শিশির গুপ্তা
এবার অর্থের অভাবে স্থানীয় ভোটও স্থগিত করে দেওয়া হল শ্রীলঙ্কায়। ভয়াবহ অর্থ সংকট। এনিয়ে এবার রাস্তায় আছড়ে পড়েছে ক্ষোভ। ফোরেক্স বা বিদেশ মুদ্রার লেনদেন ব্যবস্থা নেমে গিয়েছে প্রায় ৫০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে। একেবারে ধারে ডুবে রয়েছে শ্রীলঙ্কায়। সেই পরিস্থিতিতে ভোট স্থগিত করে দিল শ্রীলঙ্কা। আগামী ৩ মার্চ ভোটের নতুন দিন স্থির হতে পারে।
তবে শ্রীলঙ্কার রনিল বিক্রমসিঙ্ঘের সরকার ইতিমধ্য়েই জানিয়েছে,যে মার্কিন ডলার গচ্ছিত রয়েছে সেটা অত্য়ন্ত সংকটনজনক পরিস্থিতিতে ব্য়বহার করার জন্য় রাখা হবে।
তবে শ্রীলঙ্কার এই চরম আর্থিক সংকটের মধ্য়েও ভারত কিন্তু সর্বতোভাবে শ্রীলঙ্কার পাশে দাঁড়িয়েছে। আইএমএফের রীতি মেনেই শ্রীলঙ্কাকে প্রয়োজনীয় সহায়তা করেছে ভারত।
এদিকে সূত্রের খবর কিছুটা আর্থিক বোঝা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য, ধার মেটানোর জন্য শ্রীলঙ্কা বেজিংয়ের দিকেও তাকিয়ে রয়েছে। আইএমএফের প্রস্তাব মতো ১০ বছরের আর্থিক চুক্তির দিকে যেতে পারে শ্রীলঙ্কা। তবে এখানে একটা সমস্যা রয়েছে। চিন যদি শ্রীলঙ্কাকে প্রয়োজনীয় সহায়তা করে তবে আরও একাধিক দেশ রয়েছে যারা ধার মেটাতে পারেনি তাদের পাশেও দাঁড়াতে হয়। সবচেয়ে বড় কথা তাদের অত্যন্ত বন্ধু দেশ বলে আন্তর্জাতিক মহলে পরিচিত, সেই পাকিস্তানের পাশেও চিন বিশাল অর্থ সম্পদ নিয়ে দাঁড়িয়ে পড়েছে এমনটাও নয়। এদিকে পাকিস্তানের স্টেট ব্যাঙ্কের হিসাব বলছে তাদের হাতে মোটামুটি ৩.২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রয়েছে। সেটা দিয়ে তিন সপ্তাহ মতো আমদানি তারা চালিয়ে দিতে পারবে।
তবে যেভাবে গতিপ্রকৃতি দেখা যাচ্ছে তাতে শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানের পরিস্থিতি অনেকটা কাছাকাছি। দুই দেশই অর্থনৈতিকভাবে একেবারে খাদের কিনারায় দাঁড়িয়ে রয়েছে। দেশের ভেতরে প্রতিষ্ঠান বিরোধিতা, সরকার বিরোধিতার সুর একেবারে প্রবল।শ্রীলঙ্কায় যখনই ভোট হোক না কেন বামপন্থী শক্তিগুলো ফের জেগে উঠতে পারে। তবে পাকিস্তানের পরিস্থিতি আরও খারাপ। সেখানে আবার বিশ্বাস করার মতো কোনও রাজনৈতিক দল এগিয়ে আসছে না। শ্রীলঙ্কার মতোই পাকিস্তানেও রাজনৈতিক দলের নেতারা শুধু এখন দূর থেকে দেশের হাল দেখে যাচ্ছে। কেউ আর এই ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্য়ে নিজেদের জড়াতে চাইছে না। আর তার জেরে যা হওয়ার তাই হচ্ছে। আরও ডুবছে দেশ। ডুবছেন দেশের মানুষ। সব মিলিয়ে শ্রীলঙ্কা কবে এই রাহুগ্রাস থেকে মুক্তি পাবে সেটাই দেখার।