প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মহিন্দা রাজাপক্ষে পদত্যাগ করার পরই নতুন করে আগুন ছড়িয়ে পড়ে শ্রীলঙ্কা জুড়ে। একদিকে যখন রাজাপক্ষেপন্থী রাজনৈতিক কর্মীরা হামমলা চালায় আম জনতার বিক্ষোভে। সেখানে বিক্ষোভকারীদের প্রতিহিংসার আগুনে জ্বলেপুড়ে যায় একের পর এক সাংসদের বাড়ি। পুড়িয়ে ফেলা হয় মহিন্দা রাজাপক্ষের পৈত্রিক বাড়িও। মারা যান শাসকদলের এক সাংসদ। এই আবহে মহিন্দার কোনও খোঁজ নেই। অনেকেরই ধারণা ইতিমধ্যেই দেশ ছেড়েছেন মহিন্দা। আর সেই শঙ্কার মাঝেই শ্রীলঙ্কার আদালত জানিয়ে দিল মহিন্দা ও তাঁর ছেলে তথা প্রাক্তন মন্ত্রী নমল রাজাপক্ষে সহ মোট ১৫ জন কোনওভাবেই দেশ ছেড়ে যেতে পারবেন না।
সংবাদ সংস্থা এএফপি এক প্রতিবেদনে বলেছে, শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের উপর কে হামলা চালিয়েছে তা তদন্ত করে বের করতে পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন রাজধানী কলম্বোর ম্যাজিস্ট্রেট। এই প্রতিশোধমূলক সহিংসতায় নয়জনের মৃত্যু হয়েছে এবং ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ হয়েছে দেশ জুড়ে।
এদিকে সহিংস বিক্ষোভ ঠেকাতে শুট অ্যাট সাইটের ঘোষণা করেছে সেদেশের সরকার। শ্রীলঙ্কার প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তরফে জানানো হয় যে হিংসায় যুক্ত হতে দেখলেই তাকে গুলি করা হবে। প্রসঙ্গত, আর্থিক বিপাকে থাকা শ্রীলঙ্কায় বহুদিন ধরেই সংকট দেখা দিতে থাকে। দেশ নিজেকে দেউলিয়া বলে ঘোষণা করে। কোভিডের লকডাউনে সেদেশের পর্যটন শিল্পে ব্যাপক ধাক্কা লাগে। মনে করা হচ্ছে শ্রীলঙ্কার আর্থিক দুর্গতির নেপথ্যে সেটি অন্যতম বড় কারণ। এর জেরে ক্রমে আর্থিক দুর্গতি, বিদ্যুত্ সংকট, খাদ্য সংকট, জ্বালানি সংকট দেখা দেয় দেশে। এরপরই বর্তমান সরকারের উপর আস্থা হারিয়ে রাস্তায় নেমে প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে সরব হন জনগণ। এই আবহে চাপের মুখে শেষ পর্যন্ত মহিন্দা পদত্যা করলেও তাঁর ভাই তথা দেশের প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে এখনও নিজের গদি ছাড়েননি।