ওড়িশার রাজভবনে এক রাজ্য সরকারি কর্মীকে মারধরের অভিযোগ উঠল সেই রাজ্যের রাজ্যপাল রঘুবর দাসের ছেলের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি গত সপ্তাহে ঘটেছে বলে জানা যাচ্ছে। রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর পুরী সফরকালের সময় রাজভবনে সরকারি কর্মীকে মারধর করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। রিপোর্ট অনুযায়ী, এই ঘটনা নিয়ে অভিযোগ জানিয়েছেন ওড়িশা রাজভবনে নিযুক্ত রাজ্য সংসদ বিষয়ক দফতরের অ্যাসিস্ট্যান্ট সেকশন অফিসার বৈকুণ্ঠনাথ প্রধান। তিনি এই নিয়ে রাজ্যপালের সচিবের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন বলে জানা গিয়েছে। বৈকুণ্ঠনাথ প্রধান অভিযোগ করেন, গত ৭ জুলাই রাতে পুরী রাজভবনে রাজ্যপাল দাসের ছেলে ললিত দাস তাঁর ব্যক্তিগত নিরাপত্তা আধিকারিক সহ আরও পাঁচজনের সঙ্গে মিলে তাঁকে মারধর করেন। (আরও পড়ুন: 'BJP যদি একই ভুল করে তাহলে লাভ কি…', কংগ্রেসের তুলনা টেনে কড়া বার্তা গডকরির)
আরও পড়ুন: অপেক্ষা দু'দিনের, ডিএ-বেতন নিয়ে ১৫ জুলাইতেই বড় সিদ্ধান্ত নিতে পারে রাজ্য সরকার
উল্লেখ্য, রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু ৭ জুলাই বিকেল থেকে ৮ জুলাই সকাল পর্যন্ত পুরী রাজভবনে ছিলেন। রথযাত্রা উৎসবে অংশ নিতে তিনি সেখানে গিয়েছিলেন। রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সফরের জন্য রাজভবনের প্রস্তুতির তদারকি করতে ৫ জুলাই থেকে পুরীর রাজভবনের ইনচার্জ হিসেবে নিযুক্ত হয়েছিলেন বৈকুণ্ঠনাথ প্রধান। রাজ্যপালের সচিবের কাছে দায়ের করা অভিযোগে বৈকুণ্ঠনাথ প্রধান অভিযোগ করেছেন, ৭ জুলাই রাতে কর্তব্যরত অবস্থায় তাঁর উপর হামলা চালায় ললিত কুমার।
অভিযোগপত্রে বৈকুণ্ঠনাথ দাবি করেন, ৭ জুলাই রাত ১১টা ৪৫ মিনিট নাগাদ তিনি যখন অফিসে বসে ছিলেন, তখন ওড়িশার রাজ্যপালের ব্যক্তিগত রাঁধুনি আকাশ সিং সেখানে যান। আকাশ নাকি তাঁকে জানান যে ললিত কুমার তাঁর সাথে ৪ নম্বর স্যুটে দেখা করতে চান। এরপর বৈকুণ্ঠনাথ সেখানে গেলে ললিত কুমার তাঁকে চড়-থাপ্পড় মারতে শুরু করেন এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকেন। অসহায় বোধ করে তিনি দৌড়ে ঘর থেকে বেরিয়ে অ্যানেক্স বিল্ডিংয়ের পেছনে লুকিয়ে পড়েন। পরে ললিত কুমারের দুই পিএসও তাঁকে খুঁজে পেয়ে লিফট দিয়ে টেনে হিঁচড়ে চার নম্বর রুমে নিয়ে যান। ঘটনাটি প্রত্যক্ষ করেন সেখানে উপস্থিত নিরাপত্তাকর্মী ও অন্যরা। তাঁরা আবার তার মুখে চড়-থাপ্পড় মারতে শুরু করেন। তাঁর শরীরের প্রতিটি অংশে লাথি মারতে শুরু করেন এবং তাঁর বাঁ পায়ের গোড়ালি মুচড়ে দেন। বৈকুণ্ঠনাথ প্রধানের অভিযোগ, ঘটনাটি কারও সামনে প্রকাশ করলে ললিত কুমার তাঁকে খুনের হুমকি দিয়েছিলেন।
এদিকে এই অভিযোগ প্রসঙ্গে রাজ্যপালের সচিব শাশ্বত মিশ্রের কাছে প্রতিক্রিয়া চেয়ে বার্তা পাঠিয়েছিল হিন্দুস্তান টাইমস। তবে তার কোনও জবাব আসেনি। এদিকে ললিত কুমার দাসের সঙ্গেও এই বিষয়ে কথা বলার জন্যে যোগাযোগ করা যায়নি। তবে রাজ্যপালের এক সহযোগী গোটা ঘটনাকে ষড়যন্ত্র বলে বর্ণনা করেছেন। তিনি দাবি করেন, ঘটনাটি রাজভবনের রাঁধুনি ও অভিযোগকারীর মধ্যে ঘটেছে। রাজ্যপালের রাঁধুনিকে নিয়ে অতীতেও নানা অভিযোগ উঠেছে। তবে রাজ্যপালের ছেলে কোনওভাবেই এর সঙ্গে জড়িত নন।