প্রবল অর্থনৈতিক সংকটের জেরে বিক্ষোভে উত্তাল দেশ। তাঁর ইস্তফার দাবি করা হচ্ছে। পরিস্থিতি কার্যত হাতের বাইরে বেরিয়ে গিয়েছে। সেই প্রবল চাপের মধ্যে জরুরি অবস্থার ঘোষণা করলেন শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রপতি গোতাবায়া রাজাপক্ষ।
জরুরি অবস্থার ঘোষণার পাশাপাশি শ্রীলঙ্কায় কড়া আইন কার্যকর করেছেন গোতাবায়া, যে আইনের আওতায় বিচার ছাড়াই যে কোনও ‘সন্দেহভাজন’ ব্যক্তিকে দীর্ঘদিন আটকে বা গ্রেফতার করে রাখার ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে সেনাকে। সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, বিক্ষোভকারীদের দমন করতে আদতে সেনার হাতে লাগামছাড়া ক্ষমতা তুলে দেওয়া হল। সেই আইনের ব্যাপক অপব্যবহার হবে বলে দাবি করেছে সংশ্লিষ্ট মহল। যদিও একটি ঘোষণাপত্র জারি করে গোতাবায়ার সাফাই গেয়েছেন যে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা এবং মানুষের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বা পরিষেবা প্রদানের জন্য জরুরি অবস্থার ঘোষণা করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত কয়েকদিন ধরে চরম দুর্দশার মধ্যে পড়েছেন শ্রীলঙ্কার মানুষ। আকাল দেখা দিয়েছে অত্যাবশ্যকীয় সামগ্রীর। দিনের অধিকাংশ সময় থাকছে না বিদ্যুৎ। নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীয় দাম লাগামছাড়া হয়ে গিয়েছে। ১৯৪৮ সালে ব্রিটেনের থেকে স্বাধীনতা লাভের পর থেকে এতটা ভয়ঙ্কর অবস্থার মুখে পড়তে হয়নি ২.২ কোটি জনসংখ্যা বিশিষ্ট দেশকে।
সেই পরিস্থিতিতে প্রবল বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে পরিস্থিতি কার্যত রাজাপক্ষে সরকারের হাতের বাইরে চলে যায়। পদত্যাগের দাবিতে হাজার-হাজার মানুষ শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রপতির ব্যক্তিগত বাড়ির সামনে বিক্ষোভ দেখান। যা পরবর্তীতে হিংসাত্মক রূপ নেয়। দুটি সামরিক গাড়ি, পুলিশের জিপ, দুটি প্যাট্রোলিং মোটরসাইকে এবং একটি তিনচাকার গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় উত্তেজিত জনতা। কমপক্ষে দু'জন বিক্ষোভকারী আহত হন। পুলিশ জানিয়েছিল, ৫৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের দাবি, পাঁচজন সাংবাদিককে গ্রেফতার করে অত্যাচার চালিয়েছে পুলিশ এবং সেনা। যে অভিযোগ তদন্ত করে দেখবে বলে দাবি করেছে সরকার। তাতে অবশ্য বিক্ষোভে লাগাম পড়েনি। শুক্রবারও চলতে থাকে বিক্ষোভ।