ভারতের মধ্য়ে জামতারা গ্যাং সাইবার প্রতারণার জন্য কুখ্য়াত। কীভাবে যে তারা অনলাইন প্রতারণার মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নেয় সেটা বোঝা যায় না। তবে এবার সাইবার ক্রাইম নিয়ে বড়সর তথ্য সামনে আসছে। তাতে দেখা যাচ্ছে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার একাধিক জায়গা থেকে এই সাইবার ক্রাইমের নেটওয়ার্ক চালানো হচ্ছে। কম্বোডিয়া, মায়ানমার, লাওসের মতো জায়গা থেকে এই ধরনের সাইবার প্রতারণা চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ।
টাইমস অফ ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন অনুসারে জানা গিয়েছে যে ইন্ডিয়ান সাইবার ক্রাইম কো অর্ডিনেশন সেন্টারের সিইও রাজেশ কুমারের মতে, একেবারে কর্পোরেট স্টাইলে এই সব কাজ চালাচ্ছে ওই সব সাইবার অপরাধীরা। এমনকী তারা ভারতীয় বেকার যুবক যুবতীদের কাজেও লাগিয়ে দিচ্ছে। বিভিন্ন অবৈধ এজেন্টদের মাধ্য়মে তাদের কাজে লাগানো হচ্ছে। এরপর তাদের দিয়েই ভারতের বিভিন্ন জায়গায় এই সাইবার প্রতারণার কাজ চালানো হচ্ছে।
ইতিমধ্য়েই একাধিক তদন্তকারী সংস্থা এই সব অবৈধ নিয়োগকারী সংস্থাগুলি সম্পর্কে তথ্য জোগাড় করে ফেলেছে। এমনকী প্রায় ৩৬০জন ভারতীয় যাদের এই সব সংস্থা ফাঁদে ফেলে বিদেশে নিয়ে চলে গিয়েছিল তাদেরকে সেই দেশ থেকে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থাও করেছে ভারতের বিদেশমন্ত্রক। কম্বোডিয়া থেকে আরও ৬০জনকে ভারতে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করা হবে বলে খবর।
সব মিলিয়ে বিষয়টি অত্যন্ত উদ্বেগের। কারণ এই দেশ থেকে ফাঁদে ফেলে এখানকার যুবক যুবতীদের অপরাধমূলক কাজের সঙ্গে জড়িয়ে ফেলা হচ্ছে। এরপর তাদের নিয়ে নানা ধরনের কু কর্ম করানো হচ্ছে। পরে তারা যখন জানতে পারছে যে তারা সাইবার অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছে তারা আর তখন বেরিয়ে আসতে পারছেন না।
এদিকে এই ধরনের সাইবার প্রতারণার মাধ্য়মে ভারত থেকে কোটি কোটি টাকা তারা হাতিয়ে নিচ্ছে। প্রায় ৬২,৫৮৭টি বিনিয়োগ কেলেঙ্কারির মাধ্য়মে ১৪২০ কোটি টাকা তারা হাতিয়ে নিয়েছে। ২০,০৪৩ ট্রেডিং কেলেঙ্কারির মাধ্যমে ২২২ কোটি টাকা হাওয়া হয়ে গিয়েছে। ৪৬০০ ডিজিটাল অ্যারেস্ট স্ক্যামের মাধ্য়মে ১২০ কোটি টাকা পাচার হয়ে গিয়েছে। ১৭২৫ ডেটিং স্ক্যামের মাধ্য়মে হাওয়া হয়ে গিয়েছে ১৩ কোটি টাকা। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এপ্রিল মাসের মধ্য়ে এই পরিস্থিতি। আর সবটাই পরিচালনা করা হচ্ছে দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার ওই সব দেশ থেকে। প্রায় ১০,০০০ এফআইআর দায়ের করা হয়েছে এনিয়ে। সবথেকে বড় কথা হল প্রচুর চিনা লোক এই কেলেঙ্কারির সঙ্গে যুক্ত। চিনা ভাষাতে একাধিক অ্যাপও আছে।