শূন্যপদের সংখ্যা ২,২১৬। আর সেজন্য ২৫,০০০-র বেশি প্রার্থী ওয়াক-ইন ইন্টারভিউ দিতে এলেন। এত প্রার্থী যে আসবেন, সেটা সম্ভবত ভাবতে পারেনি এয়ার ইন্ডিয়া কর্তৃপক্ষ। ভিড় সামাল দিতে গিয়ে নাকানিচোবানি খেতে হয়। তার জেরে কার্যত পদপিষ্টের মতো অবস্থা হল মুম্বইয়ের কালিনা এলাকায়। সেই সংক্রান্ত একাধিক ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে গেল। ভাইরাল ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে যে হাজার-হাজার প্রার্থী ইন্টারভিউ কেন্দ্রের দিকে যাচ্ছেন। যাতে দ্রুত পৌঁছাতে পারেন, সেজন্য কয়েকজনকে গাড়ির উপরে উঠে পড়তে দেখা গিয়েছে। কেউ-কেউ আবার গাছেও উঠে পড়েন। আর সেইসব দৃশ্য দেখে শিউরে উঠেছেন নেটিজেনরা। কেউ-কেউ চূড়ান্ত উষ্মাপ্রকাশ করে বলতে শুরু করেছেন, ‘এই নাকি তিন বছরে আট কোটি চাকরি দেওয়া হয়েছে।’
'কী কাজ জানি না, কিন্তু একটা তো চাকরি চাই'
সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, মহারাষ্ট্রের বুলধানা জেলা থেকে আসা এক প্রার্থী জানান যে ব্যাচেলর অফ বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (বিবিএ) নিয়ে দ্বিতীয় বর্ষে পড়াশোনা করছেন। তিনি বলেন, ‘হ্যান্ডিম্যান পদে আবেদন করেছি। ওরা ২২,৫০০০ টাকা বেতন দেবে। আমরা আর কী করব? এত বেকারত্ব। আমি সরকারের কাছে আর্জি জানাচ্ছি যে আরও যেন চাকরির সুযোগ তৈরি করা হয়।’
ওই রিপোর্ট অনুযায়ী, অপর এক প্রার্থী আবার রাজস্থানের আলওয়ার থেকে এসেছেন। বাণিজ্য নিয়ে স্নাতকোত্তর করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমি সরকারি চাকরির জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। আমার একজন বললেন যে এখানে ভালো বেতন পাওয়া যাবে। তাই এসেছি।' অপর এক প্রার্থীর বক্তব্য, হ্যান্ডিমান পদে ঠিক কী কাজ করতে হয়, সে বিষয়ে কোনও ধারণা নেই। কিন্তু তাঁর একটা চাকরি চাই।
নেটপাড়ার প্রতিক্রিয়া
ওই ভাইরাল ভিডিয়ো দেখে এক নেটিজেন বলেন, ‘দাঁড়ান, দাঁড়ান, ভারতে তো বেকারত্ব কমে গিয়েছে। আর প্রধানমন্ত্রী বলেছেন যে শেষ তিন বছরে আট কোটি চাকরি দেওয়া হয়েছে।’ একইসুরে অপর এক নেটিজেন বলেন, ‘এটাকেই অমৃতকাল বলা হয়? আমরা কোথায় যাচ্ছি?’ যদিও সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে'র প্রতিবেদন অনুযায়ী, অ্যাভিয়েশন ইন্ডাস্ট্রি এমপ্লয়িজ গিল্ডের সাধারণ সম্পাদক জর্জ আব্রাম বলেন, নিয়োগ প্রক্রিয়া ঠিকভাবে আয়োজন করা হয়নি।
'গত ৩ বছরে ৮ কোটি চাকরি হয়েছে'
দিনকয়েক আগে মুম্বইয়েই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছিলেন, ‘সম্প্রতি কর্মসংস্থান নিয়ে আরবিআই একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। সেই রিপোর্ট অনুযায়ী, গত তিন-চার বছরে দেশে প্রায় আট কোটি নয়া চাকরি তৈরি হয়েছে। যাঁরা মিথ্যা ছড়িয়ে থাকেন, এই পরিসংখ্যানে তাঁদের মুখ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এইসব লোকেরা বিনিয়োগ, পরিকাঠামো এবং দেশের উন্নয়নের বিরোধিতা করেন। এখন তাঁদের স্বরূপটা ফাঁস হয়ে গিয়েছে। তাঁরা যে ষড়যন্ত্র করেছেন, সেটা প্রত্যাখ্যান করে দিচ্ছেন দেশের মানুষ।’