অকল্যান্ডের একটি শপিং মলে ছুরি দিয়ে হামলা চালিয়ে ছয় জনকে আহত করেছিল এক জঙ্গি। তাকে গুলি করে নিকেশ করল পুলিশ।
নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আর্ডের্ন বলেছেন, 'শপিং মলে আক্রমণকারী একজন শ্রীলঙ্কার নাগরিক। পুলিশ তার সম্পর্কে আগে থেকেই জানে। সে একজন চরমপন্থী। আইএসের আদর্শে অনুপ্রাণিত। তাই এটা একটা সন্ত্রাসবাদী হামলা।'
শুক্রবার অকল্যান্ডের মলে একটি দোকানে ঢুকে ওই ব্যক্তি ছুরি দিয়ে ক্রেতা ও কর্মীদের আক্রমণ করে। এর ফলে ছ'জন আহত হন। তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। একজনের আঘাত গুরুতর। বাকি দুই আহতের জীবনের আশঙ্কা নেই। নিউজিল্যান্ড হেরাল্ডের খবর হল, পুলিশ ওই শপিং মলে যাওয়ার সব রাস্তা দ্রুত বন্ধ করে দেয়। পুলিশ একটি হেলিকপ্টারকে কাজে লাগায়। ১০ টি গাড়ি নিয়ে তারা মলের চারপাশ ঘিরে ফেলে। তারপর হামলাকারীকে গুলি করে হত্যা করে।
প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য
প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আর্ডের্ন বলেছেন, 'আজ যা হয়েছে, তা ঘৃণ্য কাজ এবং ভুল কাজ। এটা করেছে একজন ব্যক্তি। কোনও ধর্মবিশ্বাস এর জন্য দায়ী নয়। ওই ব্যক্তি এমন একটা মতাদর্শ বিশ্বাস করেছে, যা এখানে কেউ সমর্থন করে না।' আর্ডের্ন আরেও বলেন, 'ওই ব্যক্তিকে প্রশাসন গত পাঁচ বছর ধরে জানে। তার উপর প্রশাসন নজর রাখছিল।' তবে আইনগত কারণে এর থেকে বেশি কিছু তিনি বলতে চাননি।
পুলিশ কমিশনার অ্যান্ড্রু কোস্টার বলেন, 'আমরা ওই ব্যক্তিকে কড়া নজরে রেখেছিলাম। সে জন্যই ঘটনা ঘটার ৬০ সেকেন্ডের মধ্যে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায়। এর থেকেই বোঝা যায় যে, পুলিশ কীভাবে ওই জঙ্গির উপর নজর রেখেছিল।' আর্ডের্ন ও কোস্টার দু'জনেই জানিয়েছেন, হামলাকারী একাই ছিল। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত এক ভিডিয়োতে দেখা যায়, ক্রেতারা একে অপরকে সাবধান করে দিয়ে বলছেন, ছুরি হাতে একজন ঢুকে পড়েছে।
নিউজিল্যান্ডে লকডাউন
নিউজিল্যান্ডে এখন লকডাউন চলছে। অধিকাংশ দোকান বন্ধ। জরুরি নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস পাওয়া যায়, এমন দোকান ছাড়া বাকি সব বন্ধ। সেই জরুরি জিনিস কেনার জন্যই মানুষ ঘরের বাইরে যেতে পারেন। সুপারমার্কেটের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কিরি হ্যানিফিন বলেছেন, যা ঘটেছে, তাতে তাঁরা বিপর্যস্ত বোধ করছেন। সুপারমার্কেটের কর্মী ও ক্রেতাদের যে অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে, তা ভয়াবহ।
নিউজিল্যান্ডের ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসবাদী হামলা হয়েছিল ক্রাইস্টচার্চে - ২০১৯ সালের মার্চে। সেই ঘটনায় ৫১ জন মুসলিমকে গুলি করে হত্যা করেছিল ব্রেন্টন টেরান্ট নামের এক জঙ্গি। আহত হয়েছিলেন ৪০ জন। এছাড়া গত মে মাসে দক্ষিণের একটি শহরের সুপারমার্কেটে ছুরি-হামলায় চারজন আহত হন। ক্রাইস্টচার্চের হামলাকারী ব্রেন্টন টেরান্টকে আজীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। প্যারোলেও মুক্তি পাবে না সে। নিউজিল্যান্ডে এর আগে কাউকে এত কঠোর শাস্তি দেওয়া হয়নি।