এবারের মহারাষ্ট্র বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যের বিদায়ী মহাযুতি সরকারের যেসমস্ত মন্ত্রীরা প্রার্থী হয়েছিলেন, তাঁরা সকলেই জিতেছেন। সেই তালিকায় রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিণ্ডে, তাঁর দুই ডেপুটি - দুই উপমুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়ণবীস ও অজিত পাওয়ার, মুম্বইয়ের বিজেপি সভাপতি আশিস শেলার এবং রাজ্য বিজেপির সভাপতি চন্দ্রশেখর বাওয়াঙ্কুলে।
অন্যদিকে, এমভিএ শিবিরের জয়ী প্রার্থীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হলেন - শিব সেনা (উদ্ধব ঠাকরে গোষ্ঠী)-এর আদিত্য ঠাকরে এবং বরুণ সরদেসাই। এঁদের মধ্যে বরুণ এনসিপি প্রার্থী জিশান সিদ্দিকীকে পরাজিত করে বান্দ্রা পূর্ব বিধানসভা কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়েছেন।
বিরোধী শিবিরের জয়ী প্রার্থীদের মধ্যে অন্যতম হলেন মহারাষ্ট্রের প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি নানা পাটোলে। তাঁর জয় নিয়ে আলাদা করে উল্লেখ করতেই হচ্ছে। কারণ, সাকোলি বিধানসভা কেন্দ্র থেকে মাত্র ২০৮ ভোটে জয়ী হয়েছেন তিনি!
এবারের এই নির্বাচনী যুদ্ধে কংগ্রেসের বহু হেভিওয়েট নেতাই পরাস্ত হয়েছেন। যাঁদের মধ্যে অন্যতম - রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা প্রবীণ কংগ্রেস নেতা পৃথ্বীরাজ চবন, কংগ্রেস সংসদীয় দলের নেতা বালাসাহেব থোরাট, গোয়ায় কংগ্রেস কেন্দ্রীয় কমিটির দায়িত্বে থাকা মানিকরাও ঠাকরে প্রমুখ।
পরাজিতদের তালিকায় আরও যে উল্লেখযোগ্যরা রয়েছেন, তাঁরা হলেন - শিব সেনা নেতা মিলিন্দ দেওরা। ওরলি আসনে তিনি আদিত্য ঠাকরের কাছে পরাজিত হন।
এনসিপি নেতা অজিত পাওয়ার পরাজিত করেন এনসিপি-রই অপর গোষ্ঠীর (শরদ পাওয়ার) প্রার্থী যুগেন্দ্র পাওয়ারকে। যিনি আদতে তাঁর আপন ভাইপো এবং শরদ পাওয়ারের ভাইপোর ছেলে বা নাতি।
নাসিক জেলায় নির্দল প্রার্থী হয়েছিলেন সমীর ভুজবল। শুধুমাত্র নন্দগাঁও আসন থেকে লড়বেন বলে যিনি এনসিপি-র সঙ্গ ত্যাগ করেছিলেন। তিনিও এবারের এই নির্বাচনে পরাজিত হন।
এবারের ভোটে যাঁরা প্রথম নিজেদের ভাগ্যপরীক্ষা করাতে নেমেছিলেন, তাঁদের মধ্যে অন্যতম, রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অশোক চবনের মেয়ে শ্রীজায়া চবন। ভোকার আসনে বিজেপির টিকিটে নির্বাচন লড়ে জিতে যান তিনি।
অন্যদিকে, প্রয়াত কংগ্রেস নেতা তথা রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিলাসরাও দেশমুখের ছেলে ধীরাজ দেশমুখ, কংগ্রেস হেভিওয়েট নেতা সতেজ পাতিলের ভাইপো রুতুরাজ পাতিল প্রথমবার ভোটে দাঁড়ালেও পরাজিত হন।
আরও একজনের পরাজিত হওয়া নিয়ে বিস্তর জল্পনা ও আলোচনা হয়েই চলেছে। তিনি হলেন অভিনেত্রী স্বরা ভাস্করের স্বামী ফাহাদ আহমেদ। অনুশক্তি নগর আসনে তাঁকে পরাজিত করেন নবাব মালিকের মেয়ে সানা মালিক।
কারজাট জামখেড় আসনে জয়ী হন শরদ পাওয়ারের আর এক নাতি (ভাইপোর ছেলে) রোহিত পাওয়ার।
তেওসা বিধানসভা কেন্দ্রে বিজেপির রাজেশ ওয়াংখেড়ের কাছে পরাজিত হতে হয় কংগ্রেসের যশোমতী ঠাকুরকে। পুণে ক্যান্টনমেন্ট আসনে পরাজিত হন কংগ্রেস প্রার্থী রমেশ বাগওয়ে। তাঁকে হারিয়ে দেন বিজেপির কাম্বলে সুনীল।
রাজ্যসভার সাংসদ তথা শিব সেনা (উদ্ধব গোষ্ঠী) নেতা সঞ্জয় রাউতের ছোট ভাই রাজারাম রাউত অবশ্য শিব সেনার অপর গোষ্ঠীর (শিণ্ডে গোষ্ঠী) প্রার্থী সুবর্ণা কারাঞ্জেকে পরাজিত করে ভিক্রোলি আসনটি ধরে রাখতে সমর্থ হয়েছেন।
সব মিলিয়ে এবারের মহারাষ্ট্র নির্বাচনে মোট ২৮৮টি আসনের মধ্যে ২৩০টি আসনেই বিজেপি নেতৃত্বাধীন মহাযুতি জোটের প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন। ফলত, রাজ্যের সরকারে কোনও পালাবদল হচ্ছে না।