদিকে এই সংযুক্তিরণের 'শেষ চেষ্টা' নিয়ে জি এবং সোনিকে প্রশ্ন করা হলে সংবাদসংস্থা রয়টার্সকে কোনও জবাব দেয়নি তারা। (আরও পড়ুন: করদাতা পিছু ১ লাখ টাকা করে বকেয়ার দাবি প্রত্যাহার করবে IT বিভাগ, শুরু প্রক্রিয়া)
আরও পড়ুন: একই টোকেনে মেট্রো করে হাওড়া ময়দান থেকে যাওয়া যাবে রুবি, খসবে কত টাকা?
এর আগে সম্প্রতি জাতীয় কোম্পানি ল' ট্রাইবুনালে একটি পিটিশন দাখিল করে জি। সোনির সঙ্গে বাতিল হওয়া চুক্তি কার্যকর করার আবেদন জানানো হয় সেই আবদেনের মাধ্যমে। এই আবহে তিন সপ্তাহের মধ্যে সোনিকে এই বিষয়ে জবাব দিতে বলা হয়েছিল। জানুয়ারির শেষ লগ্নে হওয়া সেই আবেদনের প্রেক্ষিতেই জি এবং সোনি ফের আলোচনার টেবিলে ফিরেছে কি না, তা অবশ্য স্পষ্ট নয়। তবে বিগত ২-৩ সপ্তাহ ধরে দুই সংস্থার কর্তারা ফের আলোচনায় বসে এই সংযুক্তিকরণ চুক্তিকে বাস্তবায়নের চেষ্টায় নেমে পড়েন।
আরও পড়ুন: অপেক্ষা করতে হবে মে পর্যন্ত নাকি তার আগেই আচমকা হয়ে যাবে ডিএ বৃদ্ধি?
উল্লেখ্য, মার্জার সম্পন্ন হলে নয়া সংস্থার অধীনে থাকত ৭০টি চ্যানেল। তবে এই মার্জার আর হবে না। সোনির তরফ থেকে জি-কে চুক্তি বাতিলের চিঠি পাঠানো হয় কয়েকদিন আগেই। শুধু তাই নয়, চুক্তি ভঙ্গের অভিযোগ তুলে জি-এর থেকে ৯০ মিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণেরও দাবি করা হয় সোনির তরফ থেকে। জানা গিয়েছে, এর আগেই এই সংযুক্তিকরণ চুক্তির থেকে ২০০ কোটি টাকা সরিয়ে ফেলার অভিযোগ উঠেছিল জি-এর বিরুদ্ধে। সেবি এই নিয়ে তদন্ত চালাচ্ছে। এরই মাঝে আবার সাম্প্রতিক রিপোর্টে দাবি করা হয়, সোনি-জি চুক্তিতে ২০০ কোটি নয় বরং ১০০০ কোটির তছরুপ করেছে জি এন্টারটেনমেন্ট। এই আবহে জি-এর শীর্ষ কর্তা পুনীত গোয়েঙ্কা এবং জি-এর কর্ণধার সুভাষ চন্দ্রকে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠাবে সেবি। এছাড়া পুনীতের ওপর জরিমানা ধার্য করা হতে পারে বলেও জানা যায়।
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরের মধ্যেই এই নয়া সংস্থ স্থাপনের কথা ছিল। তবে ডেডলাইন পার হলেও সোনি এবং জি-র সংযুক্তিকরণ সম্ভব হয়নি। এই আবহে নয়া বছরে জি-এর হাত ছাড়ার কথা জানায় সোনি। এর আগে দুই মিডিয়া সংস্থার সংযুক্তিকরণের জন্য শেয়ারহোল্ডারদের সবুজ সংকেত মিলেছিল ২০২২ সালের অক্টোবর মাসে। এই আবহে গত ২০২৩ সালের অগস্ট মাসে জাতীয় কোম্পানি আইন ট্রাইব্যুনাল বা এনসিএলটি অনুমোদন দিয়েছিল জি এবং সোনির সংযুক্তিকরণে। এই সবুজ সংকেত আসতেই শেয়ার বাজারে জি-এর স্টকের দর ২০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে গিয়েছিল। তবে এই সংযুক্তিকরণ আর বাস্তবায়িত হবে না।
এর আগে জি এবং সোনির সুংযুক্তিকরণে আপত্তি জানিয়ে জাতীয় কোম্পানি আইন ট্রাইবুনালে আবেদন জানিয়েছিল ঋণ প্রদানকারী অ্যাক্সিস ফিন্যান্স, জেসি ফ্লাওয়ার অ্যাসেট রিকনস্ট্রাকশন, আইডিবিআই ব্যাঙ্ক, আইম্যাক্স কর্পোরেশন এবং আইডিবিআই ট্রাস্টিশিপ। তবে গত অগস্টে সেই আবেদন খারিজ করে দিয়েছিল জাতীয় কোম্পানি আইন ট্রাইবুনাল। এই আবহে দুই মিডিয়া সংস্থার সংযুক্তিকরণের পথে বাধা দূর হয়েছিল গত বছরই। তবে সোনির তরফ থেকে সম্পর্ক ছিন্ন করার কথা বলা হয় জি-কে।