দুর্নীতির অভিযোগে বাতিল ২০১৬ সালের এসএসসির গোটা প্যানেল। এই আবহে শিক্ষক নিয়োগের জন্য ফের পরীক্ষা নেওয়া হয় সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে। তার আগে এসএসসির তরফ থেকে প্রকাশ করা হয়েছিল অযোগ্য শিক্ষকদের তালিকা। তবে সেই তালিকা নিয়ে এবার অসন্তোষ প্রকাশ করল সুপ্রিম কোর্ট। আর তাই নতুন করে অযোগ্য শিক্ষকদের তালিকা প্রকাশ করার নির্দেশ দিল শীর্ষ আদালত। অবশ্য, সদ্য অনুষ্ঠিত পরীক্ষার ফল প্রকাশে কোনও বাধা দেয়নি সুপ্রিম কোর্ট। বিচারপতি সঞ্জয় কুমার এবং বিচারপতি এনভি অঞ্জরিয়ার বেঞ্চ আজ বলে, দাগি অযোগ্যদের তালিকা অস্পষ্ট। বিষয়ভিত্তিক, সংরক্ষণভিত্তিক তথ্য সহকারে বিস্তারিত ভাবে অযোগ্যদের তালিকা প্রকাশ করতে হবে। এদিকে এসএসসির আইনজীবী কপিল সিব্বল এবং কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, প্রকাশিত তালিকায় সকল অযোগ্য শিক্ষকের নাম রয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ৩০ জুলাই অযোগ্য ১৮০৬ জনের নামের তালিকা প্রকাশ করে এসএসসি। এসএসসির প্রকাশিত অযোগ্য শিক্ষকদের তালিকা ঘিরে তুঙ্গে উঠেছিল রাজনৈতিক তরজা। শাসক তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত অনেকের নামই এই তালিকায় আছে বলে দাবি করা হচ্ছে। তাঁদের মধ্যে কেউ মন্ত্রীর মেয়ে তো কেউ কাউন্সিলর, কেউ আবার তৃণমূলের দাপুটে নেতা, কেউ আবার দাপুটে নেতার স্ত্রী, আর কেউ জেলা পরিষদের সদস্য, কেউ অঞ্চল সভাপতি।
রিপোর্ট অনুযায়ী, এর আগে এসএসসি অযোগ্যদের যে তালিকা প্রকাশ করেছিল, তাতে নাম রয়েছে মন্ত্রী পরেশ অধিকারীর কন্যা অঙ্কিতা অধিকারীর। এদিকে নাম আছে রাজপুর-সোনারপুর পুরসভার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর কুহেলি ঘোষের। নাম আছে তৃণমূল বিধায়ক নির্মল ঘোষের পুত্রবধূ শম্পা ঘোষেরও। তালিকায় আছে হামিদুর রহমানের মেয়ে রোশনারা বেগমের নাম। নাম আছে কবিতা বর্মণের। তিনি ২০১৮ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত উত্তর দিনাজপুরের জেলা পরিষদের সভাধিপতি ছিলেন তিনি। স্বামী প্রফুল্ল বর্মণ হেমতাবাদের তৃণমূল ব্লক সভাপতি তথা উত্তর দিনাজপুরের জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ ছিলেন। পরে অবশ্য কবিতা বিজেপিতে যোগদান করেছিলেন।
এদিকে এই অযোগ্যদের তালিকায় নাম আছে অজয় মাঝির। তিনি জলচকের তৃণমূল কংগ্রেসের অঞ্চল সভাপতি। হুগলির খানাকুলের দাপুটে তৃণমূল নেতা বিভাস মালিকেরও নাম আছে এই তালিকায়। তাঁর স্ত্রীরও নাম আছে 'দাগি শিক্ষকদের' তালিকায়। এদিকে হিঙ্গলগঞ্জের তৃণমূল সভানেত্রীর মেয়ে প্রিয়াঙ্কা মণ্ডলের নাম আছে এই অযোগ্যদের তালিকায়। তালিকায় রয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী তথা বালুরঘাটের কাউন্সিলর দীপান্বিতা দেব সিংহ। খানাকুলের দাপুটে তৃণমূল নেতা নইমুল হকের (পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন সহ-সভাপতি, সমিতির প্রাক্তন স্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ ও প্রাক্তন পূর্ত কমার্ধ্যক্ষ) স্ত্রী নমিতা আদকের নাম আছে অযোগ্যদের তালিকায়। হুগলির জেলা পরিষদের সদস্য সাহিনা সুলতানাও আছেন এই তালিকায়। আছে বারাসাত ১ ব্লক সভাপতি মহম্মদ ইশা হক সর্দারের ছেলে মহম্মদ নাজিবুল্লার নাম।