মঙ্গলবার শ্রদ্ধা ওয়াকর হত্যাকাণ্ডের শুনানি হয় আদালতে। গতকাল আফতাব পুনাওয়ালাকে নিয়ে বেশ কিছু তথ্য আদালতে পেশ করল দিল্লি পুলিশ। দিল্লি পুলিশের তরফে আদালতকে জানানো হয়েছে, আফতাব প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত 'শেফ' এবং সে মাংস কাটতে ও মাংস সংরক্ষণের বিষয়ে পটু। মঙ্গলবার দিল্লি পুলিশের তরফে বলা হয়েছে, এই মামলার পরিস্থিতিগত প্রমাণ শক্তিশালী এবং যুক্তিসঙ্গত। এই পরিস্থিতিগত প্রমাণগুলি সবার বয়ানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণও বলে দাবি করেন দিল্লি পুলিশের আইনজীবী অমিত প্রসাদ। পাবলিক প্রসিকিউটর অমিত প্রসাদ দিল্লি পুলিশের পক্ষে উপস্থিত হয়ে চার পাতার একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ জমা করেন আদালতে। তাতে মুম্বই এবং দিল্লিতে শ্রদ্ধা ও আফতাবের একসঙ্গে কাটানো সময়ের একটি টাইমলাইন দেওয়া হয়েছে। (আরও পড়ুন: )
এর আগে দিল্লি পুলিশের দাখিল করা চার্জশিটে দাবি করা হয়েছে, শ্রদ্ধা ওয়াকর মৃত্যুর আগে একজন বন্ধুর সঙ্গে প্রায়ই দেখা করতেন। লিভ-ইন পার্টনারের এভাবে ঘন ঘন বন্ধুর সঙ্গে সাক্ষাৎ নাকি মেনে নিতে পারেনি আফতাব পুনাওয়ালা। এবং এরপরই আরও হিংস্র হয়ে উঠেছিল আফতাব। প্রসঙ্গত, ১৫০ জনেরও বেশি সাক্ষীর বয়ান, ফরেনসিক এবং সোশ্যাল মিডিয়া থেকে প্রাপ্ত বিভিন্ন প্রমাণের উল্লেখ রয়েছে আফতাবের বিরুদ্ধে দায়ের করা ৬৬২৯ পাতার চার্জশিটে। দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে, শ্রদ্ধা হত্যাকাণ্ডে তদন্তে ৯টি দল গঠন করা হয়েছিল। প্রমাণ সংগ্রহের জন্য তদন্তকারীরা হরিয়ানা, মহারাষ্ট্র এবং হিমাচল প্রদেশে গিয়েছিলেন।
উল্লেখ্য, অনলাইন ডেটিং অ্যাপের মাধ্যমে শ্রদ্ধা এবং আফতাবের আলাপ হয়েছিল। পরবর্তীতে মুম্বইয়ে আফতাবের সঙ্গে একই কলসেন্টারে কাজ শুরু করেছিলেন শ্রদ্ধা। কিন্তু ভিনধর্মের হওয়ায় শ্রদ্ধাদের সম্পর্ক নিয়ে আপত্তি ছিল পরিবারের। সেই পরিস্থিতিতে আফতাবের সঙ্গে মুম্বই ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন শ্রদ্ধা। পুলিশ জানিয়েছে, গতবছর ১৮ মে শ্রদ্ধা ও আফতাবের ঝগড়া হয়েছিল। ঝগড়ার সময় শ্রদ্ধার মুখ চেপে ধরেছিল আফতাব। তারপর তাঁকে খুন করেছিল সে। পুলিশ জানিয়েছে, হোটেল ম্যানেজমেন্ট নিয়ে পড়াশোনা করেছিল আফতাব। কয়েক বছর আগে শেফ হিসেবেও কাজ করত। কীভাবে মাংস কাটতে হবে, তা নিয়ে দু'সপ্তাহের প্রশিক্ষণ নিয়েছিল। সেই প্রশিক্ষণের অভিজ্ঞতা দিয়ে শ্রদ্ধার দেহ টুকরো-টুকরো করেছিল আফতাব। এমনকি দেহ লোপাট করার উপায় জানতে গুগলেরও সাহায্য নিয়েছিল আফতাব। নিজের প্রেমিকের দেহের ৩৫ টুকরো করে তা জঙ্গলে ফেলে দিয়ে এসেছিল আফতাব। তিনমাস ধরে সে দেহের অংশগুলি ফ্রিজে রেখে দিয়েছিল। পরে দক্ষিণ দিল্লির মেহারুলি এলাকায় একটি জঙ্গল থেকে শ্রদ্ধার দেহের টুকরো উদ্ধার করেছিল পুলিশ।