শৌচালয় সংক্রান্ত সমস্যার কারণে রেলে সওয়ার একটি পরিবারকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছিল। তার জেরে এবার ওই পরিবারের প্রতিনিধিকে মোট ৩০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিল অন্ধ্রপ্রদেশের বিশাখাপত্তনমের জেলা উপভোক্তা কমিশন।
বুধবার এই মর্মে টাইমস অফ ইন্ডিয়ায় যে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে, তাতে দাবি করা হয়েছে, এক ব্যক্তি সপরিবার সওয়ার হয়েছিলেন তিরুমালা এক্সপ্রেসে। কিন্তু, সেই ট্রেনের শৌচালয়ের অবস্থা ছিল শোচনীয়।
যার জেরে ওই ব্যক্তি ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা মানসিক এবং শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন। এর সুবিচার চেয়ে বিশাখাপত্তনমের জেলা উপভোক্তা কমিশনের দ্বারস্থ হন তিনি।
সেই অভিযোগের ভিত্তিতে দক্ষিণ মধ্য রেলকে শুধুমাত্র ওই দিনের অসুবিধার জন্য ২৫ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেয় কমিশন। সঙ্গে আরও ৫ হাজার টাকা দিতে বলা হয়।
ঠিক কী অভিযোগ করেছিলেন ওই ব্যক্তি?
টাইমস অফ ইন্ডিয়ায় প্রকাশিত খবর অনুসারে, গত বছরের (২০২৩) ৫ জুন ভি মূর্তি এবং তাঁর পরিবারের সদস্যরা তিরুপতি থেকে ওই ট্রেনে সওয়ার হন। তিনি সংবাদমাধ্যমকে জানান, যাত্রার জন্য চারটি ৩এসি টিকিট কেটেছিলেন। গন্তব্য ছিল বিশাখাপত্তনম।
পরিবারের সদস্যরা যাতে নিরাপদে এবং নির্বিঘ্নে যাত্রা করতে পারেন, তার জন্যই দাম দিয়ে টিকিট কেটেছিলেন তিনি। কিন্তু, বাস্তবে ঘটে অন্য ঘটনা।
ভাইজাগ সিটির বাসিন্দা মূর্তি জানান, ট্রেনের শৌচালয়ে গিয়ে তাঁরা দেখেন, সেখানে যথেষ্ট পরিমাণে জলের ব্যবস্থা নেই। তার উপর শৌচালয়ের ভিতর শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রও ঠিক মতো কাজ করছিল না। ফলে দুর্গন্ধে ভিতরে ঢোকাই দায় হয়ে দাঁড়ায়।
এমনকী, শৌচালয়ের সেই দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছিল বাতানুকূল কামরার ভিতর। যা রীতিমতো শারীরিক ও মানসিকভাবে তাঁদের অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
মূর্তির দাবি, এই ঘটনার পর প্রথমেই তিনি রেলের সংশ্লিষ্ট কার্যালয়ে অভিযোগ জানান। কিন্তু, তাতে কোনও লাভ হয়নি। ফলে অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তাঁকে ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের ওই যাত্রা সম্পূর্ণ করতে হয়।
যদিও রেলের দাবি, মূর্তির সমস্ত অভিযোগই নাকি মিথ্যা! তিনি রেলের কাছ থেকে টাকা আদায় করতে ভুয়ো অভিযোগ করেছেন বলেও পালটা অভিযোগ তুলেছে রেল কর্তৃপক্ষ।
যদিও কমিশন রেলের এই দাবি মানেনি। কারণ, রেল নিজেই স্বীকার করেছে যে ঘটনার সময় মূর্তি যখন প্রাথমিকভাবে অভিযোগ জানিয়েছিলেন, তখন তাদের এক কর্মী সেখানে গিয়ে বিষয়টি খতিয়ে দেখেন।
সেই কর্মী তখনই মূর্তি ও তাঁর পরিবারকে জানিয়েছিলেন, প্রযুক্তিগত ত্রুটি কারণে কামরার ওই অংশে বায়ু চলাচলে সমস্যা হচ্ছে। একই কারণে শৌচালয়ে জল কম পড়ছে বলেও জানিয়েছিলেন তিনি।
কমিশনের সিদ্ধান্ত হল, এর থেকেই বোঝা যাচ্ছে, সমস্ত পরিকাঠামো ঠিকঠাক চলছে কিনা, তা খতিয়ে না দেখেই সেদিন তিরুমালা এক্সেপ্রেস চালানো হয়েছিল।
এরপরই দক্ষিণ মধ্য রেলকে ২৫ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণের নির্দেশ দেয় কমিশন। পাশাপাশি, এই আইনি প্রক্রিয়ায় মূর্তির যে খরচ হয়েছে, তার ক্ষতিপূরণ বাবদ আরও ৫ হাজার টাকা দিতে বলা হয়েছে।