তিনি 'রাজনীতির দূষণ পরিষ্কার' করছেন! শনিবার আয়োজিত 'হিন্দুস্তান টাইমস লিডারশিপ সামিট'-এর মঞ্চে উপস্থিত হয়ে একথা বলেন সমাজবাদী পার্টি (সপা)-এর সভাপতি তথা উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদব।
এনডিটিভি-এর উপদেষ্টা সম্পাদক সুমিত অবস্থিকে এই প্রসঙ্গে তাঁকে বলতে শোনা যায়, 'রাজনীতিতে দূষণ ছড়িয়ে পড়েছে। আমি এখন সেই দূষণ পরিষ্কার করছি। আমি উত্তরপ্রদেশ থেকে এই কাজ শুরু করেছি।'
তাঁর অভিযোগ ও বার্তা, বিজেপির মুখে এখন ব্রিটিশরাজের স্লোগান শোনা যাচ্ছে। যা থেকে স্পষ্ট ভারতীয় রাজনীতিতে দূষণ ছড়িয়ে পড়েছে। যা পরিষ্কার করা দরকার।
আসলে সম্প্রতি উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে বলতে শোনা গিয়েছিল, 'বাঁটেঙ্গে তো কাটেঙ্গে' (বিভাজন করলে কেটে ফেলব)! ইতিমধ্যেই যোগীর সেই স্লোগান নিয়ে রাজনৈতিক মহলের প্রতিবাদ দেখা গিয়েছে।
এমনকী, মহারাষ্ট্রে বিজেপির জোটসঙ্গী অজিত পাওয়ার পর্যন্ত এই স্লোগানকে সমর্থন করেননি। তাঁর মতে, যোগীর স্লোগান মহারাষ্ট্রের মানুষ মানবে না। কারণ, সে রাজ্যের মানুষের মানসিকতা উত্তরপ্রদেশের মানুষের থেকে আলাদা।
অথচ, হিন্দুস্তান টাইমস লিডারশিপ সামিট-এর মঞ্চে উপস্থিত হয়ে যোগী তথা বিজেপির সেই স্লোগানের বিরোধিতা করলেন উত্তরপ্রদেশেরই মানুষ অখিলেশ যাদব।
তিনি বলেন, বিজেপির এই স্লোগান ভারতের মানুষ কখনই মেনে নেবে না। এমনকী অখিলেশ এও দাবি করেন যে, বিজেপির অন্দরের কিছু নেতাই এই স্লোগানের সঙ্গে সহমত নন!
অখিলেশ এই প্রসঙ্গে বলেন, 'আমরা যদি বিশ্বের গণতন্ত্রের ইতিহাস এবং ভারতের ইতিহাসের দিকে তাকাই, তাহলে দেখব, কোনও দলই এতটা নেতিবাচক প্রভাব ফেলেনি। জনগণ এটা কখনও মেনে নেবে না। তাদের দলেরই কেউ-কেউ এর সঙ্গে একমত নন।'
অখিলেশ মনে করেন, গত লোকসভা নির্বাচনে উত্তরপ্রদেশে বিজেপির হতাশাজনক ফলাফলের কারণই হল তাদের এই ধরনের নেতিবাচক অবস্থান এবং আচরণ।
তিনি বলেন, 'এই মানুষগুলো (বিজেপির নেতা ও কর্মীরা) আদিবাসী, সংখ্যালঘু এবং অর্ধেক জনসংখ্যার বিরুদ্ধে রয়েছে! এরা নেতিবাচক এবং এই কারণেই এবারের নির্বাচনে আমাদের জোট তাদের এনডিএ-র তুলনায় বেশি ভালো ফল করেছে।'
এরপরও গত নির্বাচনে উত্তরপ্রদেশে বিজেপির বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ করেছেন অখিলেশ। তাঁর দাবি, বিজেপি যদি ভোটে কারচুপি না করত, তাহলে INDIA শুধুমাত্র উত্তরপ্রদেশেই ৫৫-৬০টি আসনে জয়লাভ করত।
অখিলেশ মনে করেন, আসলে এবারের নির্বাচনে মানুষ বিজেপির বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ার বিষয়ে একেবারে মনস্থির করে ফেলেছিল।
প্রসঙ্গত, রাম মন্দিরের উদ্বোধন হওয়ার উত্তরপ্রদেশের অযোধ্যা লোকসভা কেন্দ্রে পরাজিত হতে হয় বিজেপিকে। এই বিষয়টি নিয়েও সংশ্লিষ্ট অনুষ্ঠান মঞ্চে মুখ খোলেন অখিলেশ।
তিনি বলেন, বিজেপি তাদের নেতিবাচক চিন্তাভাবনার কারণেই অযোধ্যা লোকসভা কেন্দ্রে হেরে গিয়েছে। এবং ওই কেন্দ্রে বিজেপির এই পরাজয়ের জন্য সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে দায়ী করেন অখিলেশ।
তাঁর কথায়, 'আমাদের মুখ্যমন্ত্রী (যোগী আদিত্যনাথ) এবং বিজেপির নেতিবাচক চিন্তাভাবনার কারণেই বিজেপি অযোধ্যায় ভোটে হেরেছে। এই সরকার সমাজতন্ত্রীদের করা কোনও কাজই এগিয়ে নিয়ে যায়নি। বদলে, বিদ্যুতের ব্যবহারও আগের তুলনায় ব্যয়বহুল করে দিয়েছে। যার খেসারত দিতে হচ্ছে আমজনতাকে।'