শ্রীলঙ্কায় আজ ২২৫ আসনের সংসদীয় নির্বাচনে ভোটগ্রহণ চলছে। আশা করা হচ্ছে, শুক্রবারই এই ভোটের ফলাফল সামনে আসবে। ইতিমধ্যেই সেখানের রাষ্ট্রপতি পদে বসেছেন অনুরা দেশনায়কে। তিনিই এই দ্বীপরাষ্ট্রের কোনও প্রথম বাম নেতা যিনি এই পদে বসেন। শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট অনুরা দেশনায়কের আহ্বানেই সেদেশে আজ চলছে সংসদীয় ভোটগ্রহণ পর্ব।
শ্রীলঙ্কার রাজনৈতিক পরিস্থিতি:-
২০২২ সালে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট পদ থেকে পদচ্যুত হন গোতবায়া রাজাপকসে। তৎকালীন সময়ে শ্রীলঙ্কা প্রবল আর্থিক সংকটের মুখে পড়ে। সেই সংকট থেকে দেশকে উন্নয়নের মুখে নিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় আসেন দেশনায়কে। দেশনায়কের পার্টি ৪২ শতাংশ ভোট নিয়ে ক্ষমতায় আসে। তবে বিদায়ী সংসদে (যার মেয়াদ শেষ হবে ২০২৫ সালে) তাঁদের পার্টির মাত্র ৩ জন সদস্য রয়েছেন। ফলে তাদের নীতিকে কার্যকরী করতে ১১৩ টি আরও আসন প্রয়োজন দিশানায়েকের শিবিরের। দিশানায়েকের পার্টি জেভিপি বা ‘পিপলস লিবারেশন ফ্রন্ট’ হল এনপিপি (ন্যাশনাল পিপলস পাওয়ার) জোটের মূল অংশ। যারা শ্রীলঙ্কায় সরকার গড়ার দিকে মুখিয়ে রয়েছে। তবে লড়াই খুব একটা সহজ নয়। এই এনপিপি জোট তৈরি হয়েছিল ২০১৯ সালে। শ্রীলঙ্কার রাজনীতিতে এটি নবাগত রাজনৈতিক শিবির।
সিংহলি রাজনীতিতে যেখানে ক্রমাগত পুরনো ঐতিহ্যবাহী পার্টিগুলিরই দাপট ছিল, সেখানে এনপিপি সদ্য হওয়া রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে কার্যত ঝড় তুলেছে। শ্রীলঙ্কার তাবড় পার্টিগুলির বেশিরভাগই রাজনৈতিক পরিবারগুলির দ্বারাই চালিত হয়েছে। দিশানায়কের পার্টিকে লড়তে হবে সাজিত প্রেমদাসার সামাঘাই জন বালবেঘায়া পার্টির সঙ্গে লড়তে হবে দিশানায়েকের পার্টিকে।তবে দিশানায়েকের বিরোধী শিবিরে বেশ কিছু ফাটল দেখা যাচ্ছে। সেই দিক থেকে এই তরুণ তুর্কী বাম নেতার দল এই ভোটে শেষ হাসি হাসতে পারে কি না, তা নিয়ে জল্পনা থেকে যাচ্ছে। দিশানায়েকের জেভিপি পার্টি এককালে শ্রীলঙ্কার বুকে বিদ্রোহের জন্ম দিয়েছিল। ১৯৭১ ও ১৯৮৭ সালে তা দেখা গিয়েছিল। যে ঘটনায় ৮০,০০০ জন মানুষের মৃত্যুর খবর আসে। তবে দিশানায়েকে খুবই শান্তিপূর্ণভাবে শাসন দখল করেন।
শ্রীলঙ্কার সামাজিক পরিস্থিতি:-
প্রবল আর্থিক ঋণে ঝুঁকে পড়েছে শ্রীলঙ্কা। আিএমএফ-র থএকে ২.৯ বিলিয়নের একটি ‘বেল আউট’ পরিকল্পনাও রয়েছে তাদের। এর আগে, ২০২২সালে তারা ঋণের ভারে দেউলিয়া হয়। এই পরিস্থিতিতে শ্রীলঙ্কার প্রাইভেট সেক্টর, সিলন চেম্বার অফ কমার্স অবশ্য দিশানায়কের দিকেই ঝুঁকে আছে। সব মিলিয়ে আপাতত অপেক্ষা আগামিকাল ভোটের ফলাফলের জন্য।