অতীত ফুঁড়ে জেগে উঠল ৫০০ বছরের পুরনো মন্দির। ১১ বছর পরে ওডিশায় মহানদীর বুক থেকে আবার মাথা তুলল গোপীনাথ মন্দিরের চুড়ো।
সম্প্রতি ওডিশার নয়াগড় জেলার ভাপুর তহসিলের অন্তর্গত পদ্মাবতী গ্রামে মহানদীর জল থেকে মাথা তোলা এই প্রাচীন মন্দিরের সন্ধান পেয়েছে ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল ট্রাস্ট ফর আর্ট অ্যান্ড কালচার-এর (ইনট্যাক) পুরাতাত্ত্বিক দল। নদীর জলস্তরের উপরে জেগে উঠেছে প্রাচীন দেবস্থানের ‘মস্তক’ বা চুড়ো।
মন্দিরটি কৃষ্ণের অবতার গোপীনাথ দেবের উদ্দেশে উৎসর্গীকৃত, জানিয়েছেন পুরাতাত্ত্বিক দলের প্রোজেক্ট অ্যাসিস্ট্যান্ট দীপক কুমার নায়েক। স্থানীয় পুরাতত্ত্ব উৎসাহী রবীন্দ্র কুমার রাণার সঙ্গে তিনি যৌথভাবে পুনরুদ্ধার হওয়া মন্দিরটির খুটিনাটি চর্চায় ব্যস্ত রয়েছেন।
অতীতে সাতটি গ্রামের সমষ্টি সাতপাটনার অংশ ছিল পদ্মাবতী গ্রাম। কিন্তু মহানদীর ধারা পরিবর্তনের ফলে উনিশ শতকে গোটা অঞ্চল জলের নীচে ডুবে যায়। সেই সঙ্গে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায় এলাকার যত দেবস্থান। মন্দির থেকে গিব্রহ উদ্ধার করে তার আগেই উঁচু জমিতে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেন গ্রামের বাসিন্দারা। বর্তমানে গোপীনাথ দেবের আদি মূর্তিটি পদ্মাবতী গ্রামের মন্দিরে বিরাজমান।
১১ বছর আগে শেষ বার নদীগর্ভ থেকে জেগে উটেছিল প্রাচীন গোপীনাথ মন্দির। তবে গত এক বছরে নদীর জলস্তরের সীমায় পরিবর্তনের ফলে ৪-৫ দিনের জন্য মন্দিরের চুড়ো ভেসে উঠতে দেখা গিয়েছে, জানিয়েছেন রাণা।
স্থানীয়দের দাবি, মহানদীর জলে ডুবে রয়েছে ওই অঞ্চলের মোট ২২টি মন্দির। তবে সবচেয়ে উঁচু হওয়ার কারণে শুধুমাত্র গোপীনাথ মন্দিরের শীর্ষদেশই মাঝেমাঝে জেগে উঠতে দেখা যায়।
সামাপ্রতিক এই আবিষ্কারটি আদতে ইনট্যাক-এর মহানদী উপত্যকা হেরিটেজ সাইট ডকুমেন্টেশন প্রকল্পের অন্তর্গত, যার দায়িত্বে রয়েছেন ইতিহাসবিদ অনিল ধির। স্থাপত্যরীতি ও নির্মাণের উপাদান বিচার করে জানা গিয়েছে, মন্দিরটি পঞ্চদশ অথবা ষোড়শ শতকে নির্মিত। নিমজ্জিত মন্দিরটি পশ্চিমমুখী। মুখশালা রীতিতে তৈরি এই মন্দিরে রেখ দেউল স্থাপত্যের বিমান লক্ষ্য করা যায়। মন্দিরের উচ্চতা আনুমানিক ৬০ ফিট।